Breaking News
Home / নামাজ / নামাজ কায়েম করা ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব

নামাজ কায়েম করা ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব

উমর ইবনে খাত্তাব (রা:) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি তার সমস্ত গভর্ণরদের কাছে এই মর্মে নির্দেশ জারি করেছিলেন যে,

তোমাদের যাবতীয় দায়-দায়িত্বের মধ্যে নামাজই হলো আমার কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।  সুতরাং যে সতর্কতার সাথে নিজের নামাজ আদায় করবে,

এবং যে নামাজের তত্ত্বাবধান করবে সে যেন তার দ্বীনের পূর্ণ হেফাযত করল। আর যে নামাজের খেয়াল রাখবে না,

তার পক্ষে অন্যান্য দায়িত্ব পালনে খেয়ানত আদৌ অসম্ভব নয়।

(মুয়াত্তা ইমাম মালেক)

উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নে করা হল:

নামাজ কায়েম করা হলো ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের অন্তর্গত। রাষ্ট্র প্রধান এবং তার শাসকমণ্ডলী যেমন,

নিজ নিজ এলাকার শাসনকার্য পরিচালনার ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তেমনি দায়িত্বশীল তার আপন আপন এলাকায় নামাজের ব্যবস্থাপনা,

ও নামাজ কায়েম করার ব্যাপারে। হুজুর (সা:) এবং তার সুযোগ্য খলিফাগণ এই উভয়বিধ দায়িত্বই একত্রে পালন করেছেন।

আর দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা:) এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির দিকে একটি নির্দেশ মারফত তার অধীনস্থ শাসক মণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

কেননা এটি হলো ইসলামী রাষ্ট্রের একটি অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আল্লাহ এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলেছেন:

“আমার খাটি বান্দারা যখন দুনিয়ার কোন ভূখণ্ডের উপর শাসন অধিকার পায়, তখন তারা সেখানে নামাজ কায়েম করে, যাকাত চালু করে,

এবং (নাগরিকদেরকে) সৎকাজের নির্দেশ দান করে ও অন্যায় কাজ হতে বিরত ।”

(সূরা হজ্জ, আয়াত-৪১)

হযরত উমর (রা:) তার অধীনস্থ শাসকগণকে বিশেষভাবে সাবধান করে দিয়েছিলেন যে,

আল্লাহ তায়ালার এই প্রথম ফরজটি সম্পর্কে যদি তোমরা উদাসীনতা দেখাও,  তাহলে অন্যান্য দায়িত্ব পালনেও তোমরা উদাসীন হবে।

নামাজ নিকট সবচেয়ে প্রিয়

হযরত ইবনে মাসউদ (রা:) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি নবী কারীমকে (সা:) জিজ্ঞেস করেছিলাম মানুষের যাবতীয় নেক আমলের মধ্যে,

কোনটি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়? হুজুর (সা:) জওয়াব দিলেন, ওয়াক্ত মোতাবেক নামাজ আদায় করা।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, অত:পর কোনটি? হুজুর (সা:) বললেন, পিতা-মাতার সাথে সদ্ধব্যবহার করা। আমি পুনরায় প্রশ্ন করলাম, অত:পর কোনটি?

হুজুর (সা:) জওয়াবে বললেব আল্লাহর রাহে জিহাদে অবতীর্ণ হওয়া। হযরত ইবনে মাসউদ বলেন উপরোক্ত কথাগুলি নবী কারীম (সা:) আমাকে বলেছিলেন।

আমি যদি হুজুরকে আরও প্রশ্ন করতাম তাহলে আরও অধিক বলতেন।

(বুখারী,মুসলিম)

দেরকে কখন নামাজের তাকীদ করবে?

ছবি সংগ্রহীত

হযরত আমর ইবনে শোয়ায়েব (রা:) তার পিতা হতে এবং তার পিতা তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন, নবী কারীম (সা:) বলেছেন,

তোমাদের সন্তানদের বয়স যখন সাত বছর হবে, তখন তাদেরকে নামাজের আদেশ করবে। আর দশ বছর হলে নামাজের জন্য তাদেরকে শাস্তি দিবে,

এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দিবে।

(আবু দাউদ)

উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নে করা হল;

প্রকৃতপক্ষে সাবালিকা হওয়ার সাথে সাথে নির্বিশেষে সকলের জন্য নামাজ রোজা ইত্যাদি আমল ফরজ হিয়ে যায়।

