Breaking News
Home / স্বামী/স্ত্রী / স্বামী স্ত্রীর যদি মনোমালিন্য হয় তার সমাধান কিভাবে করবেন

স্বামী স্ত্রীর যদি মনোমালিন্য হয় তার সমাধান কিভাবে করবেন

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)স্বামী স্ত্রীর যদি মনোমালিন্য  হয় তার সমাধান কিভাবে  করবেন

প্রশ্নঃ স্বামী স্ত্রী কোন সংসারিক কারনে যদি কোন মনোমালিন্য হয় আর স্বামী

যদি স্ত্রীরপ্রতি খারাপ আচরণ করে (মিলতে না চাই) সে ক্ষেত্রে স্ত্রীর করনীয় কি?

উত্তরঃ জী আপনি এটি দেখে নিন।* দেখুন সর্ব প্রথম স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে, স্ত্রী স্বামীর রাগকে কন্ট্রোল করবে

অর্থাৎ স্ত্রীর স্বামী (সংসারিক বা ইত্যাদি কারণে হক) কি জন্য রাগ করেছে স্ত্রী সেটি সমাধানের জন্য চেষ্টা করবে।

স্ত্রী যদি স্বামীর কাছে ভুল করে থাকে তাহলে স্ত্রী নিজের স্বামীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবে,

মোট কথা স্বামীকে মানাতে হবে এ ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।

আর স্ত্রী যদি জেনা বা গুনাহে লিপ্ত হন বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এক্ষেত্রে স্ত্রীর স্বামীর কোন গুনাহ হবে না বরং সে সমস্ত গুনাহ স্ত্রীর হবে,

কেননা স্ত্রীর স্বামী শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ, বাস শুধু মাত্র স্ত্রীর উপর কোন কারণ ত রেগে আছে।

 

(স্বামীর জন্য উপদেশ মূলক কিছু কথা…………)

* সুরা নিসা ৪:১৯ = তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সাথে সদ্ভাবে যাপন কর। আর তোমরা তাদের অপছন্দ করো তবে এমনও হতে পারে যে,

তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ্‌ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন ।

সুনানে তিরমিজি হাদিসঃ ১১৬২, হাসান সহিহ হাদিসঃ রাসুল (সা) বলেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যাক্তি উত্তম যে তার নিজের স্ত্রীর কাছে উত্তম ।

সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৩৫৫৯ এবং ৬০৩৫, সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন (সা) স্বভাবগত ভাবে অশালীন কথা বলতেন না,ইচ্ছা করে তিনি অশালীন কথা বলতেন না,

অশ্লীল ভাষী ও অসদাচরণের অধিকারী ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব চরিত্র উত্তম সেই তোমাদের মধ্যে সর্ব উত্তম।

ইসলামের শিক্ষা হলঃ

(ক) মুমিন স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি বিদ্বেষ রাখতে পারবে না ।

(খ) ভাল ব্যাবহারকারী হওয়া এবং স্ত্রী-পরিবারের প্রতি কমল ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া মুমিনের পরিচয় ।

(গ) কোন যদি উত্তম হতে চায় অবশ্যই তার নিজ স্ত্রীর কাছে উত্তম হতে হবে।

 

এখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলামঃ

*যে স্বামী তার স্ত্রীর যৌন চাহিদার প্রতি এমনকি তার ইচ্ছার প্রতি লক্ষ্য রাখে না , সে কি উত্তম স্বামী হতে পারে ?

