(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
নবী করীম (সা:) কে জন্মের পর সর্বপ্রথম তার সম্মানিতা মাতা এবং এর কিছুদিন পর আবূ লাহাবের দাসী ছুওয়াইবা দুগ্ধপান করান।
এর পর আল্লাহ প্রদত্ত এ সৌভাগ্য হযরত হালীমা সাদিয়া (রা.) লাভ করেন। (সীরাতে মুগলতাই)
নবজাতকের দুগ্ধ পানের ক্ষেত্রে আরবদের রীতি
আরবদের অভিজাত পরিবারের সাধারণত এ রীতি ছিল যে; তারা নবজাত সন্তান কে দুধপান করানোর জন্য আশেপাশের গ্রামগুলোতে পাঠিয়ে দিত।
এতে শিশুর দৈহিক স্বাস্থ্য ভালো হতো এবং তারা গ্রামের শুদ্ধ আরবী ভাষাও আয়ত্বে আনতে পারত। এজন্য গ্রামের মেয়েলোকেরা দুগ্ধপায়ী শিশু সংগ্রহ করতে প্রায়ই শহরে আসত।
হযরত হালীমা সাদিয়া রা. কিভাবে নবী করীম সা: কে দুগ্ধপান করানোর সৌভাগ্যার্জন করেন?
হযরত হালীমা সাদিয়া (রা.) বলেন, আমি তায়েফ থেকে বনূ সাদ গোত্রের মহিলাদের সাথে দুগ্ধপায়ী শিশুর খোজে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই।
সে বছর দেশে দুর্ভিক্ষ ছিল। আমার কোলেও একটি দুগ্ধপায়ী শিশু ছিল।
কিন্তু নিতান্ত দারিদ্র ও অনাহারে আমার বুকে এতটুকু দুধ ছিল না যা আমার এ বাচ্চার চাহিদা বা প্রয়োজন পূরণ করতে পারে।
সারা রাত্রি এ বাচ্চা ক্ষুধায় ছটফট করত, আমরা তার কারণে ঘুমাতে পারতাম না, বসে বসে রাত কাটাতাম।
আমাদের একটি উষ্ট্রী ছিল কিন্তু সেটিরও তখন দুধ ছিল না।
মক্কা সফর করতে আমি যে গাধার উপর সওয়ার হয়েছিলাম সেটিও এত দুর্বল ও কুশ ছিল যে, তা সবার সঙ্গে একসাথে তালমিলিয়ে চলতে পারছিলনা।
এজন্য সফরের সাথীরাও বিরক্তি বোধ করছিল। অবশেষে অনেক কষ্টে এ সফর শেষ হলো।
মক্কা পৌছানোর পর যে মহিলাই শিশু মুহাম্মদ (সা:) কে দেখতে পেল এবং জানতে পারল যে, সে পিতৃহীন ইয়াতীম, সে-ই তাকে গ্রহণ করল না।
(কেননা এধরণের শিশুকে দুগ্ধপানে এবং লালন পালনে তেমন কোনো পুরস্কার আর সম্মানী পাওয়ার আশা নেই)
এদিকে হালীমার ভাগ্যাকাশের তারকা জলসে উঠেছিল। তার দুধের স্বল্পতাই তার জন্য রহমত হয়ে গেল।
কেননা তার বুকের দুধ কম থাকায় কেউ তাকে আপন সন্তান দিতে রাজি হলোনা।
হযরত হালীমা (রা.) বলেন, আমি আপন স্বামীকে বললাম, শুনো খালি হাতে ফিরে যাওয়ার চাইতে এ ইয়াতীম শিশুটিকে নিয়ে যাওয়াই বরং ভালো।
আমার স্বামী একথা শুনে মেনে নিলেন, তারা এদুর্লভ রত্নটিকে ঘরে নিয়ে এলেন,
যার আলোকে শুধু হালীমা ও আমিনার ঘরই নয় বরং পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সমগ্র জাহানই আলোকিত হওয়ার প্রতিক্ষায় ছিল।
(সূত্র: সীরাতে খাতামুল আম্বিয়া+১২,১৩)
আরো পড়ুন 👇👇👇
রাসূল সা: এর জন্মকালীন সংঘটিত বিস্ময়কর ঘটনাবলী