Breaking News
Home / ইসলাম ধর্ম / দ্বীন শিক্ষার গুরুত্বঃ আল্লামা মনজুর নোমানী

দ্বীন শিক্ষার গুরুত্বঃ আল্লামা মনজুর নোমানী

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)

দ্বীন শেখার গুরুত্ব

দ্বীন শেখার গুরুত্ব ও ফজীলত-মনযূর নোমানী (রহঃ)

━━━━━ • ✿ • ━━━━━

 

হে আমার দ্বীনি ভাই!

এটা ঠিক যে, সাইয়েদ হওয়ার জন্য সাইয়েদ বংশে নেওয়া (এবং বাঙ্গালী হওয়ার জন্য বাংলা ভাষায় বলাই) যথেষ্ট।

 

কিন্তু কেউ যদি দাবী করে, আমি অমুক ভাষায় কথা বলি, অমুক বংশে জন্ম আমার, সুতরাং আমি মুসলমান,

 

মুসলমান হওয়ার জন্য আমাকে এর বেশি কিছু করতে হবে না; তবে তার এ-দাবী আপনিও মেনে নেবেন না।

 

কারণ আপনি জানেন, ইসলাম ভাষা ভিত্তিক জাতি কিংবা বংশীয় কোনো জ্ঞাতি-গোষ্ঠীর নাম নয়,

 

ইসলাম এমন এক পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের নাম, যা আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে বিশ্বীর কল্যাণে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে এসেছেনএবং

 

ও হাদীসে যার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

 

অতএব যে কোনো ভাষার যে কোনো গোত্রের এবং যে কোনো অঞ্চলের যে কেউ দ্বীন শিখবে এবং তদনুযায়ী জীবন যাপন করবে,

 

সে-ই প্রকৃত মুসলমানরূপে পরিগণিত হবে। আর যে এই দ্বীন শিখবে না, দ্বীনের উপর আমল করবে না, সে প্রকৃত মুসলমান হিসাবে গণ্য হবে না।

 

বোঝাগেলো, প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য দুটি বিষয় জরুরি:

এক. ইসলামী জীবন যাপনের জ্ঞান অর্জন করা, অন্তত এর মৌলিক ও বুনিয়াদি বিষয়গুলো শিখে নেয়া।

 

দুই. ব্যবহারিক জীবনে সে বিষয়গুলো মেনে চলা। ইসলাম গ্রহণ করা এবং মুসলমান হওয়ার এটাই প্রকৃত অর্থ।

 

 

সুতরাং দ্বীনের জরুরি বিষয়ের ইলম হাসিল করা মুসলমান হওয়ার প্রথম শর্ত। হাদীস শরীফে এসেছে,

 

طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ. (قَالَ الْمزي: هَذَا الحَدِيث روى من طَرق تبلغ رُتْبَة الْحسن. كما في مصباح الزجاجة للسيوطي)

 

ইলম অর্জনের চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ। সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২২৪

 

এক্ষেত্রে মনে রাখার বিষয় হলো, সমস্ত ফরজ বিষয় ইবাদতূল্য। সুতরাং দ্বীনের ফরজ বিষয়গুলো শেখা এবং শেখার চেষ্টা করা একটি ইবাদত।

 

আল্লাহ তাআলার দরবারে এর অনেক মূল্য। নবীজী এ বিষয়ে বহু ফজীলত বয়ান করেছেন। এক হাদীসে এসেছে,

 

مَنْ خَرَجَ فِي طَلَبِ العِلْمِ فَهُوَ فِي سَبِيلِ اللهِ حَتَّى يَرْجِعَ.

 

যে ব্যক্তি দ্বীন শেখার জন্য ঘর ছেড়ে বের হবে, সে ফিরে আসা পর্যন্ত রাস্তায় থাকবে। সুনানে তিরমিযি, (হাদীস নং ২৬৪৭)অন্য এক হাদীসে এসেছে,

 

مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا، سَهَّلَ اللهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ

 

যে ব্যক্তি দ্বীন শেখার জন্য কোনো রাস্তায় চলবে আল্লাহ তাআলা এর উসিলায় তার জন্য জান্নাত-মুখী একটি পথ সহজ করে দেবেন।

 

সহীহ মুসলিম,( হাদীস নং ২৬৯৯)আরেক হাদীসে ইরশাদ হয়েছে,

 

مَنْ طَلَبَ العِلْمَ كَانَ كَفَّارَةً لِمَا مَضَى (هَذَا حَدِيثٌ ضَعِيفُ الإِسْنَادِ)

 

