Breaking News
Home / আল হাদীস / হাদিসের আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব, ফজিলত ও আমল

হাদিসের আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব, ফজিলত ও আমল

(মুলিমবিডি২৪ডটকম)

হাদিসের আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব, ফজিলত ও আমল

শবে বরাতের ত্ব ও ফজিলত:

হযরত শা রা. থেকে বর্ণিত: একবার সা. আয়শা রা. কে জিজ্ঞাসা করলেন: তুমি কি জান এ রাতে অর্থাৎ শবে বরাতে কি কি

ঘটে? তিনি বললেন, হে র রাসুল সা. আকে বলুন এ রাতে কী কী ঘটে? রাসুল সা. বলেন: এ বছর যত সন্তান জন্ম গ্রহণ করবে

তা এ রাতে নির্ধারিত হয় এবং এ বছর যত মানুষ মারা যাবে তাও এ রাতে নির্ধারিত হয়। এ রাতে মানুষের কর্মসমুহ ওঠানো হয়। এ

রাতে মানুষের রিজিকসমুহ অবতীর্ণ হয়। তারপর হযরত আয়শা রা. বললেন: হে আল্লাহর রাসুল সা. কোনো ব্যক্তি কি আল্লাহর

ছাড়া নিজের দ্বারা জান্নাতে যেতে পারবে? রাসুল সা. বলেন: না, কোনো ব্যক্তিই আল্লাহ তাআলার রহমত ব্যতীত

জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। কথাটি তিনি তিনবার বললেন। আয়শা রা. বলেন: আমি পুণরায় জিজ্ঞাসা করলাম. আপনিও নন

হে আল্লাহর রাসুল? তখন তিনি য় হাত রেখে বললেন. হ্যাঁ, আমিও নই। তবে যদি আল্লাহ তাআলা তার রহমত দিয়ে আমাকে ঢেকে

নেন তা হলে তা ভিন্ন কথা। কথাটি তিনি তিনবার বললেন।(মিশকাত ১১৫)

অন্য হাদিসে হযরত আতা ইবনে ইয়াসার রহ. বলেন: শবে বরাত এলে মৃত্যুর ফেরেশতার নিকট একটি লিখিত কাগজ দিয়ে তাকে বলা

হয়, এই কাগজে লিপিবদ্ধ রুহগুলো কবজ কর। ফলে বহু মানুষের ক্ষেত্রে এমন হয় যে, সে ঘর বানাচ্ছে, প্রসাদ তৈরি করছে, বৃক্ষ রোপণ

করছে, বিবাহ করছে অথচ তার মৃত্যুর ফায়সালা হয়ে গেছে। তার নাম মৃত্যুর ফেরেশতার নিকট অর্পণ করা হয়েছে। অথচ সে

প্রবৃত্তির অনুসরণে ডুবে আছে। এব্যাপারে টেরও পাচ্ছে না। অতএব, হে সীমাহিন আশা দ্বারা প্রবঞ্চিত এবং অসৎকর্মে উৎফুল্লিত!

মৃত্যুকে ভয় কর। তোমার তো জানা নেই, কখন তোমার মৃত্যুর ডাক এসে যায়। একদিনকে অল্প সময় মনে করে এমন বহুলোক মৃত্যু

এসে গেলে ‍দিনটি পূর্ণ করতে পারবে না। আগামিকাল বাঁচার আশাবাদী বহুলোক আগামিকালের নাগাল পাবে না। আল্লাহ তাআলার

নিকট আবেদন, তিনি যেন মৃত্যু আসার পূর্বেই আমাদের তা সহজ করে দেন।(মাজালিসুল আবরার ১৭৭)

রাসুল সা. ইরশাদ করেন: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা শাবানের ১৫ তারিখের রাতে প্রথম আকাশে আগমন করেন এবং কালব গোত্রের

পালিত ছাগলের শরীরের পশমের চেয়েও অধিক সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করেন।

রাসুল সা, বলেন: যে ব্যক্তি শাবানের ১৫ তারিখে রোজা রাখবে কখনও তাকে অগ্নী স্পর্শ করবে না।(শবে বরাত শবে কদর ফাজায়েল ও মাসায়েল, আল্লামা তাকি উসমানি দা. বা. ৩৭)

অপর এক হাদিসে রাসুল সা. এরশাদ করেন: সুসংবাদ ঐ ব্যক্তির জন্য যে শাবানের ১৫ তারিখ রাতে নেক আমল করবে।(শবে বরাত শবে কদর ফাজায়েল ও মাসায়েল৩৮)

