Breaking News
Home / পর্দা/নারী / নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি যুগে যুগে নারী শিক্ষার স্বরূপ বিশ্লেষণ

নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি যুগে যুগে নারী শিক্ষার স্বরূপ বিশ্লেষণ

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)

নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

নিচের লিংকে ক্লিক করে পূর্ববর্তি অংশ পড়ুন,এর পর থেকেঃ 

মহান আল্লাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীদেরকে জ্ঞান চর্চার নির্দেশ দিয়ে বলেন,

 

﴿ وَٱذۡكُرۡنَ مَا يُتۡلَىٰ فِي بُيُوتِكُنَّ مِنۡ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ وَٱلۡحِكۡمَةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ لَطِيفًا خَبِيرًا ٣٤ ﴾ [الاحزاب: ٣٤]  

 

‘‘আর তোদের ঘরে আল্লাহর যে আয়াতসমূহ ও হিম পঠিত হয়- তা তোমরা স্মরণ রেখো। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবহিত।''[9]

 

 

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে ী সমাজের মধ্যে ের বিধি-বিধান সম্পর্কে অবগত হওয়ার এমন অদম্য আকাঙ্খা ও উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছিল যে,

 

সেজন্য তারা দিনরাত সময় ব্যতিব্যস্ত থাকতো। জ্ঞান আহরণের পথে কোনো বাধা ও প্রতিবন্ধকতা তাদেরকে নিরাশ ও ভগ্নোৎসাহ করতে পারতো না।

 

আনসারী মহিলাদের সম্পর্কে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেনঃ

 

نعم النساء نساء الأنصار لم يكن يمنعنهن الحياء ان يتفقهن في الدين

 

‘‘আনসারী মহিলারা কতই না ভাল! দীনের বিধি-বিধান সম্পর্কে জ্ঞান ের ক্ষেত্রে লজ্জা-শরম তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নি।''[10]

 

ইসলামের শিক্ষা সম্পর্কে সে যুগের মহিলারা কত গভীর ও সূক্ষ্ম দৃষ্টি নিয়ে অধ্যয়ন করতেন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা-এর নিম্নের উক্তি হতেই তা বোঝা যায়ঃ

 

 ‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে কুরআন মাজীদের কোনো আয়াত নাযিল হলে,

 

আমরা তার শব্দগুলো হুবহু মুখস্থ না করলেও তার হালাল-হারাম এবং আদেশ-নিষেধগুলো স্মৃতিপটে গেঁথে নিতাম।''[11]

 

ইবাদত এবং জ্ঞান চর্চার মজলিসে নারীরা বিশেষ উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সাথে অংশগ্রহণ করতো।

 

খাওলা বিনতে কায়েস আল্-জুহানিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুউচ্চ কণ্ঠের উল্লেখ করে বলেছেনঃ

 

كنت اسمع خطبة رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم الجمعة وأنا في موخر النساء.

 

‘‘জুম‘আর দিনে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খুতবা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে শুনতে পেতাম। অথচ আমি মেয়েদের সর্বশেষ কাতারে থাকতাম।''[12]

 

হারিসা ইবনু নু‘মানের এক কন্যা বর্ণনা করেছেনঃ

 

«ما حفظت “ق” إلا من في رسول الله صلى الله عليه وسلم»

 

‘‘আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখ থেকে শুনেই সূরা কাফ মুখস্থ করেছিলাম। তিনি প্রত্যেক জুম‘আর খুতবাতে এটি পড়তেন।''[13]

 

মেয়েদের উপদেশ ও শিক্ষাের ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বিশেষ লক্ষ্য রাখতেন।

 

যদি কোনো সময় তিনি বুঝতে পারতেন যে, মেয়েরা তার বক্তব্য ঠিকমত শুনতে পায় নি, তাহলে তিনি তাদের কাছে গিয়ে পুনরায় তা বলে দিতেন।

 

আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা এক ঈদের দিনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন,

 

