Breaking News
Home / বিশ্লেষণ ও গবেষণামূলক / সফলতার স্বপ্ন দ্রষ্টা প্রশংসার যোগ্যঃ হাতিম আল- ফেরদৌসী

সফলতার স্বপ্ন দ্রষ্টা প্রশংসার যোগ্যঃ হাতিম আল- ফেরদৌসী

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)

সফলতার স্বপ্ন দ্রষ্টা প্রশংসার যোগ্য

بسم الله الرحمن الرحيم

নুষ মনে মনে কত কিছুর স্বপ্ন বুনে। কেউ স্বপ্ন বুনে এবারেস্ট জয় করার, কেউ স্বপ্ন বুনে একজন ভালো পাইলট হওয়ার,

কেউ বা আবার স্বপ্ন দেখে নিজেকে ের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে দেখার, আরো কত কি।

সবার স্বপ্ন কিন্তু বাস্তবায়িত হয় না। স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক বা না-ই হোক, সফলতার স্বপ্নদ্রষ্টা সব সময়ই প্রশংসার যোগ্য।

কারণ, কেউ কোন ভালো কর্ম-গুণ অর্জনের স্বপ্ন দেখলো মানে নিজের জীবনের লক্ষ্য স্থির করলো।

জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে যে অগ্রসর হয় সে অভিজ্ঞদের দৃষ্টিতে বুদ্ধিমান আর বোকাদের কাছে হাসির

আপনি দেখবেন , লক্ষ টাকার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে ে নামে, এত টাকা অর্জন না হলেও কমপক্ষে তাকে অন্যের কাছে হাত পাততে হয় না।

কিন্তু যে অলস , একেবারে হাত-পা গুটিয়ে নিরুদ্দেশ বসে থাকে একপর্যায়ে তাকে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে পথে পথে ফিরতে হয়।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছাড়া যে মানুষ , তাকে আপনি অপদার্থ বলতে পারেন।

সফলতা তার ভাগ্যে নেই। একান্ত যদি সে কোনো ক্ষেত্রে সফল হয়েও যায় , তবে বুঝতে হবে, গোবরে পদ্ম ফুটেছে।

ভাগ্য এসে নিজের খরচে দেখা দিয়েছে । এতে তার কোনো ভূমিকা নেই।

সফলতা অর্জনে তার যখন কোনো ভূমিকা থাকলো না তখন সুস্থ বিবেক ওর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে পারে না।

লক্ষ্য নির্ধারণকারী বা স্বপ্বদ্রষ্টা সবসময় আপন উদ্দেশ্যের দিকে অগ্রসর হতে প্রচেষ্টায় থাকেন,

ফলে সফলতার সবটুকু না পেলেও কিছু না কিছু পাবেনই।

আর লক্ষ্যহীন যে মানুষ, সে সফলতার ধারে কাছেও যেতে পারে না বিধায় তার জীবনে চলে আসে দুর্যোগ আর হতাশা।

২০১৩ সালে লেখা আমার কবিতা, ” অচেনা ঘাটের মাঝি”। এই কবিতার শেষের দুটি লাইনে অভিজ্ঞতার আলো ফেলেছি। সেখানে আছে, __

“দিক বিনা যে অবুঝ মাঝি ছুটে যায় নিরুদ্দেশ
অশান্ত ঢেউয়ের ছুটে তার জীবনি হয় শেষ”।

অর্থাৎ , বিশাল সমুদ্রের মধ্যে যখন একজন মাঝি কোন উদ্দেশ্য বা দিক নির্ধারণ করা ছাড়াই ঠা মারতেই থাকে

তাহলে একথা বাস্তব যে ঐ মাঝি কোনো সময়ই সমুদ্রতীর দেখতে পাবে না।

কারণ, উদ্দেশ্যহীন বইঠা নৌকা একবার ডানে একবার বাঁয়ে একবার সামনে একবার পিছনে

এভাবে এদিক সেদিক করে সময় নষ্ট করলো ফলে কিে পৌঁছার আশাই রইলো না।

আর যদি দিক নির্ধারণ করে মাঝি তার উদ্দেশ্যের দিকে যাত্রা শুরু করে তবে আশা করা যায় একবার না একবার সে কিনারে পৌঁছবে ,

অথবা লোকালয় তার দৃষ্টিগোচর হবে । জীবনকে সফল করতে হলে আগে নিজের লক্ষ্য ঠিক রাখোন অন্যথায় কামিয়াব হবে না।

শুধু লক্ষ্য ঠিক করাই যথেষ্ট নয় বরং সে অনুসারে মেহনতও চালাতে হবে পুরোপুরি। অনেক আছে ,

তাকে তার জীবনের লক্ষ্য জিজ্ঞেস করলে সে শিশুর অক্ষর শিখার মতো উদ্দেশ্য বলে যায়।

আমরা দেখি ছোট্ট শিশুকে স্বর বর্ণ জিজ্ঞেস করলে মুহূর্তেই বলে ফেলে।

কিন্তু আপনি যখন “ই”- তে আঙ্গুল রেখে জিজ্ঞেস করবে , এটা কোন অক্ষর ? তখন সে বলবে, “ক” অথবা অন্য কিছু।

