(মুসলিম বিডি২৪.কম)
بسم الله الرحمن الرحيم
সকল ইবাদতে সীমালঙ্ঘন নিষিদ্ধ
আমাদের জন্য মাপকাঠি হলো শরীয়ত.শরীয়ত অনুযায়ী যে আনন্দ জায়েয তার তো অনুমতি রয়েছে আর শরীয়ত অনুযায়ী নয় তা নিষিদ্ধ।
আনন্দ প্রকাশ সম্পর্কে কুরআনুল কারীমের এক জায়গায় তো বলা হয়েছে “لاتفرح” (এখানে আনন্দের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে)।
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে “فليفرحوا” (এখানে আনন্দ প্রকাশের আদেশ রয়েছে) এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, কোন কোন আনন্দের অনুমতি রয়েছে।
আবার কোন কোন আনন্দের ওপর নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান আমাদের জন্য মাপকাঠি হলো শরীয়ত শরীয়তের বিধান অনুযায়ী .
যে আনন্দ জায়েজ তার অনুমতি রয়েছে আর যে আনন্দ না জায়েয তার তো অনুমতি নেই কুরআনুল কারিমের যে স্থানে ,
আনন্দের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা দ্বারা দুনিয়াবী হাসি-আনন্দ উদ্দেশ্য (যা অহংকারবশত হয়) আর যেখানে আনন্দের আদেশ রয়েছে।
সেখানে দ্বীনী নি‘আমতের ওপর আনন্দ উদ্দেশ্য কিন্তু ততটুকু আনন্দ যা শরীয়ত সীমা অতিক্রম না করে।
যেমন নামায একটি দ্বীনী নি‘আমত তার ওপর অতিরিক্ত আনন্দিত হয়ে যদি কেউ চার রাকা'আতের স্থলে ,
পাঁচ রক‘আত পড়ে বসেতখন তাতে সওয়াব না হয়ে বরং গুনাহ হবে এর কারণ হলো সে শরীয়তের সীমালঙ্ঘন করেছে।
স্বয়ং রাসুল (সা.)-এর আলোচনা যা নিয়ে আমাদের বিতর্ক চলছে তা সামনে রাখুন – ফিকাহবিদগনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত যে,
চার রাক‘আতবিশিষ্ট নামাযের প্রথম বৈঠকে তাশাহুদের পর اللهم صل على محمد (হে আল্লাহ! মুহাম্মদ-এর প্রতি রহমত বর্ষণ কর)
পড়ে ফেললে নামায অসম্পূর্ণ হয়ে যাবে এমনকি সিজদায়ে সাহো (নামাযে ভুলবশত কোন ওয়াজিব ছুটে যাওয়ার কারণে যে সিজদা ওয়াজিব হয় তাকে সিজদায়ে সাহো বলে)
তার দ্বারা তা শুধরিয়ে নিতে হবে যদি ভুলবশত এমন হয়ে থাকে
দেখুন দুরূদ শরীফ (যেখানে সালাতও রয়েছে সালামও রয়েছে) যা সম্পর্কে হুযুর পাক (সা.) ইরশাদ করেছেন –
যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দুরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি দশটি রহমত বর্ষণ করবেন।
উপরন্তু যদি যদি তা নামাযের মধ্যে হয় অথচ শরীতের বিধান হলো নামাজ ক্রটিপূর্ণ হয়ে যাবে তাহলে এর মূলত কারণ কি?
কারণ একটাই যে, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে দুরূদ শরীফের জন্য যে স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা লঙ্ঘিত হয়েছে।
ফলে নামায ক্রটিপূর্ণ হয়ে গেছে যদিও নামাযে দুরূদ শরীফ পাঠ করা ইবাদত আর এ মাসআলাটি এমন যে, তার ওপর বিদ‘আতপন্থীদেরও ঐকমত্য রয়েছে।
কারণ তারাও হানাফী মাযহাবের অনুসারী সুতরাং তাদের উচিত ইমাম আবু হানিফা (র.)-এর ওপর আপত্তি উত্থাপন করা।
এবং তার প্রতিও অপবাদ আরোপ করা যে, তিনি যিকরেও রাসুল দুরূদ শরীফ সালাত ও সালাম থেকে নিষেধ করেছেন এবং তিনিও ওহাবী ছিলেন।
অতএব বন্ধুগন! আল্লাহকে ভয় করুন এবং ভ্রান্ত চিন্তা মস্তিষ্ক থেকে সম্পূর্ণ বের করে ফেলুন
অন্যথায় এর প্রভাব বহু দূর পর্যন্ত সংক্রামিত হবে শরয়ী হুকুম -আহকামের ব্যপারে বাস্তবদর্শীতা ও ইনসাফের সাথে চিন্তা করুন।
শরীয়তের কোন বিষয়ে সন্দেহ দেখা দিলে আদব ও সম্মানের সাথে তা আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করে সন্দেহমুক্ত হোন।
সার কথা স্বয়ং কুরআনুল কারীমে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের ওপর আনন্দ প্রকাশের হুকুম রয়েছে।
সুতরাং এ আনন্দ কে নিষিদ্ধ করতে পারে? অথচ আমাদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা হয় আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আলোচনা করতে নিষেধ করি।
হুযুর পাক (সা.) -এর মুবারক আলোচনা তো এমন বিষয় যে, যদি তার জন্য সওয়াবের প্রতিশ্রুতি না থাকতো তাহলেও মহব্বতের কারণে সর্বদা তার আলোচনায় নিমগ্ন থাকতাম।