(মুসলিম বিডি২৪.কম)
بسم الله الرحمن الرحيم
মায়াবী চেহারাগুলো হবে পোকা-মাকড়ের আহার
স্পেন থেকে কম্বল আনিয়েছে দশ বছরও তা গায়ে ঝরিয়ে ঘুমাতে পারিনি মাটির চাদর গায়ে দিয়ে চিরদিনের জন্য কবরে থাকতে হয়েছে।
আকর্ষনীয় ডিজাইনের পালঙ্ক তৈরি করিয়েছে, কোমল-নরম বিছানা দামি ও সুন্দর আল্পনার চাদর বিছিয়ে শয়ন করছে।
ঘুম থেকে উঠে আর চোখ মেলার সুযোগ পেলো না দামি বিছানা ছেড়ে সোজা মাটির বিছানায় চিরনিদ্রায় শায়িত হতে হয়েছে।
ঘরের ভেতর কী সাজ-শোভা! বড় বড় লাইট দৃষ্টিনন্দন ঝালরবাতি উন্নত পাথর ও টাইলসের গাঁথুনিতে ঘর যেন পুষ্পোদ্যানে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু এই মনোমুগ্ধকর আলোকশোভায় বেশি দিন সুযোগ হয়নি কিছুদিন পরই অন্ধকার কবরের বাসিন্দা হতে হয়েছে।
যারা সব সময় আনন্দ – ফূর্তিতে আসর জমিয়ে রাখতো
বন্ধু – বান্ধব শুভানুধ্যায়ী ও হিতাকাঙ্ক্ষীদের নয়নমনি ছিল আজ আতঙ্ক ও নির্জনতার ঘর অন্ধকার কবরে একাকি শুয়ে আছে।
না আছে কোনো সঙ্গী না আছে হিতাকাঙ্ক্ষী জীবদ্দশায় দেহের ওপর যদি কখনো একটি পিঁপড়াও হাঁটতো তখন তা ঝেড়ে ফেলতো।
অথচ আজ নিথর নিস্তেজ সেই দেহের ওপর লাখ লাখ পোকা-মাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে যে কোমলকান্তি চেহারাকে রোদের উত্তাপ থেকে রক্ষা করা হতো।
শীতের রুক্ষ্ম ঝাপটা থেকে বাঁচানোর জন্য উন্নতমানের ক্রিম-লোশন ব্যবহার করা হতো সেই সখের মুখের কোমলতা ক্ষুধার্ত.
পোকা – মাকড়ের হামলায় ক্ষতবিক্ষত কেউ চোখ খাচ্ছে কেউ চামরা খাচ্ছে কেউ জিহ্বা নিয়ে ব্যস্ত আবার কেউ কান নিয়ে করছে টানাটানি।
সেই পেট যা ভরার জন্য সারা জীবন ঘামঝরা পরিশ্রম করেছে কবরে সর্বপ্রথম সেই পেট ফেটে যায়।
আল্লাহ বলেন হে আমার বান্দা! দুনিয়াীর দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ো না কবরের পোকা-মাকরগুলো সর্বপ্রথম তোমার অঙ্গের ওপর ঝাপিয়ে পড়বে।
তা হবে তোমার চক্ষুদ্বয় মাহফিলে সর্বপ্রথম প্রদীকেই নিভানো হয় আর মানবদেহের প্রদীপ হলো চোখ।
তাই আল্লাহ তায়া'লা সর্বপ্রথম সেই চক্ষুকেই ধ্বংস করে দেন বিষাক্ত পোকা – মাকড়কে তা দিয়ে আহার করান।
সুতরাং যে মানুষের পরিণতি এমন ভয়াবহ মৃত্যু তাকে শিকারী হয়ে খুঁজছে তার চতুর্দিকে বিপদাপদরা ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতে আছে।
পদে পদে অজানা আতঙ্কে যে সব সময় ভীত -সন্ত্রস্ত থাকে দুর্ভাবনার কালো মেঘ কখনো যার দিগন্তে উদিতই হয় না।
