Breaking News
Home / স্বামী/স্ত্রী / কিভাবে চুরি করবেন প্রিয়তমের হৃদয়

কিভাবে চুরি করবেন প্রিয়তমের হৃদয়

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)

কিভাবে চুরি করবেন প্রিয়তমের হৃদয়

প্রিয় বোন!   এই চুরি হালাল। তোমার প্রিয়তমের হৃদয়-কাননে বিচরণ করার অধিকার কেবল তোমারই।

কিন্তু সেখানে ঢুকবে কীভাবে? ফটকের চাবি কই? প্রতিটি মুমিন র মনেই এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। প্রিয় বোন,

প্রিয়তমের হৃদয়ের বদ্ধ দুয়ার খোলার অনেকগুলো চাবি  আছে। আজ মূল্যবান কয়েকটি চাবি তুলে দেব তোমার হাতে—

১.  সুমিষ্ট বচন।

২. প্রিয়তমের সুরক্ষা।

৩. ইবাদাত ও যিকির।

৪. সুগন্ধি  ও পোশাক।

৫. স্বামীর পরিচর্যা।

এসো বোন, চাবিগুলোর ব্যবহার  তোমাকে শিখিয়ে দিই।

সুমিষ্ট বচন মুচকি হেসে তাকে তোমার ভুবনে স্বাগত জানাও আর প্রাণখোলা  হাসির মাঝেই তাকে বিদায় দাও।

তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা  জানতে চাও, তবে তার কাজকর্মে নাক গলানোর চেষ্টা করো না।

সুমিষ্ট ভাষায় তার সঙ্গে খোশে মেতে ওঠো। তার অপছন্দনীয় উচ্চারণ করো না। তার মন খুশি হয় এমন কথা শোনাও।

কথায় তার প্রতি তোমার দুর্বলতার দিকটি ফুটিয়ে তোলো। তার প্রতি তোমার  হৃদয়ে লালিত শ্রদ্ধা ও ভালোার কথা তাকে বুঝতে দাও।

সে  ভুল করলে, বকাঝকা করো না। বুঝিয়ে তাকে সন্তুষ্ট করো। তোমার কোনো অনুরোধ যদি সে না রাখে, তবে বিরোধিতা করো না।

তার  সঙ্গে বাজে ব্যবহার করো না। এতে তার মনে তোমার প্রতি ঘৃণা নেবে। কখনো মতানৈক্য যেন ঝগড়া পর্যন্ত না গড়ায়।

একটু সবর  করো, কয়েক ঘণ্টা কিংবা কয়েক দিন পর মতবিরোধ এমনিতেই  মিটে যাবে।

শরিয়াহর সীমানার ভেতর থেকে তার আদেশ-নিষেধ  মেনে চলো।

তার রাগের সময় তুমি একটু নম্রতা অবলম্বন করো। পাথরের মতো শক্ত হয়ে থেকো না।

এমন কোনো কান্ড করে বসো  না, যা ের বাইরে চলে যায়। প্রিয় নবির এই হাদিসটির কথা  স্মরণ করো :

 

রা যদি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, রমযানের সওম পালন  করে, নিজের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে,

 

(কিয়ামতের দিন) তাকে বলা হবে ের যে দরজা দিয়ে তোমার  ইচ্ছা হয় প্রবেশ করো।' (মুসনাদু আহমাদ, হাদিস : ১৬৬১)

 

 প্রিয়তমের সুরক্ষা

 

তুমি তার গোপন বিষয়গুলোর সংরক্ষণকারী হও। খবরদার! ভেতরের  কোনো কথা যেন ঘরের বাইরে না যায়।

একবার যদি অবিশ্বাসের  বীজ বপন করে ফেলো, তবে মনে রেখো এটি সংশোধন করার শক্তি তোমার নেই।

বোন আমার, খুব সতর্ক থেকো! খুব সতর্ক থেকো। তার কোনো দুর্বলতা ভুলেও যেন কাউকে না জানাও।

কখনো ঝগড়ার  সময় তার দুর্বল পয়েন্ট তুলে খোঁচা দিতে যেয়ো না। এতে তার  চোখে তুমি এমন ঘৃণিত হবে, যার কোনো চিকিৎসা নেই।

 

তুমি তার  সম্মান, মর্যাদা, সম্পদ ও ঘরবাড়ির হেফাযত করবে।

 

খবরদার!  তার অনুপস্থিতির সময় কোনো অপরিচিত যেন তোমার ঘরের  চৌকাঠ মাড়াতে না পারে।

কখনো ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন পড়লে তার অনুমতি নাও।

