Breaking News
Home / নামাজ / ইসলামে নামাজের গুরুত্ব

ইসলামে নামাজের গুরুত্ব

হযরত উবাদাহ ইবনে সামেত (রা:) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নবী কারীম (সা:) বলেছেন,

আল্লাহ তার বান্দাহদের উপর পাচ ওয়াক্তের নামাজ ফরজ করে দিয়েছন। সুতরাং যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে সময়মত নামাজ পড়বে,

এবং রুকু সিজদার খেয়াল রেখে মনোনিবেশ সহকারে নামাজ আদায় করবে, অবশ্যই আল্লাহ তাকে মাফ করে দিবেন।

আর যে তা করবে না তার অপরাধসমূহ মাফ করে দেয়া ে আল্লাহর দায়িত্ব নেই। করলে তিনি ক্ষমা করতে পারেন, নাও করতে পারেন।

(আবু দা)

উপরোক্ত ের ব্যাখ্যা নিম্নে করা হল:

ের পরিভাষায় একটি সুনির্দিষ্ট ইবাদতের নাম হল সালাত। নামাজ তার ফারসী অনুবাদ।  ইবাদত  সাধারণত: দুই প্রকাররের।

এক প্রকারের ইবাদত যা মানুষ তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা আদায় করে, তাকে বলা হয় ইবাদতে বদনী।

আর এক প্রকারের ইবাদত আছে যাকে মানুষ তার সম্পদ ব্যয় করে আদায় করে, তাকে বলা হয় ইবাদতে মালী।

ইবাদতে বদনীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলো নামাজ। আর ইবাদতে মালীর ভিতর সর্বশ্রেষ্ঠ হলো যাকাত।

কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বহুবার এ দুটি শ্রেষ্ঠ ইবাদতের কথা এক সঙ্গে উল্লেখ করেছেন।

মানব সৃষ্টির সূচনা হতে আজ পর্যন্ত দুনিয়ায় যত নবীরই আগমন ঘটেছে, সহ তাদের সকলের উপর নামাজ কোন না কোন রূপে ফরজ ছিল।

সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এবং তার উম্মতের উপর দিন-রাতে মোট পাচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে।

উক্ত নামাজ কখন ও কিভাবে আদায় করতে হবে তার বাস্তবরূপ স্বয়ং জিবরীল (আ:) নিজে ইমাম হয়ে দশ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে হুজুরকে (সা:) তালীম দিয়েছিলেন।

নামাজের জন্য কিভাবে অজু-গোসল করে দেহকে করতে হবে,  কোন কোন সময় নামাজ আদায় করতে হবে,

রুকু সিজদা কিভাবে করবে, কওমা জলসার পরিমাণ কি হবে, কিভাবে বিনয় ও মনোনিবেশ সহকারে নামাজ আদায় করবে,

এর যাবতীয় তালীমই হুজুর (সা:) দিয়েছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি হুজুরের তালীম মোতাবেক যথাযথভাবে নামাজ আদায় করবে,

আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যে তা আদায় করবে না, তার ক্ষমা সম্পর্কে আল্লাহর কোন দায়িত্ব নেই।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা:) হতে বর্ণিত, একদিন নবী কারীম (সা:) নামাজ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বললেন,

যে ব্যক্তি নামাজের সঠিকভাবে হেফাযত করবে তার এই নামাজ কিয়ামতের দিন তার জন্যে আলো, প্রমাণ ও মুক্তির কারণ হবে,

এবং যে তার সঠিক হেফাযত করবে না, তার জন্যে নামাজ কিয়ামতের দিনে রোশনী,প্রমাণ কিংবা মুক্তির কারণ হবে না।

আর ঐ ব্যক্তি হাশরের দিনে কারুণ, ফেরাউন, হামান ও উবাই-ইবনে-খালফের ন্যায় কাফেরদের সাথে উঠবে।

(আহমদ, দারেমী, বায়হাকী)

উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নে করা হল:

হাদীসে হুজুর (সা:) নামাজকে সঠিক ভাবে হেফাযত করতে বলেছেন। অর্থাৎ নামাজকে যে ধরণের নিয়ম-পদ্ধতির সহিত মনোনিবেশ সহকারে,

আদায় করতে বলা হয়েছে, যদি কেউ সেই ভাবে জীবনভর নামাজ আদায় করে,

তাহলে এ নামাজই কিয়ামতের অন্ধকারে তার জন্য আলো দান করবে, আল্লাহর নিকটে তার নেককার হওয়া সমপর্কে সাক্ষ দিবে এবং জাহান্নামের আযাব হতে তাকে মুক্ত করে দিবে।

কেননা এ ধরনের নামাজী ব্যক্তি সাধারণত: কখনও কোন পাপে লিপ্ত হতে পারে না।

হযরত আবু হোরায় (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে রাসূল (সা:) কবলেছেন, যে দিন আল্লাহর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না, সে দিন মহান আল্লাহ সাত ধরনের লোককে তার ছায়ায় আশ্রয় দিবেন।

(১) সুবিচারক ,  (২) ঐ যুবক, যার যৌবন আল্লাহর ইবাদতে অতিবাহিত হয়েছে।

(৩) সেই নামাজী ব্যক্তি যার মন সদা মসজিদে আবদ্ধ থাকে এমনকি সে মসজিদে হতে ফিরে আসার পর পুনরায় মসজিদে প্রত্যাবর্তনের জন্য ব্যাকুল থাকে।