ইসলামী উপদেশঃ একজন ভাল মুসলিম স্বামী যেমন স্ত্রীর জৈবিক চাহিদার প্রতি যত্নবান হবেন

তেমনি নিজ চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি করবে না যে তার নিজ স্ত্রীর কাছে কষ্টকর ।

স্ত্রীর প্রতি খারাপ আচরণ করে কেউ তার স্ত্রীর কাছে উত্তম ও পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারে না।

স্ত্রীর জৈবিক চাহিদা পুরনে স্বামীর দায়িত্বঃ

* মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিসঃ ১০৪৬৮, সহিহ হাদিসঃ নবী মুহাম্মদ (সা) বলেন, যখন পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে

তখন সে যেন পরিপূর্ণ (সহবাস) করে ।আর যখন তার চাহিদা পূরণ হয়ে যায় অথচ স্ত্রীর চাহিদা অপূর্ণ থাকে তখন সে যেন তাড়াহুড়ো না করে ।

* সুরা তওবা ৯:৭১ = মুমিন পুরুষ ও মুমিন ীরা একে অপরের বন্ধু । তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে ।

স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্বঃ

* সুরা নিসা ৪:১৯ = তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সাথে সদ্ভাবে জীবনযাপন কর। আর তোমরা তাদের অপছন্দ করো তবে এমনও হতে পারে যে,

তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ্‌ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন ।

* সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৬০৩৯, সহিহ হাদিসঃ এক লোক আয়েশা (রা) কে জিজ্ঞেস করেন, নবী (সা) নিজ গৃহে কি কাজ করতেন ?

তিনি বলেন, তিনি পারিবারিক কাজকর্মে বাস্ত থােন । যখন সালাতের সময় উপস্থিত হত তখন উঠে সালাতে চলে যেতেন।

* সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৬০৭৯, সহিহ হাদিসঃ আয়েশা (রা) বলেন , আমার জ্ঞান হবার পর থেকেই আমি আমার বাবা-মাকে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত পেয়েছি ।

আমাদের উপর এমন কোন দিন যায়নি , যে দদিনের দু প্রান্তে সকালে ও বিকালে রাসুল (সা) আমাদের নিকট আসতেন না ।

একদিন দুপুর বেলা আমরা আবু বকর (রা) এর কক্ষে উপবিষ্ট ছিলাম । একজন বলল এই যে রাসুল (সা)

তিনি এমন সময় এসেছেন যে সময় তিনি আমাদের এখানে আসেন না । আবু বকর (সা) বলেন কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাঁকে এ মুহূর্তে নিয়ে এসেছে ।

নবী (সা) বললেন আমাকে মক্কা থেকে বহির্গমনের আদেশ দেয়া হয়েছে ।

* সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৬১১৪, সহিহ হাদিসঃ রাসুল (সা) বলেন, প্রকৃত বীর সে নয় , যে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয় ,

বরং সেই আসল বীর যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে ।

* সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২১৪৪, সহিহ হাদিসঃ রাসুল (সা) বলেন তোমরা যা খাবে স্ত্রীদেরকেও তাই খাওয়াবে

এবং তোমরা যা পরবে , তাদেরকেও তা পরিধান করাবে । তাদেরকে প্রহার করবে না এবং গালিগালাজ করবে না ।

* সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২১৪৬, সহিহ হাদিসঃনবী (সা) বলেছেনঃ যারা স্ত্রীদেরকে প্রহার করে তারা তোমাদের মধ্যে উত্তম না।

*সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৫, সহিহ হাদিসঃরাসুল (সা) বলেছেনঃ স্বীয় পরিবার-পরিজনের জন্য পুণ্যের আশায় যখন ব্যয় করে তখন সেটা তার জন্য সদাক্বাহ হয়ে যায়।

*সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৬, সহিহ হাদিসঃ রাসুল (সা) বলেছেনঃ ‘তুমি নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে যা-ই ব্যয় করো না কেন,

তোমাকে তার প্রতিদান নিশ্চিতরূপে প্রদান করা হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও, তারও।'

* সুনানে আন নাসায়ি,স্ত্রীকে ভালবাসা অধ্যায়, হাদিস নং ৩৯৩৯ এবং ৩৯৪০, হাসান সহিহঃ

রাসুল (সা) বলেছেনঃপার্থিব বস্তুর মধ্যে স্ত্রী ও সুগন্ধী আমার নিকট পছন্দনীয় করা হয়েছে এবং নামাযে রাখা হয়েছে আমার নয়নের প্রশান্তি।

* সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৩৫৫৯ এবং ৬০৩৫, সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন

নবী (সা) স্বভাবগত ভাবে অশালীন কথা বলতেন না,ইচ্ছা করে তিনি অশালীন কথা বলতেন না,

অশ্লীল ভাষী ও অসদাচরণের অধিকারী ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব চরিত্র উত্তম সেই তোমাদের মধ্যে সর্বউত্তম।

* সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৪১৭৭, সহিহ হাদিসঃ নবী (সা) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যাক্তি সর্বশ্রেষ্ঠ যে তার পরিবারের কাছে ভাল ।

* জামে আত তিরমিজি, হাদিস নং ২২৬৩, সহিহ হাদিসঃ নবী (সা) বলেন, সেই লোক তোমাদের মধ্যে সবচাইতে উত্তম

যার নিকট কল্যাণ কামনা করা যায়এবং যার ক্ষতি হতে মুক্ত থাকা যায়। আর সেই লোক তোমাদের মধ্যে সবচাইতে নিকৃষ্ট

যার নিকট কল্যাণের আশা করা যায় না এবং যার ক্ষতি হতেও নিরাপদ থাকা যায় না।

উপরের হাদিস হতে আমরা জানতে পারলাম স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব হলঃ

১/ স্ত্রীর সাথে ভালভাবে , সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করতে হবে । স্ত্রীদের এক কাজ স্বামীর প্রতি ভাল না লাগলেও অন্য কাজ ভাল লাগবে ।

২/ স্ত্রীর কাজ কর্মে সাহায্য করা ।

৩/ নিজের শ্বশুরবাড়ির লোকদের খোজখবর নেয়া ।

৪/ স্ত্রীর কোন কাজে স্বামী রেগে গেলে অবশ্যই ধৈর্য ধারন করা । এটাই বীর হওয়ার লক্ষন ।

৫/ স্ত্রীদের খাওয়ানো, পোশাক কিনে দেওয়া স্বামীর দায়িত্ব । গালাগালি এবং প্রহার করা যাবে না স্ত্রীদের।

৬/ যারা স্ত্রীদের প্রহার করে তারা ভাল স্বামী না ।

৭/ নিজ পরিবারের জন্য সম্পদ খরচ করা ।

৮/ মাঝে মাঝে স্ত্রীর মুখে খাবার খাইয়ে দেয়া , স্বামী স্ত্রীর রোম্যান্টিকতা ।

৯/ নবী (সা) স্ত্রীদের পছন্দ করতেন তাই তার অনুসারীরাও স্ত্রীদের ভালবাসবেন,

নারীদের সম্মান করবেন, নারীদের অধিকার আদায়ে লড়বেন এটাই স্বাভাবিক ।

১০/ যে উত্তম চরিত্রের অধিকারী সেই উত্তম মুসলিম।

১১/ পরিবারের কাছে যে ভাল সেই উত্তম মুসলিম ।

১২/ যার কাছে কল্যাণ কামনা করা যায় সে উত্তম আর যার কাছে কল্যাণ কামনা করা যায় না যে নিকৃষ্ট ।

আর স্ত্রী তার স্বামীর কাছে কল্যাণ চাইলে সে স্বামী তার জন্য উত্তম ।

*আশা করি আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।*

আরো পড়ুন👉👉  যে বিষয়গুলো আপনার দাম্পত্যজীবনকে অশান্তিময় করে তুলবে,
স্বামীর হক স্ত্রীর উপর, স্ত্রীকে ৩ তালাক দেওয়ার পর সংসার করার সুযোগ

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক বিষয়ে কিছু হাদিস

স্বামী স্ত্রীর মধুর সম্পর্ক বিষয়ে কিছু হাদিস

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) স্ত্রী গ্লাসের যে স্থানে ঠোঁট রেখে পানি পান করে সেই স্থানে ঠোঁট রেখে পানি …

Powered by

Hosted By ShareWebHost