যে ব্যক্তি ইলম হাসিলের চেষ্টা করবে, আল্লাহ তাআলা তার পিছনের গুনাহগুলো মাফ করে দিবেন। সুনানে তিরমিযি, (হাদীস নং ২৬৪৮ )

 

মোটকথা দ্বীন শেখা, ইসলামের জরুরি বিষয়গুলোর জ্ঞান অর্জন করা -পুরুষ, ধনী-গরীব, শিক্ষিত-মূর্খ, জোয়ান-বৃদ্ধ সকলের উপর সমান ফরজ।

নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি ও যুগে যুগে নারী শিক্ষার স্বরূপ বিশ্লেষণ,

 

আর উল্লিখিত হাদীসগুলো থেকে আমরা জানতে পেরেছি, ইলম শেখার পেছনে মেহনত ও সময় করার বিনিময়ে,

 

আল্লাহ পাকের দরবারে আমরা বিরাট নেকি ও সওয়াব লাভ করবো ইনশাআল্লাহ।

 

সুতরাং দ্বীনের জরুরি বিষয়গুলোর ইলম হাসিলের সংকল্প করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।

বয়স ও ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত ছাত্র হয়ে যাদের দ্বীন শেখার সুযোগ নেই,

 

শিক্ষিত হয়ে থাকলে তাদের জন্য সহজ উপায় হলো, কোনো হক্কানী আলিমের পরামর্শ নিয়ে কিতাবপত্র পাঠ করা,

 

আর অক্ষরজ্ঞান না থাকলে অন্যের মাধ্যমে পড়িয়ে শোনার ব্যবস্থা করা।

 

মসজিদে, বাসা-বাড়িতে দ্বীনি কিতাব পড়ার এবং শোনার রেওয়াজ চালু করা। তাহলে সকল শ্রেণীর মানুষের মাঝে ধর্মীয় জ্ঞান ব্যপা লাভ করবে।

 

 

এই লক্ষ্য সামনে রেখে বক্ষমান কিতাবখানি তৈরি করা হয়েছে। তাতে দ্বীনের প্রায় সকল জরুরি বিষয় সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

নবীজীর যে সকল হেদায়েত সম্পর্কে প্রত্যেক মুসলমানের অবগতি থাকা অত্যাবশ্যক, সেগুলো অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

 

আসুন, আমরা নিজেরা দ্বীনের কথা শিখি, অপরকে শেখাই। দ্বীনী কথার প্রচার ও প্রসারকে জীবনের লক্ষ্য বানাই। হাদীস শরীফে এসেছে,

 

مَنْ جَاءَهُ الْمَوْتُ وَهُوَ يَطْلُبُ الْعِلْمَ لِيُحْيِيَ بِهِ الْإِسْلَامَ فَبَيْنَهُ وَبَيْنَ الْأَنْبِيَاءِ فِي الْجَنَّةِ دَرَجَةٌ وَاحِدَةٌ. وَفِي إِسْنَادِهِ

 

اضْطِرَابٌ …وَالْفَضَائِلُ تُرْوَى عَنْ كُلِّ أَحَدٍ، وَالْحُجَّةُ مِنْ جِهَةِ الْإِسْنَادِ إِنَّمَا تُتَقَصَّى فِي الْأَحْكَامِ وَفِي الْحَلَالِ وَالْحَرَامِ :جامع بيان العلم وفضله.

 

যে ব্যক্তি দ্বীন যিন্দা করার নিয়তে (অর্থাৎ অন্যের মাঝে দ্বীন ছড়ানো এবং অন্যকে আমল করানোর ্দেশ্যে) ইলম শিখবে,

ইলমের সম্মান দানে পরকালীন নাজাত

 

আর এ অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে, জান্নাতে সে নবীগণের এত নিকটে থাকবে যে, তার ও নবীগণের মাঝে একটি মাত্র স্তরের পার্থক্য থাকবে। -জামিউ বায়ানিল ইলম, ১/২০৭

 

 

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দ্বীন শিখে অপরকে শেখানোর, এবং নিজে দ্বীনের উপর চলে অপরকে চালানোর তাওফীক দান করুন। আমীন।

আরো জানুন👇

সফলতার স্বপ্ন দ্রষ্টা প্রশংসার যোগ্যঃ হাতিম আল- ফেরদৌসী,বদলে দাও জীবন দীপ্ত প্রত্যয়েইচ্ছা থাকলে উপায় হয়

 

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

অধিক হারে ইস্তেগফারের ফজিলত

ইস্তেগফারের ফজিলত

হামদ ও সালাতের পর… রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যত ভালো কাজ শিক্ষা দিয়েছেন, তাতে …

Powered by

Hosted By ShareWebHost