(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
بسم الله الرحمن الرحيم
তুমি স্বপ্ন দেখ, জীবনকে গড়বে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আলোয়,
সফলতার দীপ্ত প্রভায়, সার্থকতার মুগ্ধকর সৌরভে। স্বপ্ন জাগে, তুমি হবে যুগের সুপার হিরো- শ্রেষ্ঠ পয়লওয়ান।
তুমি দেখতে চাও নিজেকে এদের সারিতে, যারা জগৎ কাঁপিয়েছেন বার বার।
দূর করেছেন জগতের আধাঁর,আর বইয়েছেন আলোর ধারা। কিন্তু কখনো কখনো মন তোমার ব্যকুল হয়েপড়ে,
ভেঙ্গে যায় সপ্নের সৌধ। নিমেষেই সকল আশা ধুলোয় মিশে পড়ে। আর তার পেছনে কাজ করে বিভিন্ন দুর্বলতা।
হয়ত তুমি কাপুরুষদের মনভাঙ্গানো কথায় কান দিয়েছো। তারা তোমার সামনে এমন বুলি আওড়িয়েছে,
এতে তোমার মনের স্বপ্নগুলো দুর্বল প্রাচীরের ইটের মতো ধসতে শুরু করেছে।
তুমি সফলতার সাধক। সাধনা করে সফলতা অর্জন তোমার কাজ।কাপুরুষরা এসে তোমাকে বললো,_ “কেন এত মেহনত?
দেখা যাবে কি বনে যাও!” এই তো হলো। এবার তোমার মন দুর্বল হতে শুরু করলো।
জেনে রাখো, এরূপ বেহুদা কথায় দুর্বল হয়ে পড়ো না। যারাই জগতে সাধনার পথ ধরেছেন, সকলেই অকর্মণ্য আর কাপুরুষদের দ্বারা নিন্দিত ও তিরস্কৃত হয়েছেন।
তার পরও উনারা সফলতার সৌধে অটল থেকেছেন। কারণ, তাদের অভ্যাস, কারো কোন তিরস্কারে কান না দেওয়া।
তোমাকেও এরূপ হতে হবে, তাহলেই তুমি সার্থক হবে। অভাবের তাড়নাও অনেক সময় তোমার মনে দুর্বলতা এনে দেয়।
শুনো, অভাবকে তুচ্ছ করে সাধ্যানুযায়ী এগুতে থাকো, দেখবে একদিন তুমার দারিদ্রতার উঠোনে প্রাচুর্যতা এসে ডানা মেলবে।
শুধু প্রয়োজন হিম্মতের। দৃঢ় মনোবল আর সৎ সাহস তুমি বুকে রেখো আর সামনে এগুতে পথ খুঁজো।
সকল সফলতা এদিকেই আসবে। মন দুর্বল হওয়ার অপর একটি কারণ আছে,__ তুমি অনেক সময় ভাবতে পারো, এ কাজ আমি কি করে করবো?
আমি কি পারবো করতে ? অধ্যবসায় আর সাধনার জগতে কিছুদূর এগিয়ে গিয়েছিলে কিন্তু এরূপ দুর্বলতা তোমাকে টেনে নামাতে শুরু করছে।
হে সফলতার স্বপ্ন দ্রষ্টা, তুমাকে একটি গল্প শুনাই। গল্পটি বাজপখিকে নিয়ে।__ ” শুনেছি, বাজ নাকি প্রায় ৭০ বছর জীবিত থাকে।
অথচ ৪০ আসতেই তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধাত নিতে হয়। এই সময়ে তার শরীরের ৩ টি প্রধান অঙ্গ দুর্বল হয়ে পড়ে।
১/পায়ের নখ
২/ঠোঁট
৩/ ডানা
ফলে শিকার খুঁজা, ধরা ও খাওয়া ৩ টি কাজই তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
এ পরিস্থিতিতে তিনটি পথ খোলা থাকে,__ ১/ আত্মহত্যা ২/ শকুনের মতো মৃত খাওয়া ৩/ নিজেকে নতুন করে তৈরী করা।
পরিস্থিতির মুকাবেলায় বাজপাখি তখন একটি উঁচু পাহাড়ে বাসা বাঁধে আর শুরু করে বাঁচার প্রচেষ্টা।
সে প্রথমে পাথরে ঠুকর মারতে মারতে তার ঠুঁট ভেঙ্গে ফেলে। এভাবে কঠিন পাথরের উপর পায়ের ছোবল বসাতে বসাতে নখগুলো উপড়ে ফেলে।
তারপর অপেক্ষায় থাকে নতুন ঠোঁট ও নখ গজানোর। নখ ও ঠোঁট গজালে বাজপাখি এবার নিজের ডানার সমস্ত পালক ছিড়ে ফেলে।
প্রচন্ড কষ্ট সয্য করতে করতে সে অপেক্ষায় থাকে নতুন পালকের।
সব মিলে ১৫০ দিনের কঠিন পরীক্ষার পর বাজপখি ফিরে পায় তার নতুন জীবন। হয়ে উঠে আগের চাইতেও ক্ষিপ্র ও চৌকশ।”
ও হে, দেখলি তো বাজের অধ্যবসায়? বাজের সাধনা থেকে শিখে নাও সাধনার সূত্র।
এগিয়ে চলো দৃঢ় প্রত্যয়ে। মনকে সবল রাখো।গোলাপের সুঘ্রাণ নিতে তুমি যদি কাঁটাকে ভয় করো তাহলে কি কখনো সুগন্ধি পাবে?
কাঁটাকে জয় করেই তোমাকে গোলাপ আনতে হবে অতঃপর লাভ করবে সুঘ্রাণ।
তুমি কিছু হতে চাও? তবে জেনে রাখো, মেহনত তুমাকে করতেই হবে।
দেখো, মেহেদি যদি না পিষে শুধু হাতে রেখে বসে থাক তবে সে মেহেদি তোমাকে কিছুই উপহার দিতে পারবে না।
মেহেদি অন্যকে রঙ্গের শোভা দান করার আগে নিজে কষ্ট স্বীকার করে প্রথমে উপযুক্ত হয়,
তারপর অন্যকে উপহার দান করে সৌন্দর্য। তুমিও নিজেকে সকল কষ্ট
এবং বাঁধার যাতনায় অকাতরে নিয়োজিত কর তাহলে দেখবে তুমিও রাঙ্গিয়ে দিবে ভুবন,
উপহার দিবে মানুষকে কল্যাণের ভূষণ, আর জগৎকে হাসাবে সফলতার ছলে।
লেখকঃ