(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:- তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন আমি যেন বেশি বেশি “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” পাঠ করি।
কেননা এ কালিমাটি আরশের নিচে সংরক্ষিত গোপন ভান্ডারের একটা কথা (হাদিস) সাধারণভাবে, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ জিকিরের বাক্য নয়।
সাধারণভাবে জিকিরের বাক্য হল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার ইত্যাদি।
ইস্তেগফার, দুরুদ শরীফ এগুলোও সর্বক্ষণের আমল। তবে লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ হল এমন একটা আমল যার বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্র আছে।
ক্ষেত্রগুলো বুঝতে হলে এই বাক্যটির অর্থ আগে বুঝতে হবে। অর্থ হল:- একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন কিছু করার শক্তি নেই।
এই অর্থটি বুঝলে আমরা ঠিক করতে পারব কোথায় কোথায় লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পড়তে হবে। যেমন কেউ আমার ক্ষতি করতে পারে চিন্তা করে দুশ্চিন্তা টেনসনে পরে গেলাম।
বা কোনো দুর্ঘটনা হতে পারে চিন্তা করে দুশ্চিন্তা টেনশনে পড়লাম কিংবা অন্য যে কোন কারনে টেনশন পেরেশানি আসলো। এসব মুহূর্তে লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পড়তে হয়।
তখন তার অর্থ হবে সবকিছু আল্লাহর উপর নেস্ত করে দিলাম যে, আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোনো কিছু করার ক্ষমতা নেই।
অথবা কারো প্রতি আমার জুলুম করার চিন্তাশক্তি আসলো বা কারো ক্ষতি করার মত খারাপ চিন্তা মনে জাগলো কিংবা কারো থেকে প্রতিশোধ নেয়ার চিন্তা আসলো এসব মুহূর্ত লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পড়তে হয়।
এসব মুহূর্তে এই দোয়াটি পড়ার অর্থ হলো আল্লাহর ভয় মনে জাগ্রত করা যে, সমস্ত শক্তি তার হাতে তার যে শক্তি রয়েছে সেই শক্তির কিঞ্চিৎ পরিমানও আমাকে দেয়া হয়নি।
অতএব আমার এই নগণ্য শক্তি দিয়ে যদি আমি এত বড়াই দেখাই, প্রতিশোধ নিতে চাই, জুলুম করতে চাই, প্রতিপক্ষকে শেষ করে দেয়ার চেষ্টা করি তাহলে যার হাতে মহা ক্ষমতা তিনি আমাকে ধরলে আমার কি উপায় হবে?
এরকম মনোভাব নিয়ে এই দোয়াটি পড়লে কারো প্রতি জুলুম বাড়াবাড়ি করার মনোবৃত্তি জাগবে না। কারো থেকে প্রতিরোধ নেয়ার চিন্তা মাথা ছারা দিতে পারবেনা। কেউ যদি অর্থ চিন্তা করে এই দোয়াটি পড়ে তাহলে তার রাগ পানি হয়ে যাবে।
তখন মনে হবে একজন লোক এতটুকু অন্যায় করছে তবুও আমি প্রতিশোধ নিতে যাচ্ছি আর যার হাতে সব ক্ষমতা আমি অহরহ তার ব্যাপারে কত অন্যায় করে চলছি তিনি যদি আমাকে ধরেন তাহলে আমার কি অবস্থা হবে। এভাবে রাগ দমন হয়ে যাবে, বিনয়ে এসে যাবে।
এ দোয়াটি পড়ার বিশেষ আর একটা ক্ষেত্র রয়েছে। যখন শয়তানের পক্ষ থেকে কোন পাপ কাজের ওয়াসওয়াসা আসে তখন এই দোয়া পড়তে হয় তখন এই দোয়াটি পড়ার অর্থ হলো,
আরে হে শয়তান! তুই ওয়াসওয়াসা দিয়ে আমার কি করতে পারবি তোর চেয়ে মহা ক্ষমতাধর আল্লাহ তিনি আমাকে রক্ষা করবেন। তিনি ব্যতীত কারো কোনো কিছু করার ক্ষমতা নেই।
কিংবা এর অর্থ হল, হে শয়তান! আমি তোর ওয়াসওয়াসার পরোয়া করি না। আমি ঐ শক্তিধর আল্লাহকে ভয় করি। তিনি আমাকে এই পাপ কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তার কথাকে আমি লংঘন করতে পারি না।
যখন আল্লাহকে এরকম বড় মনে করা হয় তখন শয়তান হটে যায় অথবা এই দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা শয়তানের মোকাবেলায় সাহায্য করেন অতএব এ দোয়া হল শয়তানকে হটানোর উপায়, এই দোয়া হলো শয়তানি চিন্তা দূর করার উপায়,
এই দোয়া হলো মন থেকে রাগ দমন করার এবং মনের মধ্যে বিনয়-নম্রতা আনয়ন করার উপায়। আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন। আমিন