শবে বরাতের আমল:

হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. এরশাদ করেন, যখন শাবানের পঞ্চদশ দিন আসে তখন তোমরা রাতে নামাজ পড় এবং

পরবর্তী দিন রোজা রাখ। কারণ সেদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ পাক প্রথম আসমানে অবতরণ করেন। তারপর বান্দাদের ডেকে ডেকে

বলতে থাকেন, আছে কি কোনো ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো। আছে কি কোনো রিজিকপ্রার্থী? আমি তাকে রিজিক দেবো।

আছে কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি তাকে বিপদ থেকে মুক্তি দেবো। আছে কি কেউ অমুক ্তুর প্রার্থী? আছে কি কেউ অমুক বস্তুর

প্রার্থী? এভাবে ফজর পর্যন্ত ঘোষণা দিতে থাকেন।(ইবনে মাজাহ ১০০, মিশকাত ১১৫)

এরাতে রাসুল সা. এর আমল:

আম্মাজান হযরত আয়শা রা. এর সূত্রে বায়হাকি শরিফে বর্ণিত আছে, রাসুল সা. এক রাতে আমার এখানে আরাম করছিলেন। রাত

প্রায় অর্ধেক। দেখলাম রাসুল সা. বিছানায় নেই। তাই গায়ে চাদর জড়িয়ে নিলাম। তারপর রাসুল সা. এর অন্যান্য স্ত্রীদের

কামরাগুলোতে গিয়ে খুঁজতে লাগলাম। কিন্ত কোনো কামরায় তাকে পেলাম না। একাকী ফিরে এলাম। তারপর জান্নাতুল বাকীতে

গেলাম। দেখি রাসুল সা. সেখানে সিজদারত। পরম দয়াময় প্রভুর নিকট দোয়া করছেন। দোয়া শেষ করলেন। সিজদা থেকে মাথা

ওঠালেন। আমাকে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে দেখে বললেন: হুমায়রা! কি হয়েছে তোমার? এতো অস্থির হয়ে কোথা থেকে এলে?

হযরত আয়শা সিদ্দিকা রা. বলেন: তারপর আমি রাসুল সা. কে পুরো ঘটনা খুলে বললাম। রাসুল সা. বলেন: আয়শা! আজকের রাত

হচ্ছে শাবানের ১৫ তারিখের রাত। আল্লাহ তাআলা আজ প্রথম আসমানের প্রতি বিশেষ তাজাল্লি দিবেন এবং মুশরিক ও বিদ্ধেষভাব

পোষণকারী ব্যতিত সকলকে ক্ষমা করে দিবেন।

আরও পড়ুন:

শবে বরাত ও এরাত্রির ইবাদতের ফজিলত সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিতঃনঙ্গে আসলাফ আফজল
ইবাদতের বিভিন্ন পদ্ধতি
শবে কদর হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ এক রাত

About মুহাম্মদ আবদুল্লাহ

আমি মাওলানা মোঃ আব্দুল্লাহ। 15ই এপ্রিল 1994 ঈসায়ি রোজ শুক্রবার মৌলভীবাজার জেলার হামরকোনায়( দাউদপুর) জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবনের শুরুটা প্রাথমিক বিদ্যালয় দিয়ে হলেও 4 বছরের মাথায় ইসলামিক শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে নিজ উদ্যোগে মাদ্রাসায় ভর্তি হই! আলহামদুলিল্লাহ! সর্বশেষ 2017 ঈসায়ি কওমি মাদ্রাসার উচ্চতর ডিগ্রী মাস্টার্স (দাওরায়ে হাদিস) হযরত শাহ সুলতান রহ. মাদ্রাসা থেকে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল ক্বওমিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করি! নিজে যা কিছু জেনেছি তা লিখনীর মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এবং আমৃত্যু ইসলাম ও মানবতার সম্পর্কে জানতে ও জানাতে এই সাইটের সাথে সংযুক্ত হয়েছি! আল্লাহ আমাকে ও সবাইকে কবুল করুন।আমিন!!!

Check Also

সুরা ওয়াকিয়ার ফজিলত

সুরা ওয়াকিয়ার ফজিলত

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) সুরা ওয়াকিয়ার ফজিলত হযরত ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, …

Powered by

Hosted By ShareWebHost