কুরআন ও সুন্নাহ দুটোই শরীয়তের উৎস
এটা অবশ্যই জানার বিষয় যে, নবী করীম সাঃ এর দায়িত্ব হলো, আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ অহী তথা রিসালাহ ও বার্তা পৌছে দেওয়া,
তিনি শরীয়তের বাহক, প্রবর্তক নন। এর অর্থ কিছুতেই এটা নয় যে,
কোরআনই শরীয়তের একমাত্র উৎস, প্রমাণ ও হুজ্জত।
সুতরাং শুধু কোরআনের উপর আমল করাই হলো জরুরি, হাদিস বা সুন্নাহর উপর আমল করা জরুরি নয়। না, এটা সত্য নয়,
এটা সুস্পষ্ট গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা, যার কারণ হচ্ছে নবী ও নবুওয়াতের মাকাম সম্পর্কে অজ্ঞতা।
বস্তুত অবতীর্ণ কোরআনকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া যেমন নবীর দায়িত্ব,তেমনি কোরআনের অর্থ ও মর্ম বর্ণনা করা
এবং সংক্ষিপ্ত বিষয়কে বিশদরূপে পেশ করা,এটাও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।
এ বিষয়ে তিনি স্বয়ং আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে আদিষ্ট হয়েছেন।
ইরশাদ হয়েছে- আর আমি আপনার কোরআন নাযিল করেছি,
যেন আপনি মানুষের জন্য বয়ান করেন ঐ সমস্ত বিষয় যা তাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে, আর যেন তারা চিন্তা করে। (নাহল, ৪৪)
অর্থাৎ কোরআনের যে সকল আয়াত ও বিধান সংক্ষিপ্ততার কারণে বা মানুষের দূর্বল বোধ ও বুদ্ধির কারণে ব্যাখ্যা সাপেক্ষ
সেগুলোর প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা প্রদান করা, এটাও আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর প্রতি অর্পিত নবুওয়তী দায়িত্ব।
আরো ইরশাদ হয়েছে- (তিনি তাদের ন্যায় কর্মের আদেশ করেন এবং মন্দ কর্ম হতে নিষেধ করেন।
এবং পবিত্র বস্তুকে হালাল সাব্যস্ত করেন, আর অপবিত্র বস্তুকে হারাম সাব্যস্ত করেন) (আল আরাফ, ১৫৭)
অর্থাৎ কোন কোন বস্তু উৎকৃষ্ট এবং তা খাওয়া হালাল, তদ্রূপ কোন কোন বস্তু নিকৃষ্ট এবং তা খাওয়া হারাম,
কোরআনে তা অতি সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে, যা বিশদভাবে বর্ণনা করা তাঁর নবুওয়তী দায়িত্ব।
তদ্রূপ মানুষকে আল্লাহর আয়াত তথা কোরআন হুবহু তেলাওয়াত করে শুনানো যেমন তাঁর নবুওয়তী দায়িত্ব
তেমনি তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দান এবং তাযকিয়া,
অর্থাৎ হৃদয় ও আত্মাকে সংশোধন করা,এগুলোও তাঁর নবুওয়তী দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং বিশুদ্ধতম সনদে সু প্রমানিত সুন্নাহকে অস্বীকার করার অর্থ হবে স্বয়ং কোরআনকেই অস্বীকার করা।
নবী করীম সাঃ ইরশাদ করেছেন-আমি তোমাদের মধ্যে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি,
যতক্ষণ তোমরা ঐ দুটি আকড়ে থাকবে,কিছুতেই ভ্রষ্ট হবে না। কিতাবু্ল্লাহ এবং আমার সুন্নাহ।
শুধু কথা এই যে, তিনি যা কিছু বলেন, নিজের পক্ষ হতে কিছুই বলেন না, সে অধিকার ও তাঁর নেই, বরং যা কিছু বলেন,
তা আল্লাহ প্রদত্ত ইলম ও অহীর আলোকেই বলেন এবং আল্লাহ প্রদত্ত নবুওয়তী মর্যাদার ভিত্তিতেই বলেন,
সুতরাং তা অস্বীকার করা মুলত তাঁর নবুওয়তী মাকামকেই অস্বীকার করা।