(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
হাদীস শরীফে আছে, যে ব্যক্তি রমজানের পরে শাওয়াল মাসে ছয়টি (নফল) রোজা রাখল সে যেন সমস্ত বৎসর রোজা রাখল।
কোন কোন আলেমের মতে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা পৃথক পৃথকভাবে রাখবে, ঈদুল ফিতরের সঙ্গে মিলিয়ে রাখবেনা।
কারণ এতে নাসারাদের সঙ্গে সাদৃশ্য হয়ে যায়। তাই মিলিয়ে রাখা মাকরূহ। অবশ্য ফতওয়া হলো, মিলিয়ে রাখা মাকরূহ।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসের অধিকাংশ দিন রোজা রাখতেন।
কোন কোন হাদীসে শাবানের অর্ধমাসের (১৫ দিন) পরে রোজা রাখার নিষেধাজ্ঞা এসেছে, যাতে দুর্বলতার কারণে রমজানের রোজা পালনে অসুবিধা সৃষ্টি না হয়।
নফল রোজা পূর্ণ করা কি ওয়াজিব
নফল রোজা শুরু করলে ওয়াজিব হয়ে যায়। তবে নিষিদ্ধ দিনগুলোতে (দুই ঈদের দুই দিন ও কুরবানির পর তিন দিন) রোজা শুরু করলে তা ওয়াজিব হবেনা।
এ রোজাও বিনা ওজরে ভেঙ্গে ফেলা জায়েয নেই। ওজরবশত : ভঙ্গ করা জায়েজ আছে। আর মেহমান হওয়াও একটি ওজর।
এ ক্ষেত্রে রোজা ভঙ্গে করে পরে ক্বাযা আদায় করা লাগবে না।
কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম
ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও আইয়্যামে তাশরীকের দিনগুলোতে রোজা রাখা হারাম। উক্ত দিনগুলোতে রোজা রাখা শুরু করলে তা ওয়াজিব হবেনা।
তবে যদি কেউ ঐ দিনগুলোর মধ্যে অথবা সমস্ত বৎসর রোজা রাখার মান্নত করে তাহলে ঐ দিনগুলোতে রোজা ছেড়ে দিবে এবং পরে ক্বাযা করবে।
রোজা,রাখলে গোনাহগার হবে এবং ক্বাযা আদায় করতে হবেনা।
রমজানের দিনে সন্তান বালেগ হলে, কাফির মুসলমান হলে, মুসাফির মুকীম হলে ঐ দিনের রোজার কায্বা ওয়াজিব হবে কি না?
রমজান মাসে দিনের বেলায় যদি কোন নাবালেগ বালেগ হয় অথবা কোন কাফের মুসলমান হয় বা ঋতুবতী মহিলা পবিত্রতা লাভ করে,
তবে দিনের বাকী অংশে পানাহার থেকে বিরত থাকা তার উপর ওয়াজিব। আর পানাহার থেকে বিরত থাকুক বা না থাকুক উভয় অবস্থায় মুসাফির,
এবং ঋতুবতী মহিলা ব্যতীত অন্যদের উপর এ দিনের রোজার ক্বাযা ওয়াজিব হবে না।
আশুরার দিন রোজা রাখার ফজিলত কি? আশুরার রোজা রাখার নিয়ম
যদি কেউ আশুরার দিন রোজা রাখে তবে তার অতীতের এক বছরের (সমস্ত) গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।
আশুরার রোজা রাখার ক্ষেত্রে মুস্তাহাব হলো, তার আগে বা পরে আরো একটি রোজা মিলিয়ে রাখা।
শুধু জুমার দিন রোজা রাখা কোন কোন আলেমের মতে মাকরূহ। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা ও মুহাম্মদ (রহ.) এর মতে মাকরূহ নয়।
আরাফার দিনের রোজার ফজিলত ও হুকুম কি
যে ব্যক্তি আরাফার দিনে (৯ই জিলহজ্ব) রোজা রাখে তার আগে- পরের দুবছরের গোনাহ মাফ হয়ে যায়।
সাওমে দাহর তথা সারা বছর রোজা রাখার হুকুম কি?
সাওমে দাহর (অর্থাৎ সারা বছর রোজা রাখা) ও সওমে বেসাল (অর্থাৎ কখনো না ভেঙ্গে একাধারে রোজা রাখা) মাকরূহ।
নফল রোজার মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট রোজা হলো সওমে দাউদ (অর্থাৎ একদিন পর একদিন) রোজা রাখা। তবে শর্ত হলো, সর্বদা এ নিয়ম বজায় রাখার সামর্থ্য থাকতে হবে।
কেননা সর্বদা চালু রাখা যায় এমনভাবে ইবাদত করাই উত্তম, যদিও তা কম হয়।
প্রতি মাসে কতদিন রোজা রাখা সুন্নত
প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখা সুন্নত (যাকে আইয়্যামে বীযের রোজা বলা হয়।) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম,
কখনো কখনো আইয়্যামে বীযের রোজা যথাক্রমে চাদের ১৩, ১৪, ও ১৫ তারিখে রাখতেন।
আবার কখনো মাসের শুরুতেই লাগাতার তিন দিন রাখতেন। কখনো বা মাসের শেষে, কখনো প্রত্যেক চাঁদের ১১ তারিখে একটি করে রোজা রাখতেন।
আবার কখনো সোমবার রোজা রাখতেন, আবার কোন মাসে শনি, রবি, সোমবার ও অন্য মাসে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার এভাবে রোজা রাখতেন।