(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
জন্ম নিয়ন্ত্রণ আধুনিক সমাজের স্বস্তির অন্যতম জায়গা। বর্তমানে কিছু অতি আধুনিক মানুষ রয়েছে যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ খুব আগ্রহ নিয়ে করে।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ বৈধ বা অবৈধ তার কোন তোয়াক্কা না করেই অনায়াসের করে চলছে। এই নিয়ন্ত্রণ করতে তাদেরকে যে সমস্ত বিষয় আকৃষ্ট করছে তার মধ্য
থেকে অন্যতম হলো; সন্তানের দেখভাল করা, তাকে আলাদা সময় দেয়া, তার জন্য নিজের সোসাইটিতে অনায়াসে যাতায়াত করতে না পারা, একাধিক
সন্তান হলে তাদেরকে নিয়ে যেখানে সেখানে ঘুরতে যেতে না পারা, তথাকথিত ভদ্র সমাজে নিজেকে আধুনিক বলে উপস্থাপন করতে না পারা,
একাধিক সন্তান নিজের জন্য প্যারা মনে করা ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে মানুষকে আগ্রহী করছে। তবে যে যেই উদ্দেশ্যের জন্য জন্ম
নিয়ন্ত্রণ করুক না কেন তারা সাধারণভাবে দুটি পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। আজকে আমরা এই দুটি পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
যেসব পদ্ধতিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা হয় সেগুলো প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত। (১) স্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি (২) অস্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি।
স্থায়ী পদ্ধতি:- এমন কোন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা যাতে প্রজনন শক্তির বিনাস সাধন করা হয় অর্থাৎ এরূপ অপারেশন করা যার মাধ্যমে
স্থায়ীভাবে সন্তান জন্মদানের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায় ও বংশ পরম্পরার যোগ্যতা হারিয়ে যায়। চাই যৌন শক্তি বা কাম ভাব অবশিষ্ট থাকুক বা নাই থাকুক।
এটা হারাম হওয়ার ব্যাপারে সমস্ত ইসলামী আইনবিদগণ একমত। (ইসলামী সমাধান ১৮৩)
অস্থায়ী পদ্ধতি:- এমন পদ্ধতি গ্রহণ করা যাতে সাময়িকভাবে সন্তান গর্ভধারণ বন্ধ থাকে। গর্ভধারণ ক্ষমতা একেবারে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় না।
এতে পুণঃ সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা অবশিষ্ট থাকে। কোনো ওজর আপত্তি ছাড়া এটাও গ্রহণ করা নাজায়েজ, হারাম। (ইসলামী সমাধান ১৮৩)
আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন অস্থায়ী পদ্ধতি বৈধ হওয়ার জন্য ওযরের কথা বলা হয়েছে অর্থাৎ যদি কোন ওযর থাকে তাহলে তা বৈধ।
তাই আসুন এখন ওযর সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। ব্যক্তিগত বিভিন্ন অসুবিধার কারণে অস্থায়ী বা সাময়িক জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা যায়।
যেমন:- কোন মহিলার স্বাস্থ্যহানি বা না না রোগ বালাই বা ঘন ঘন অনেক বাচ্চা হওয়ায় তাদের লালন পালনে বেশি অসুবিধা হওয়ার বা কোন
মায়ের বুকের দুধের অভাবে সন্তানের জীবননাশের সম্ভাবনা ইত্যাদি ওযর বসত অস্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ বৈধ। সে ক্ষেত্রে সমস্যা দূর হওয়া পর্যন্ত
অস্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণের কোন একটি পদ্ধতি মুসলিম বিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শক্রমে গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে এমন পদ্ধতি হতে হবে যা গ্রহণ করতে গিয়ে
কোন হারামের মধ্যে যেমন সতর খোলা ইত্যাদিতে লিপ্ত হতে না হয়। ট্যাবলেট ও ইঞ্জেকশন ইত্যাদিও ব্যবহার করতে পারবে।
(সূত্র:- সূরা আনআম ১৫১, বনি ইসরাইল ৩১, ফাতহুল বারী ৯/৯৫, ফাতওয়ায়ে শামী ৩/১৭৬, ইমদাদুল ফাতওয়া ৪/২০৪)
আরও পড়ুন:-