(মুসলিম বিডি২৪ডটকম)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
শক্রদের সাথে রাসুল (সা.)-এর ব্যাবহার
বিরোধীদের সাথে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ ছিল অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ তাদের দাওয়াত ও সংশোধনের পথে-
তিনি প্রাণেরও মায়া করতেন না তিনি তাদের নির্যাতন সহ্য করতেন তাদের দুর্ব্যবহার ক্ষমা করে দিতেন।
এমনটা হবেন না কেন? আল্লাহ তায়া’লা রাসুলুল্লাহ সম্পর্কে বলেছেন,’আমি তোমাকে রাসুল করে পাঠিয়েছি কেবলই রহমত স্বরূপ।
কার জন্য রহমত? মুমিনদের জন্য? না তা নয় আল্লাহ তাআলা বলেছেন-وما ارسلناك الا رحمة للعامين
আমি সমস্ত জগতের জন্য শুধু রহমত স্বরূপই তোমাকে রাসুল করে পাঠিয়েছি (সুরা আম্বিয়া ১০৭)
ইহুদিদের অবস্থা নিয়ে চিন্তা করুন।
তারা রাসুলুল্লাহর নিন্দা করত এবং আগে বেড়ে শক্রতা করত তারপরও তিনি তাদের উপর দয়া করতেন।
আয়শা (রা.) বর্ণনা করেন একবার ইহুদীরা নবীজীর বাড়ির পাশ দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছিল তারা তাকে লক্ষ করে বলল, আস্সামু আলাইকুম অর্থাৎ তোমার মৃত্যু হোক।
রাসুল (সা.) জবাবে বললেন- ওয়া আলাইকুম অর্থাৎ তোমাদেরও তিনি এতটুকু বলে থেমে গেলেন কিন্তু আয়েশা ধৈর্য ধরতে পারলেন না।
তিনি বললেন, আস্সামু আলাইকুম তোমাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত হোক তোমাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হোক।
একথা শুনে আল্লাহর রাসূল বললেন-
থামো আয়শা! নম্রতা অবলম্বন করো রূঢ় তার ও কর্কশ কথাবার্তা পরিহার করো আয়শা বললেন, আপনি কি শোনেননি ওরা কী বলেছেন?
নবীজী বললেন- তুমি কি শোনার আমি কী বলেছি আমি তাদের জওয়াব দিয়েছি তাদের বিপক্ষে আমার কথা কবুল হবে। কিন্তু আমরা বিপক্ষে তাদের বদদোআ কবুল হবে না।
হাঁ, গালির জওয়াবে গালি দেওয়ার কী যুক্তি আছে যেখানে আল্লাহ বলেছেন- وقولوا للناس حسنا মানুষের সাথে সুন্দর কথা বলো(সুরা বাকারার ৮৩)
আরেকদিন আল্লাহর রাসূল সাহাবীদের নিয়ে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন ফেরার পথে তারা এক উপত্যকায় ছাউনি ফেললেন স্থানটি ছিল সবুজ শ্যামল ।
সাহাবায়ে কেরাম বিক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন গাছের নিচে ঘুমিয়ে পড়লেন রাসূল (সা.) ও একটি গাছের কাছে এগিয়ে গেলেন।
তলোয়ারখানা একটি ডালের সাথে ঝুলিয়ে রেখে নিচে চাদর বিছিয়ে শুয়ে পড়লেন এ সময় এক মুশরিক তাদেরকে অনুসরণ করছিল।
যখন সে দেখল রাসুলুল্লাহ একা তখন সে পা টিপে টিপে এগিয়ে এল, তলোয়ার খানা গাছের উপর থেকে নামিয়ে ফেলল।
এরপর গর্জন নিয়ে বলল, মুহাম্মাদ!এখন তোমাকে আমার হাত থেকে কে বাচাবে? রাসূলুল্লাহ জাগ্রত হলেন লোকটি তার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।
হাতে তার খোলা তলোয়ার তাতে মৃত্যুর ঝলক দুশমন বিজয় ও সাফল্যের নেশায় হতবিহবল বার বার বলে যাচ্ছে কে তোমাকে বাঁচাবে কে তোমাকে বাঁচাবে।
অত্যন্ত শান্ত ও দৃঢ়চিত্তে রাসুলুল্লাহ জবাব দিলেন – আল্লাহ
জবাব শুনে লোকটি কেঁপে উঠলো ঝপ হাত থেকে পড়ে গেল তলোয়ারখানা নবীজি উঠে দাঁড়ালেন তলোয়ারখানা হাতে নিয়ে বললেন
এখন তোমাকে আমার হাত থেকে কে রক্ষা করবে?
তখন সে অনুনয় বিনয় করে নবীজির কাছে ক্ষমা চাইল তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ! দেখুন রাসূল সাঃ এর আদর্শ কেমন ছিল ।নিজের জীবন নেওয়ার মত দুস্বাহস কারি শত্রুকে
নিজের নাগালে পেয়েও ক্ষমা করে দিলেন ।
আল্লাহ পাক আমাদের এমন আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমিন।
আরো পড়ুনঃ
রাসূল সা: এর জন্মকালীন সংঘটিত বিস্ময়কর ঘটনাবলী, রাসূল সা: কে অনুসরণ করার সঠিক পদ্ধতি, রাসূলের অনুগত্যে সাহাবীগণ (রাযি.)