এমনটি হওয়ার কারণ হলো , শিশুটি অক্ষরগুলো বুঝে-চিনে শিখেনি।

এভাবে আপনিও যদি আপনার উদ্দেশ্য মুখে মুখস্থ করে নেন আর এর না বুঝে বসে থাকেন

তবে উদ্দেশ্য কোনো দিন সফল হবে না। নির্বোধ-অলস যারা , কাপুরুষ-ভীতু যারা

তারা তো জীবনের লক্ষ্যের কথা ভাবেই না , বরং কেউ যদি তার উদ্দেশ্যের কথা প্রকাশ করে ফেলে

তাহলে ওরা ব্যঙ্গার্থক হাসিতে ফেটে পড়ে। নানা ভাবে বক্রোক্তি করে।

এতে মন দুর্বল হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি মন দুর্বল করার আগে একথা ভেবে নিন, লক্ষ্য ঠিক করে চলা জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানের কাজ,

আর লক্ষ্যহীন চলা বেকুব ও নির্বোধের কাজ।

অতএব, বেকুব যখন আপনার উদ্দেশ্য জেনে হাসলো , তো বেকুবের এ হাসির কি আর মূল্য হতে পারে ?

আপনার মন দুর্বল করার কারণ নেই বরং সতেজ মনে এগিয়ে চলুন।

জেনে রাখবেন , পাকের সকল সৃষ্টিই অপূর্ণ সত্তা, পূর্ণ সত্তা হলেন একমাত্র আল্লাহ ।

সকল গুণে পরিপূর্ণ একমাত্র তিনিই । মাখলুক বা সৃষ্টি কখনো পরিপূর্ণ নয়।

একারণে কোন মানুষ যদি তার পুরো জীবনই সফলতার সাধনা করে তবুও সে সার্বিক দিক দিয়ে কোনদিন সফলতার চরম শিখরে পৌঁছতে পারবে না।

তারপরও আমরা সফলতার সাধকদের সফল ব্যক্তি হিসেবে দেখি।

এটা ওই অর্থে যে , উনি সফলতার পথে হেঁটেছেন এবং কমবেশি অর্জনও করেছেন।

দৃষ্টান্ত দেখুন, বর্তমান যামানায় আল্লামা তাকি উসমানী দাঃ বাঃ কে ফিকাহ শাস্ত্রে আমরা শ্রেষ্ঠ বলতে পারি ,

কিন্তু কামিল বা পরিপূর্ণ বলতে পারি না। এর কারণ বের হয়ে যাবে যদি উনাকে আমরা ইমাম আ'জম আবু হানিফা (রহ.)-র সাথে তুলনা করি।

আবু হানিফা (রহ.) যে মানের এবং যে মাকামের ফক্বীহ ছিলেন তাক্বী উসমানী দাঃ বাঃ

সে মানের হতে হলে আরো অনেক ের প্রয়োজন।

সুতরাং পূর্ণতার ক্ষেত্রে এখনো তাক্বী উসমানী দাঃ বাঃ এর ইমাম আবু হানিফার তুলনায় অনেক ঘাটতি আছে।

এভাবে ইমাম আ'জম (রহ.)-র বর্ণিত সকল মাসাঈল উলামায়ে কেরামের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়,

বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামের ভিন্ন মত আছে সেগুলো যথাযথ না হওয়ার কারণে।

সুতরাং এক্ষত্রে ইমাম আ'জম (রহ.)-র মধ্যেও এসে দেখা যায় অপূর্ণতা।

এবার বোকাদের কাছে আমার প্রশ্ন, __ আল্লামা তাক্বী উসমানী ইমাম আ'জমের স্থরে না পৌঁছায়

আর ইমাম আ'জমের বর্ণিত সকল মাসাঈল গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তোমরা কি হাসিতে কাদায় লোটে পড়েছো ?

তিরষ্কার আর বক্রোক্তিতে মাতাল হয়ে জলে ডুব দিয়েছো ?

সাবধান! সফলতার পথে যেই হাঁটতে চায় তাকে প্রশংসার দৃষ্টিতে দেখো।

তাকে নিয়ে কখনো বক্রোক্তি করো না। কারণ, সে তোমার চেয়ে অনেকগুণ বেশি ভালো।

তুমি তো সাধনার পথেই নয় , তাহলে কি করে সাধকের বিরুদ্ধে মুখ আওড়াতে যাও!

লক্ষ্য নির্ধারণকারী এক প্রস্ফুটিত ফুলের ন্যায়।

ফুল অনেক সময় বিভিন্ন মুসীবত পেরিয়ে ফল দানের সীমা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না, কিন্তু তার পরও ফুল হিসেবে ফল দানের পূর্বেও সে মূল্যায়নের পাত্র।

আর লক্ষ্যহীন বা নিরুদ্দেশ ব্যক্তি হলো , য় ভেসে আসা আবর্জনার বুঝা ,

যা মানুষের কোন ফায়দায় আসে তো নাই বরং ফসলে লেগে তা বিনাশ করে দেয়।

সুতরাং লক্ষ্যহীন মানুষ লক্ষ্য নির্ধারণকারি মানুষের জন্য এক বুঝা ।

অন্যের ফায়দা তো করেই না বরং লক্ষ্যের দিকে অগ্রগামী মানুষের চাঙ্গা ও দৃঢ় হৃদয়ের ফসলকে বিনষ্ট করে দেয়।

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

হাদিয়া ও ঘুষের মধ্যে পার্থক্য কী?

(Muslimbd24.com) হাদিয়া ও ঘুষ এক নয়, হাদিয়া ও ঘুষের মধ্যে পার্থক্য বিরাট। হাদিয়া বা উপহার …

Powered by

Hosted By ShareWebHost