(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
শবে বরাতের একটি আমল হলো: কবর জিয়ারত করা। হুযুর সা. এ রাতে জান্নাতুল বাকিতে গিয়েছিলেন। যা রাসুল সা. এর একটি
হাদিস থেকে পাওয়া যায়। হাদিসটি হলো: হযরত আয়শা রা. বলেন: এক রাতে আমি রাসুল সা. কে শয্যাপাশে না পেয়ে খোঁজতে বের
হলাম। (খোঁজতে খোঁজতে ) তাকে জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে পেলাম।(আমাকে দেখে) তিনি বললেন: আয়শা! তুমি এই আশংকা করছো
যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তোমার উপর অবিচার করছেন? হযরত আয়শা রা. বলেন, আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসুল সা.! আমি
ভেবেছিলাম, আপনি আমাকে ছেড়ে অন্য কোনো স্ত্রীর ঘরে গিয়েছেন। এরপর রাসুল সা. বলেন: আল্লাহ তাআলা শাবানের ১৫ তারিখ
রাতে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন। এবং কালব গোত্রের ছাগলের শরীরের পশমের চেয়েও অধিক সংখ্যক বান্দাকে তিনি ক্ষমা করে
দেন।(তিরমিযী হা.৭৩৯, ইবনে মাজাহ হা.১৩৮৫) বর্তমানে মানুষ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে এ রাতে কবরস্থানে গিয়ে থাকে। অথচ
রাসুল সা. তার জীবদ্দশায় মাত্র একবার এ রাতে জান্নাতুল বাকিতে গিয়েছিলেন বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। তাই আমরাও যদি সারা
জীবনে একবার শবে বরাতে গোরস্থানে যাই এবং মৃত ব্যক্তিদের জন্য মাগফেরাত কামনা করি তবে তো ঠিক আছে। কিন্ত প্রতি শবে
বরাতেই গোরস্থানে যাওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করা, একে আবশ্যক মনে করা, শবে বরাতের একটি অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ মনে করা এবং
এমন ধারণা করা যে, এ আমল ছাড়া শবে বরাত আদায়ই হবে না! এ সব কিছুই সীমালঙ্ঘনের শামিল। এব্যাপারে মুফতি শফি রহ.
সুন্দর একটি মূলনীতি বর্ণনা করেন যা সবার মনে রাখা উচিৎ। তা হলো: যে আমলটি মহানবী সা. থেকে যে পর্যায়ে বর্ণিত আছে, সে
আমল ঠিক সে পর্যায়েই রাখা বাঞ্ছনীয়। এর চেয়ে আগে বাড়ানো মোটেই সমীচীন নয়। সুতরাং যদি কোনো ব্যক্তি এই ভেবে কবরস্থানে
যায় যে, মহানবী সা. গিয়েছিলেন তাই আমিও তার অনুকরণ করলাম। তবে সে অবশ্যই সাওয়াবের অধিকারী হবে। ইন শা আল্লাহ।
তবে মাঝেমধ্যে আবার তা ছেড়েও দিতে হবে। অর্থাৎ জরুরি মনে করা যাবে না।
বি.দ্র.: আমলটি রাসুল সা. থেকে কি পরিমাণ গুরুত্বের সাথে বর্ণিত তা প্রকৃত আলেম ছাড়া সাধারণ মানুষের অনুধাবন করা
একেবারেই অসম্ভব। তাই সাধারণ মানুষের উচিৎ হলো, যে কোনো আমল করতে হলে গভীর ধর্মীয় জ্ঞানের অধিকারী আলেমের কাছ
থেকে তা জেনে নিয়ে আমল করা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে প্রকৃত বিষয়টি অনুধাবণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।।
আরও পড়ুন:
হাদিসের আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব, ফজিলত ও আমল
শবে বরাতেও আল্লাহ তাআলা যাদেরকে ক্ষমা করবেন না
শবে কদর রমযানের শেষ দশকে