(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
কাফেররা বিভিন্ন সময়ে রাসুলকে সা. বিভিন্ন দোষারোপ পুর্ণ নাম দ্বারা সম্বোধন করত। অপরদিকে আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের এই দোষারোপের জবাব দিতেন।
সূরা কালামে রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি কাফেরদের দোষের জবাব দেয়া হয়েছে। পূর্ণ বুদ্ধিমান, পূর্ণ জ্ঞানী ও সর্বগুনে গুণান্বিত রাসূলকে (নাউজুবিল্লাহ) তারা উন্মাদ ও পাগল বলতো। এর কয়েকটি কারণ হতে পারে।
যেমন:- ফেরেশতার মাধ্যমে অবতীর্ণ ওহী অবর্তীণের সময়ে তার প্রতিক্রিয়া রাসূলের সা. পবিত্র অঙ্গে ফুটে উঠত, এরপর তিনি ওহী থেকে প্রাপ্ত আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনাতেন।
যা কাফেরদের জ্ঞান ও অনুভূতির উর্ধ্বে ছিল তাই তারা তাকে পাগলামি আখ্যা দিত। আর একটি কারণ এই ছিল যে, তিনি স্বজাতি ও সারা বিশ্বে বিদ্যমান ধর্মীয় বিশ্বাসের বিপরীতে এই দাবি করেন যে, আরাধনার যোগ্য আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ নেই।
তারা স্বহস্তে নির্মিত যেসব প্রতিমাকে খোদা মনে করত সেগুলো যে জ্ঞান ও চেতনা থেকে মুক্ত এবং কারো উপকার বা ক্ষতি করতে অক্ষম এ কথা তিনি প্রকাশ্যে বর্ণনা করেন। এই নতুন ধর্ম বিশ্বাসে রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো সাথী ছিল না, তিনি একাই এই দাবি করে আত্মরক্ষার বাহ্যিক সরঞ্জাম ছাড়াই সারা বিশ্বের মোকাবেলায় দাঁড়িয়ে যান।
বাহ্যদর্শীদের দৃষ্টিতে এই উদ্দেশ্য সাফল্য লাভ করার কোন সম্ভাবনা ছিল না। তাই এরূপ দাবি নিয়ে দণ্ডায়মান হওয়াকে পাগলামি মনে করা হয়েছে। এছাড়াও দোষারোপের উদ্দেশ্যেও দোষারোপ করতে পারে।
এমতাবস্থায় কোনো কারণ ছাড়াই কাফেররা রাসূলকে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাগল বলতো। সূরা কলাম এর প্রথম আয়াতে আল্লাহ তাদের এই ভ্রান্ত ধারণা শপথ সহকারে খন্ডন করেন।
তারা বলতো হে ওই ব্যক্তি! যার প্রতি কুরআন নাযিল হয়েছে, তুমি তো একটা পাগল। (সূরা হিজর আয়াত ৬) আল্লাহ তায়ালা তাদের এই ভ্রান্তধারণাকে খন্ড করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:- শপথ-কলামের এবং সেই বিষয়ের যা-তারা লিপিবদ্ধ করে, আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহে আপনি উন্মাদ নন।
আয়াতে কলম এবং কলম দ্বারা যা কিছু লেখা হয় তার শপথ করে আল্লাহ তা'আলা কাফেরদের দোষারূপ খন্ডন করে বলেন:- আপনি আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহ ও কৃপায় কখনো পাগল নন। এখানে আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ ও কৃপার কথা উল্লেখ করে দাবির স্বপক্ষে দলিলও দিয়েছেন যে, যার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও কৃপা থাকে সে কিরূপে পাগল হতে পারে?
তাকে যে পাগল বলে সে নিজেই পাগল। আলেমগণ বলেন কুরআনে পাকে আল্লাহ তা'আলা যে বস্তুর শপথ করেন তা শপথের বিষয়বস্তুর পক্ষে প্রমাণ হয়ে থাকে। এখানে বিশ্ব ইতিহাসে যা কিছু লেখা হয়েছে এবং লিখা হচ্ছে তাকে সাক্ষ্য-প্রমাণ রূপে উপস্থিত করা হয়েছে।
বলা হয়েছে:- বিশ্ব ইতিহাসের পাতা খোলে দেখুন এমন মহান চরিত্র ও কর্মের অধিকারী ব্যক্তি পাগল হতে পারে? এরূপ ব্যক্তি তো অপরের জ্ঞান বুদ্ধির সংস্কারক হয়ে থাকে।
অতঃপর উপরোক্ত বিষয়বস্তুর সমর্থনে বলা হয়েছে:- আপনার জন্য অশেষ পুরস্কার রয়েছে! উদ্দেশ্য এই যে আপনার যে কাজকে তারা পাগলামি বলছে সেটা আল্লাহ তাআলার সর্বাধিক প্রিয় কাজ, এর জন্য আপনাকে পুরস্কৃত করা হবে। এমন পুরস্কার যা কখনো নিঃশেষ হবে না, চিরন্তন।