এতে তুমি নিরাপদ থাকবে। সন্তানাদি ও  পরিবারের দেখাশোনা করো। কুরআনের এই আয়াতটি মনে রেখো :

 

 الرِّجَالُ قَوّٰمُونَ عَلَى النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلٰى بَعْضٍ وَبِمَآ أَنفَقُوا مِنْ أَمْوٰلِهِمْ ۚ فَالصّٰلِحٰتُ قٰنِتٰتٌ حٰفِظٰتٌ لِّلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ ۚۚ

وَالّٰتِى تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِى الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ ۖ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيرًا

 

‘নেককার নারীরা স্বামীদের অনুগত হয় এবং তাদের অনুপস্থিতিতেও   যা রক্ষা করতে বলেছেন, তা (সতীত্ব, স্বামীদের সম্পত্তি  ইত্যাদি) রক্ষা করে'। (সুরাহ আন-নিসা, আয়াত : ৩৪)

 

ইবাদাত ও যিকির

 

আল্লাহর যিকিরের কথা কখনো বিস্মৃত হয়ো না। টেলিভিশন,  মোবাইল, ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহারে আসক্ত হয়ে যেয়ো না।

 

এগুলোর অপব্যবহার তোমার হৃদয়কে মেরে ফেলবে। ফরয ইবাদাতগুলোতে কখনো অবহেলা যেন না হয়।

প্রিয়তমকে সালাতের কথা স্মরণ করিয়ে দাও। তার সামনেই সালাত আদায় করো, যাতে সেও উদ্বুদ্ধ হয়।

সব  সময় আল্লাহর যিকিরে নিজেকে ব্যস্ত রাখো। আল্লাহর ইবাদাত ও  স্বামীর আনুগত্যে কোনো ত্রুটি যেন না হয়।

সুগন্ধি ও পোশাক সুন্দর মনকাড়া পোশাক পরে স্বামীর সামনে আবির্ভূত হও। মিষ্টি কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করো।

পুরুষরা তাদের স্ত্রীদের সুন্দর অবয়ব দেখতে ভালোবাসে। স্বামীর পছন্দের রং কৌশলে জেনে নাও।

তার  প্রিয় রঙের পোশাকে নিজেকে মোহনীয় করে তোলো। ঘরের ভেতরে তার জন্য তুমি নিজের সৌন্দর্যকে প্রকাশ করো।

নিজেকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও আকর্ষণীয় করে রাখো। এটি তোমার প্রতি তার  আগ্রহবোধ জাগিয়ে রাখবে।

সব সময় সে তোমার সান্নিধ্য পাওয়ার  প্রত্যাশায় থাকবে। স্বামীর পরিচর্যা স্বামীর প্রয়োজনগুলোর কথা মনে রেখো।

যথাসময়ে চাওয়ার আগেই  হাজির করো। তার পছন্দ-অপছন্দের কথা বিস্মৃত হয়ো না। তার  স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও লেবাস-পোশাকের র দিকেও তুমি খেয়াল রেখো।

তার খাবারের দিকেও নজর রাখতে ভুলো না। মাঝে মাঝে  বিভিন্ন উপলক্ষ্যে তার পছন্দের

 

তাকে খাবার রান্না করে খাওয়াও

 

অসুস্থ হলে মনঃপ্রাণ দিয়ে তার সেবা করো। প্রিয় বোন, এই চাবিগুলোর সঠিক ব্যবহার যদি নিশ্চিত করতে পারো,

দুনিয়াতেই তুমি দেখতে পাবে জান্নাতের নমুনা। দাম্পত্য জীবনের  মধুর সুখ আনন্দে আনন্দে ভরে দেবে তোমার পুরো জীবন।

এপারে ওপারের যত অন্ধকার ক্রমশ ফিকে হয়ে আসবে তোমার সামনে।

দোয়া  করি, আল্লাহ সকল মুমিন বোনকে সুখময় দাম্পত্য জীবন দান করুন। আমীন।

লিখেছেন, মাইমুনা ফাইয়াজ

আরো পড়ুনঃ বিবাহ ও দাম্পত্য জীবন, Late marriage বা বিলম্বে বিবাহ,
আদর্শ পরিবার গঠনে স্বামী ও স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য, অবাধ্য স্বামীকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট ও দ্বীনের পথে আনার পদ্ধতি

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক বিষয়ে কিছু হাদিস

স্বামী স্ত্রীর মধুর সম্পর্ক বিষয়ে কিছু হাদিস

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) স্ত্রী গ্লাসের যে স্থানে ঠোঁট রেখে পানি পান করে সেই স্থানে ঠোঁট রেখে পানি …

Powered by

Hosted By ShareWebHost