আনন্দের আলো বিদ্যুৎ চমকের মতো জ্বলে ওঠে নিভে যায় দুশ্চিন্তার অথৈ সাগরে যে হাবুডুবু খায়। রোগ- ব্যাধি যাকে প্রতিনিয়ত কাবু করে রেখেছে।
বন্ধুদের অকৃজ্ঞতা এবং সন্তান্দের অবাধ্যতা যার হৃদয়কে খানখান করে দিয়েছে। কবর তাঁকে প্রতিদিন আওয়াজ দিয়ে ডাকে
أَنَابَيْتُ الْوَحْشَةَ،أَنَابَيْتً الدُّوْدِ،أَنَابَيْتُ الظُّلْمَةِ
আমি আতঙ্কের ঘর, আমি অন্ধকারের ঘর, আমি পোকা-মাকড়ের ঘড়, আমার কাছে আসতেই হবে। সুতরাং উপযুক্ত সম্বল নিয়ে আমার কাছে আসতে হবে।
আপনি এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের গভীরে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখুন দুনিয়ার জীবনটা কী পরিমাণ ক্ষণস্থায়ী।
কতটা অস্তির ও অকৃতজ্ঞ এখানে মানুষ এক মূহুর্তেও স্বস্তিতে থাকতে পারে না এক মূহুর্তের জন্যও নিরাপত্তা নেই।
একটু আনন্দের ছোঁয়া যদি কেউ পায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তার সাথে যোগ হয় হাজারো দুশ্চিন্তা ও দূর্ভাবনা সুখ আসে আবার চলে যায় স্থায়ী হয় না।
বলুন একে কি জীবন বলা যায়!
ভাইয়েরা আমার! আমরা আপনারা যদি নিজে নিজেই সৃষ্টি হতাম তাহলে যা খুশি তাই করতে পারতাম।
কিন্তু আমরা তো না নিজ ইচ্ছায় ও স্বীয় প্রচেষ্টায় সৃষ্টি হয়েছি না প্রকৃতি আমাদের সৃষ্টি করেছে।
প্রকৃতিবাদী নাস্তিকদের কথা শুনলে বড়ই আশ্চর্য লাগে তাদের বিশ্বাস পৃথিবীর সব কিছু এমনিতেই সৃষ্টি হয়ে গেছে। কি উদ্ভট কথা!
একটি মাটির পাত্র যদি নিজে নিজে সৃষ্টি হতে না পারে তাহলে এত বিশাল পৃথিবী কী করে নিজে নিজে সৃষ্টি হয়ে গেল!
একটি ক্ষুদ্র বৈদ্যুতিক লাইট কারো হস্তক্ষেপ ছাড়া তৈরি হতে পারে না অথচ বিশাল সূর্যটি নিজে নিজে তৈরি হয়ে গেল?
আল্লাহ বলেন-
أَمْ خُلِقُوْامِنْ غَيْرِشَيْءٍ
তারা কি কোনো সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হয়ে গেছে।
أََمْ هُمُ الْخَالِقُوْنَ
না কি তারা নিজেরাই নিজেদের সৃষ্টি করেছে?
أَمْ خَلَقُوْالسَّمَاوَاتِ والْارْضِ
নাকি তারা আসমান যমীন সৃষ্টির দাবি করতে পারে?
بَلْ لَايُوْقِنُوْنَ
আসলে তারা অবিশ্বাসী নাস্তিক কাফের।
সত্য হলো আল্লাহই আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর ক্ষমতার সামনে আমরা বড়ই অসহায় তাঁর সম্মান ও মর্যাদার সামনে আমাদের কোনো মূল্যই নেই।
আপনি আমাকে বলবেন মাওলানা সাহেব এমপি সাহেব ইত্যাদি ইত্যাদি কিন্তু প্রশ্ন হলো যে পদ-পদবি প্রতাপ- প্রতিপত্তিকে.
আমরা সম্মানের মাপকাঠি মনে করি এগুলো আদৌ আল্লাহর নিকটও কী সম্মানের মাপকাঠি? নাকি বিষয়টি অন্যরকম?