«فظن أنه لم يسمع النساء فوعظهن وأمرهن بالصدقة»

 

‘‘তিনি মনে করলেন যে, তাঁর কথা মেয়েদের কাছে পৌঁছাতে পারেন নি।

 

তাই পুনরায় তিনি তাদেরকে নসীহত করলেন। তাদের সাদকা দেয়ার জন্য আদেশ দিলেন।''[14]

 

ইসলাম জ্ঞানান্বেষণের জন্য নারীদের মনে অত্যন্ত গভীর আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল।

 

তাদের এই জ্ঞান-পিপাসা নিবারণের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণ ব্যবস্থা ছাড়াও মাঝে মধ্যে তাদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ করে দিতেন।

 

আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে,

 

 ‘‘মহিলারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললো, আপনার কাছে পুরুষরা এত ভিড় লাগিয়ে থাকে যে,

 

অনেক সময় আমাদের পক্ষে আপনার কথা শুনা সম্ভবই হয় না। অতএব আমাদের জন্য আপনি আলাদা একটি দিন ধার্য করে দিন।

 

একথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিলেন।

 

সেই দিন তিনি তাদের কাছে গিয়ে উপদেশ দিতেন এবং সৎকাজের নির্দেশ দান করতেন।''[15]

 

মালিক ইবনে হুয়াইরিস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা কয়েকজন যুবক দীন সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বিশ দিন পর্যন্ত অবস্থান করলাম।

 

যখন তিনি বুঝতে পারলেন যে, আমরা বাড়ি ফেরার জন্য অস্থির হয়ে পড়েছি, তখন তিনি বললেনঃ‘‘তোমরা তোমাদের স্ত্রী-পুত্রের কাছে ফিরে যাও এবং তাদের কাছেই অবস্থান কর।

 

তাদেরকে দীন সম্পর্কে শিক্ষা দাও এবং তা মেনে চলার নির্দেশ দাও।''[16]

 

 রেফারেন্স সমূহ।

 

[1] প্রাগুক্ত, পৃ. ২৬। [2] ড. মোঃ আজহার আলী, পূর্বোক্ত, পৃ. ২৬। [3] শারহুস সুন্নাহ, হাদীস নং ৩৪৫৭। [4]

আবু আব্দুল্লাহ্ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল, কিতাবুল , পূর্বোক্ত, পৃ. ২০। [5] মুহাম্মদ আব্দুর রহীম, নারী, (ঢাকা, সিন্দাবাদ প্রকাশনী, ২য় সংস্কার ১৯৮৮), পৃ. ৫০-৫১। [6]

 

প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৩। [7] সূরা আলে ইমরান : ৭। [8] ইউ.এ.বি. রাজিয়া আক্তার বানু, সংবিধান ও ধর্মে বাংলাদেশে মুসলিম নারীর অধিকার ও মর্যাদা : একটি পর্যালোচনা,

 

ঢাকা, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইট পত্রিকা, দ্বাদশ খণ্ড, ২য় সংখ্যা, ডিসেম্বর ১৯৯৪, পৃ. ৫৮। [9] আল্-কুরআন, সূরা আহযাব : ৩৪। [10]

 

মুসলিম, সহীহ্ মুসলিম, ১ম খণ্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৬১। [11] ইবন আবদি রাব্বিহি, আল্-ইকদুল ফরীদ, ১ম খণ্ড, কায়রোঃ মাতবাআতু লাজনাতিত্ তা'লীক, ১৯৬৫, পৃ.  সমাপ্ত…. পূর্বের অংশ পড়ুন 👉নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি ও যুগে যুগে নারী শিক্ষার স্বরূপ বিশ্লেষণ প্রথম অংশ

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি ও যুগে যুগে নারী শিক্ষার স্বরূপ বিশ্লেষণ

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)  নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি ও যুগে যুগে নারী শিক্ষার স্বরূপ বিশ্লেষণ     …

Powered by

Hosted By ShareWebHost