(৪) ঐ দুই ব্যক্তি যাদের ভালবাসা ও বিচ্ছেদ ছিল নিছক আল্লাহর ওয়াস্তে। অর্থাৎ যাদের মিলন ও বিচ্ছেদ আল্লাহকে কেন্দ্র করেই ঘটেছিল।

(৫) যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে অশ্রু বিসর্জন দিয়েছে। (৬) যে ব্যক্তি উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন কোন সুন্দরী যুবতী দ্বারা,

(প্রেম নিবেদন)  আহুত হয়ে এই বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছে যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি।

(৭) আর যে ব্যক্তি এমন গোপনে দান করে যে তার ডান হাতের খবর বাম হাতে জানে না।

(বুখারী, মুসলিম)

উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নে করা হল

যে ভয়াবহ দিনে হাশরের ময়দানে আল্লাহর নিজস্ব নিয়ন্ত্রিত ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না।

আর মানুষ অসহ্য গরম ও প্রখর তাপে ছটফট করতে থাকবে। সেদিন আল্লাহ সাত ধরনের লোককে তার মেহেরবানীর সুল ছায়ায় আশ্রয় দিবেন।

প্রথম ব্যক্তি হলো সেই সুবিচারক বাদশাহ যে মানব সম্প্রদায়ের কোন এক অংশের উপর শাসন ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ই সুবিচার করেছে।

দ্বিতীয় হলো ঐ যুবক যে তার যৌবনকাল আল্লাহর ইবাদতে অতিবাহিত করেছে। যৌবনকালে মানুষের যাবতীয় শক্তি ও প্রতিভার বিকাধ ঘটে।

সুতরাং মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো তার যৌবনরূপ তরীকে আল্লাহর দ্বীনের নিয়ন্ত্রণাধীন করেছে,

কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তাকে তার নিজ ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। তৃতীয় হলো ঐ নামাজী ব্যক্তি যার মন সদা মসজিদের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকে।

অর্থাৎ পূর্ণ ঐকান্তিকতা সহকারে জামায়াতের সহিত মসজিদে নামাজ আদায় করে।

চতুর্থ যারা আল্লাহর ছায়ায় আশ্রয়প্রাপ্ত হবে তারা হলো ঐ দুই ব্যক্তি যাদের ভালবাসা ও শত্রুতা ছিল নিছক আল্লাহর ওয়াস্তে।

অর্থাৎ যাদের শত্রুতা ও মিত্রতা কোনরূপ পার্থিব স্বার্থ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো না।

আল্লাহর অনুগ্রহের ছায়ায় আশ্রয়প্রাপ্ত। পঞ্চম ব্যক্তি হবে তিনি, যিনি লোক চক্ষুর অন্তরালে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে অশ্রু বিসর্জন দিয়েছেন।

কিয়ামতের ভয়াবহ দিনে ষষ্ঠ যে ব্যক্তিটি আল্লাহর সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় পাবে, সে হলো এমন চরিত্রবান খোদাভীরু ব্যক্তি যে,

আল্লাহর শাস্তির ভয় মর্যাদাশীল সুন্দরী যুবতীর কামনা পূরণের আকর্ষণীয় আহবানকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

সপ্তম আশ্রয় প্রাপ্ত হবে সেই দানশীল ব্যক্তি যিনি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির বিধান মানসে অতি গোপনে দান করেছেন।

About Admin

আমার নাম: এইচ.এম.জামাদিউল ইসলাম ঠিকানা: সিলেট, বাংলাদেশ। আমি কোরাআনের খেদমতে আছি এবং MuslimBD24.Com সাইটের ডিজাইনার (Editor) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায়, তাই সময় পেলে দ্বীন ইসলাম প্রচারের সার্থে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখালেখি করি। যাতে করে অনলাইনেও ইসলামিক জ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞানহীন মানুষ, ইসলামিক জ্ঞান সহজে অর্জন করতে পারে। একজন মানুষ জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিজের জীবনকে ইসলামের পথে চালাতে গেলে ইসলাম সম্পর্কে যে জ্ঞান অর্জন করার দরকার, ইনশা-আল্লাহ! এই ওয়েব সাইটে মোটামুটি সেই জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। যদি সব সময় সাইটের সাথে থাকে। আর এই সাইটটি হল একটি ইসলামিক ওয়েব সাইট । এ সাইটে শুধু দ্বীন ইসলাম নিয়ে লেখালেখি হবে। আল্লাহ তায়ালার কাছে এই কামনা করি যে, আমরা সবাইকে বেশী বেশী করে ইসলামিক জ্ঞান শিখার ও শিখানোর তাওফিক দান করুন, আমিন। তাজবীদ বিষয়ে কিছু বুঝতে চাইলে যোগাযোগঃ 01741696909

Check Also

নফল নামাজের গুরুত্ব ও ফায়দা

নফল নামাজের গুরুত্ব ও ফায়দা

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) ফরজ নামাজের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে। এই হিসাবে পার হতে না …

Powered by

Hosted By ShareWebHost