(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
ইউরোপের কোন কোন জায়গায় বৎসরে ছয় মাস পর্যন্ত মাত্র আধা ঘন্টা দিন,
আর সাড়ে তেইশ ঘন্টা রাত এবং বাকী ছয় মাস এর বিপরীত অর্থাৎ,
মাত্র আধা ঘন্টা রাত সাড়ে তেইশ ঘন্টা দিন হয়ে থাকে।
এই ভাবে পৃথিবীর যে সকল জায়গায় লম্বা দিবস কিংবা লম্বা রজনী হয়ে থাকে,
ঐ সব এলাকায় নামাজ এবং রোজা আদায় করার নিয়ম হল এই-
যদি চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে সূর্য অস্ত না যায় তাহলে কোন কোন ফিকুহবিদের মতে ওখানকার দিন রাত তা যতই দীর্ঘ হোক না কেন,
এমন কি ছয় মাস দিন আর ছয় মাস রাতও যদি হয় তবুও ঐ এক বৎসরে মূল সময় মাফিক কেবল পাচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হবে।
কিন্তু এ সম্পর্কে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে এই যে, ঐ সব এলাকায় প্রত্যেক ২৪ ঘন্টায় অনুমান করে পাচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে।
অন্যান্য সাধারণ এলাকা সমূহে পাচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যখানে যে পরিমাণ ব্যবধান থাকে এই পরিমাণ সময় ব্যবধান রেখে,
প্রতি ২৪ ঘন্টায় পাচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে।
অর্থাৎ, ফজরের সময় থাকবে এক ঘন্টা ফজরের সময় শেষ হবার ছয় ঘন্টা পর যোহর অত:পর প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা পর আছর।
ফজরের সময় শেষ হওয়া মুহূর্ত থেকে মোট বার ঘণ্টা অতিবাহিত হবার পর মাগরিব এবং এর এক ঘন্টা পর এশা।
অত:পর দশ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে যাবার পর ফজরের নামাজ।
মহানবী (সা:) একবার দাজ্জালের কথা আলোচনা করছিলেন।
পৃথিবীতে দাজ্জাল কতদিন অবস্থান করবে এই মর্মে সাহাবায়ে কিরাম হুজুর (সা:) কে প্রশ্ন করলে তিনি তার জবাবে ইরশাদ করেন:
“চল্লিশ দিন। তন্মধ্যে একদিন হবে এক বৎসরের সমপরিমাণ, একদিন হবে এক মাসের সমপরিমাণ এবং একদিন হবে এক সাপ্তাহের সমপরিমাণ লম্বা।
আর বাকী দিনগুলো থাকবে তোমাদের সাধারণ দিনসমূহের মত।”
এবার সাহাবায়ে কিরাম প্রশ্ন করলেন- ইয়া রাসুলুল্লাহ!
যে দিনটি এক বৎসরের সমান লম্বা হবে সে দিনে কি কেবল একদিনের (পাচ ওয়াক্ত) নামাজ পড়ে নেয়াই যথেষ্ট?
তদুত্তরে মহানবী (সা:) বললেন: যথেষ্ট হবে না। অনুমান করে তোমাদের আদায় করতে হবে। (মুসলিম, তিরিমিযী)
উক্ত হাদীস এবং অন্যান্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে আল্লামা শামী (রহ:) তার বিখ্যাত -ফাতাওয়া গ্রন্থ ‘-ফাতাওয়ায়ে শামী, (১ম খন্ড ৩৬৩-৩৬৫ পৃ:) তে
লম্বা দিন বিশিষ্ট এলাকাসমূহে অনুমান করে নামাজ রোজা আদায় করার মতকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
অথবা ঐ এলাকায় যদি কোন মৌসুমে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাচ ওয়াক্ত নামাজের সুযোগ হয়,
তাহলে সেই মৌসুমের শেষ দিনটিকে মাপকাঠি হিসাবে ধরে নিয়ে সারা বৎসরের নামাজের সময় এর দ্বারা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
আর যদি এই এলাকা এমন হয় যে ওখানে কখনো ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাচ ওয়াক্ত নামাজের সুযোগ আসে না।
তাহলে ঐ এলাকার নিকটে যদি কোন এলাকা এমন থাকে যেখানে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাচ ওয়াক্ত নামাজের সুযোগ হয়ে থাকে,
তাহলে সেই এলাকার সময় হিসাবে নামাজের সময় নির্ধারণ করে নেয়া যেতে পারে।
ফাতাওয়ায়ে শামী-১/৩৬৩-৩৬৫, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-২/৩০,