(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
হযরত উকবা ইবনে আমের (রা.) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাথে যুহফা ও আবওয়ার মধ্যবর্তী এলাকায় চলছিলাম।
এমন সময় আমাদেরকে প্রবল ঝড় ও ঘোর অন্ধকারে ঢেকে ফেলে।
তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) সূরা কুল-আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব ও সূরা কুল-আউযু বিরাব্বিন্নাস দ্বারা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন।
আর বললেন, হে উকবা! এগুলো দ্বারা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর। কেননা, এগুলোর ন্যায় কোন সূরা দ্বারা, কোন প্রার্থনাকারী আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারে না।
অর্থাৎ এই দুই সূরা আশ্রয় প্রার্থনা করার জন্য সব থেকে উত্তম সূরা।
(আবু দাউদ)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে খুবাইব (রা.) বলেন, একবার আমরা ঝড় বৃষ্টি ও ঘোর অন্ধকারময় এক রাতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর তালাশে বাহির হলাম এবং তাকে পেলাম।
তখন তিনি বললেন, পড়। আমি বললাম, কী পড়বো? তিনি বললেন, তিনবার পড়- “কুল-হুয়াল্লাহু আহাদ, কুল-আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব ও কুল- আউযু বিরাব্বিন্নাস”
এটা প্রত্যেক বস্তুর (বিপদাপদের) মোকাবেলায় জন্য যথেষ্ট হবে।
(তিরমিযী, আবু দাঊদ ও নাসাঈ)
হযরত উকবা ইবনে আমের (রা.) বলেন, একবার আমি বললাম- ইয়া রাসূলুল্লাহ! (বিপদ হতে রক্ষার ব্যাপারে) আমি কি সূরা হুদ পড়ব?
না সূরা ইউসুফ? তিনি বললেন, এ ব্যাপারে সূরা “কুল-আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব” অপেক্ষা আল্লাহর নিকট উত্তম কোন সূরা, তুমি কখনো পড়তে পারবে না।
(আহমদ, নাসাঈ ও দারেমী)
হুজুর সা. প্রত্যেক রাতে প্রথমে নিজের শরীর ফু দিতেন অত:পর সূরা এখলাস, সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস পাঠ করতেন:
হযরত আয়শা (রা.) হতে বর্ণিত আছে নবী কারীম (সা.) যখন প্রত্যেক রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন, দুই হাতের তালু একত্র করে ফু দিতেন।
অত:পর তাতে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস পড়তেন। তৎপর দুই হাতের তালু দ্বারা আপন শরীরে যা সম্ভবপর হত মুছে ফেলতেন।
আরম্ভ করতেন মাথা ও চেহারা এবং শরীরে সম্মুখভাগ থেকে। এইরূপ তিনি তিনবার করতেন।
(মোত্তা:)
ব্যাখ্যা:
এই হাদীস থেকে বুঝা গেল যে, হুজুর (সা.) প্রথমে দুই হাতের তালু একত্র করে ফু দিতেন, অত:পর তাতে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস পাঠ করতেন।
সুতরাং কিছু ধর্মজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ বলেছেন যে, নবীজীর এই নিয়মটা জাদুকরদের বিরোধীতা করার জন্য। কেননা তারা প্রথমে পাঠ করে এবং পরে ফু দেয়।
সুরা নাস ও ফালাক্বের আরো কিছু ফজিলত:
হযরত উকবা ইবনে আমের (রা.) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আশ্চর্য! আজ রাতে এমন কতক আয়াত নাজিল হয়েছে,
যা পূর্বে এর অনুরূপ কোন আয়াত দেখা যায়নি। “কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব” ও “কুল আউযু বিরাব্বিন নাস”
(মুসলিম)
ব্যাখ্যা:
বিপদআপদ হতে আল্লাহর স্মরণ হওয়ার পক্ষে এই সূরাগুলির অপেক্ষা উত্তম সূরা আর নেই।
আহ! আজ আমরা কোথায় আছি! আজ আমাদের এ পরিণামের জন্য কি আমাদের এ অবেহেলাই দায়ী নয়?
আল্লামা ইকবালের ভাষায়:
“তারা ছিল বিশ্বে সেরা হয়ে মুসলমান,
তোমরা হলে বিড়ম্বিত ছেড়ে দিয়ে, আল কোরআন ”
(সূত্র: কোরআনের মহিমা-১২৬,১২৭)