কিন্তু পূর্বাহ্নেই যদি মেয়েদেরকে নামাজ না শিখান ও নামাজের অভ্যাস না করানো হয়, তাহলে সাবালিগ হওয়ার সাথে সাথেই কারও পক্ষে নামাজ আসায় করা সম্ভব না।

তাই হুজুর (সা:) ছেলে-মেয়েদেরকে সাত বৎসর বয়সে নামাজের জন্য উৎসাহিত করতে এবং দশ বৎসরের সময় নামাজের জন্য বাধ্য করতে পিতা-মাতাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ নির্দেশ অভিভাবকদের জন্য। সুতরাং অভিভাবকরা যদি এ নির্দেশ পালন না করে, তাহলে আল্লাহর কাছে দায়ী হবে।

কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের প্রশ্ন করা হবে

হযরত আবু হোরায়রা (রা:( হতে বর্ণিত তিনি বলেন নবী কারীম (সা:) বলেছেন,  কিয়ামতের ময়দানে বান্দাে সর্ব প্রথম তার নামাজের হিসাব দিতে হবে।

যদি নামাজের প্রশ্নো বান্দাহ উত্তীর্ণ হতে পারে তাহলে সে সফলকাম হবে। আর যদি সে নামাজের প্রশ্নে আটকে যায়,

তাহলে আর তার উপায় থাকবে না। তবে তার ফরজ নামাজে কোন ত্রুটি পাওয়া গেলে আল্লাহ ফিরিশতাদেরকে বলবেন,

আমার বান্দাহর নফল নামাজ থাকলে তা হতে ফরজের ত্রুটি পূরণ করে দাও।

অত:পর তার যাবতীয় আমল সম্পর্কে উক্ত পন্থা গ্রহীত হবে।

(তিরমিযী)

উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নে করা হল:

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইবাদতে বাদানীর ভিতর সর্ব প্রধান হলো নামাজ।

আর নামাজ সমস্ত পয়গাম্বর (আ:) এবং তাদের উম্মতের জন্যে কোন না কোনরূপে ফরজ ছিল।

সুতরাং কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথমেই বান্দাহকে নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

অত:পর যে বান্দাহ তার এই প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে, তার পক্ষে পরবর্তী পরীক্ষাগুলি কঠিন হবে না।

হাসরের দিন যদি আল্লাহর অনুগত বান্দাহর ফরজ নামাজে কোন ত্রুটি ধরা পড়ে, তাহলে আল্লাহ তার করুণায় নফল নামাজের সাহায্যে সে ত্রুটি পূর্ণ করে দিবেন।

অত:পর তার পরবর্তী আমল সম্পর্কেও উক্ত পন্থা গৃহীত হবে। অর্থাৎ ফরজের ত্রুটি নফল দিয়ে পূরণ করে দেওয়া হবে।

About Admin

আমার নাম: এইচ.এম.জামাদিউল ইসলাম ঠিকানা: সিলেট, বাংলাদেশ। আমি কোরাআনের খেদমতে আছি এবং MuslimBD24.Com সাইটের ডিজাইনার (Editor) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায়, তাই সময় পেলে দ্বীন ইসলাম প্রচারের সার্থে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখালেখি করি। যাতে করে অনলাইনেও ইসলামিক জ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞানহীন মানুষ, ইসলামিক জ্ঞান সহজে অর্জন করতে পারে। একজন মানুষ জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিজের জীবনকে ইসলামের পথে চালাতে গেলে ইসলাম সম্পর্কে যে জ্ঞান অর্জন করার দরকার, ইনশা-আল্লাহ! এই ওয়েব সাইটে মোটামুটি সেই জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। যদি সব সময় সাইটের সাথে থাকে। আর এই সাইটটি হল একটি ইসলামিক ওয়েব সাইট । এ সাইটে শুধু দ্বীন ইসলাম নিয়ে লেখালেখি হবে। আল্লাহ তায়ালার কাছে এই কামনা করি যে, আমরা সবাইকে বেশী বেশী করে ইসলামিক জ্ঞান শিখার ও শিখানোর তাওফিক দান করুন, আমিন। তাজবীদ বিষয়ে কিছু বুঝতে চাইলে যোগাযোগঃ 01741696909

Check Also

নফল নামাজের গুরুত্ব ও ফায়দা

নফল নামাজের গুরুত্ব ও ফায়দা

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) ফরজ নামাজের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে। এই হিসাবে পার হতে না …

Powered by

Hosted By ShareWebHost