(মুসলিম বিডি২৪.কম)
بسم الله الرحمن الرحيم
গান-বাদ্য পরিহারের পুরুষ্কার আল্লাহর বন্ধুত্ব
মুসলিমীন হযরত ওমর (রাযি.) এর যুগের কথা এক গায়ক ছিল বারবাত নামক সেকালের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো।
ইসলাম আগমনের পর গান-বাদ্য হারাম হওয়ায় তা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ হয়ে গেল কারণ গান-বাদ্য শোনা কবীরা গুনাহ।
বৃদ্ধ লুকিয়ে লুকিয়ে নিজের সমমনা ও সমরুচি লোকদের কাছে গিয়ে গান করতো এবং দু'মুখো খাবারের ব্যবস্থা করতো।
বৃদ্ধের বয়স যেহেতু বেড়ে গিয়েছিল তাই গলার আওয়াজও বসে গেল কন্ঠে আগের মতো আর্কষণ নেই তাই লোকেরাও তার গান শোনা ছেড়ে দিল।
দিনভর ঘুরে ফিরে এক শ্রোতাও জোটানো মুশকিল হয়ে পড়লো চরম হতাশা নিয়ে একদিন জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে বসে বসে কাঁদতে লাগলো।
আকাশ পানে চেয়ে বলতে লাগলো
হে আল্লাহ! যতক্ষণ আমার কন্ঠ উচ্ছ্বাস ছিল মুগ্ধকরা সুর ছিল সবাই আমার গান শুনতো বাহবা দিত আজ কন্ঠ বসে গেছে সুরে আর্কষণ নেই।
তাই এখন আর কেউ আমার গান শুনে না।আগের মতো কাছে টানে না কিন্তু আমি শুনেছি আপনি বড়ই দয়াবান বড় করুণাময়!
আমার আর্তনাদ তো আপনি শুনতে পাচ্ছেন অনুগ্রহ করে আমার কষ্ট দূর করে দিন মুসলিম জাহানের খলীফা ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাযি.).
তখন ঘরে ঘুমচ্ছিলেন তাঁর ইলহাম -( আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ বার্তা যা মানুষের অন্তরে জেগে উঠে) হলো, আমার এক বান্দা আমাকে ডাকছে।
ওমর যাও সে বিপদগ্রস্ত তাঁকে সাহায্য করো তার কষ্ট দূর করো।হযরত ওমর (রাযি.) ধড়ফড় করে উঠে বিছানা ত্যাগ করে জান্নাতুল বাকীর অভিমুখে ছুটে চললেন।
দেখলেন এক বৃদ্ধ একটি ঝোপের আড়ালে বসে বসে কাঁদছে আর আল্লাহকে নিজের দুর্দশার কথা বলে ভিক্ষা চাইছে।
হযরত ওমরকে (রাযি.) দেখে বৃদ্ধ ভয় পেয়ে পালাতে চাইলেন কিন্তু হযরত ওমর (রাযি.) তাঁকে আশ্বস্ত করে বললেন।
দাড়াও! পালিয়ে যেয়ো না
আমি এখানে নিজে আসিনি আমাকে পাঠানো হয়েছে, আমাকে আদেশ করা হয়েছে, তোমাকে সাহায্য করতে, তোমার কষ্ট ঘুচাতে।
বলো তোমার কি সমস্যা? আমি এখনি তা সমাধানের ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বৃদ্ধ- (সীমাহীন বিস্ময় নিয়ে) – কে পাঠিয়েছে তোমাকে?খলিফা – আল্লাহ পাঠিয়েছেন। বৃদ্ধ- আল্লাহ পাঠিয়েছেন।
একঝাঁক বিস্ময় ঝরে পড়লো তার কন্ঠ থেকে এরপর শুরু হলো অঝোর কান্না জোয়ারের ন্যায় চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগলো।
অনুশোচনার তপ্ত অশ্রু আবেগাপ্লুত হয়ে বলতে লাগলো হায় আল্লাহ! সারাটা জীবনই কাটিয়ে দিলাম তোমার নাফরমানীতে প্রতিটি রাত প্রতিটি দিন কেটেছে।
উদাসীনতায় অবাধ্যতায় তবুও তুমি শাস্তি দাওনি আজ আমি রিক্ত হস্ত আশা ভরসার সব প্রাচীর ভেঙে চুরে মাটির সাথে মিশে গেছে।
সর্বহারা হয়ে যখন তোমার একবার ডাকলাম তাতেই তুমি আমার ডাকে সাড়া দিলে! আমাকে ভর্ৎসনাও করলে না! শাস্তি ও দিলে না!!!
হে আল্লাহ! তুমি এতো দয়ালু আগে কেন বুঝিনি? আয় আল্লাহ!…
এভাবে অনুশোচনার অনেক বিদগ্ধ হয়ে হঠাৎ বিকট এক আর্তচিৎকার দিল সঙ্গে সঙ্গে প্রাণপাখীও ডানা মেলে উড়াল দিলো উর্ধ্বালোকের ঠিকানায়।