(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে কিংবা শাবান মাসের ত্রিশ দিন পরিপূর্ণ হয়ে গেলে রোজা ওয়াজিব হয়ে যায়।
আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে রমজানের চাঁদ দেখার ব্যাপারে একজন ন্যায়নিষ্ঠ পুরুষ অথবা মহিলার সাক্ষ্যই যথেষ্ট, সে স্বাধীন হোক বা গোলাম হোক।
উক্ত অবস্থায় শাওয়ালের চাঁদের জন্য দুজন স্বাধীন, ন্যায়নিষ্ঠবান পুরুষ অথবা একজন স্বাধীন পুরুষ ও দুজন মহিলার নিজ মুখের সাক্ষ্য শর্ত।
আর যদি চাঁদ উদয়ের স্থান পরিষ্কার থাকে তাহলে রমজান ও শাওয়াল উভয় মাসের চাঁদ প্রমাণিত হওয়ার জন্য বড় একদল লোকের চাঁদ দেখা ও সাক্ষ্য প্রদান করা আবশ্যক।
একজন বা একাধিক ব্যক্তির সাক্ষ্য সাক্ষেপ রমজান প্রমাণিত হবার মধ্যে পার্থক্য কি
মাত্র একজনের সাক্ষ্য সাক্ষেপ যদি রমজান প্রমাণিত হয়ে থাকে এবং মাসের ত্রিশ দিন অতিবাহিত হয়ে যায়।
তাহলে রোজা ছেড়ে দেওয়া জায়েজ হবে না। আর যদি দুইজনের সাক্ষ্য সাক্ষেপ রমজান প্রমাণিত হয়ে থাকে,
এবং রমজানের ত্রিশদিন অতিবাহিত হয়ে যায়। তাহলে রোজা ছেড়ে দেয়া জায়েজ হবে, যদিও চাঁদ দেখা না যায়।
কেউ রমজান অথবা শাওয়ালের চাঁদ নিজ চোখে দেখুক, কিন্তু কাজী বা মুফতি তার সাক্ষ্য প্রত্যাখ্যান করে দিলেন।
তাহলে এ অবস্থায় তার নিজের উপর রোজা রাখা ওয়াজিব। রোজা ভেঙ্গে ফেললে ক্বাযা ওয়াজিব হবে, কাফফারা দিতে হবে না।
সন্দেহের দিন তথা শাবানের ২৯ তারিখ চাঁদ দেখা না গেলে তবে এর পর দিনের রোজা রাখার হুকুম কি
সন্দেহের দিন তথা শাবানেরচ২৯ তারিখ চাঁদ দেখা না গেলে এবং চাঁদ উদয়ের স্থান পরিষ্কার না থাকলে (পরের দিন) রোজা রাখবে না।
তবে আগে থেকে অভ্যাস থাকলে নফলের নিয়তে রোজা রাখতে পারবে, অন্যথায় পারবে না। ইমাম আযম (রহ.)- এর মতে শুধু মাত্র বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ রোজা রাখবে।
আর সাধারণ লোকেরা দুপুরের পর রোজা ভেঙ্গে ফেলবে (যদি চাঁদ দেখার খবর পাওয়া না যায়)।
এদিনে রমজানের রোজা অথবা অন্য কোন ওয়াজিবের নিয়তে রোজা রাখা মাকরূহ, তেমনিভাবে নিয়তের দ্বিধাদ্বন্দ্বের মাঝে রোজা রাখা মাকরূহ।
যেমন- কেউ নিয়ত করল যে (আগামীকাল) রমজান হলে রমজানের রোজা রাখলাম অন্যথায় নফল বা অন্য কোন ওয়াজিব রোজা রাখবো।
তবে যে নিয়তেই রোজা রাখুক না কেন যদি ঐদিনই (প্রকৃতপক্ষে) রমজান প্রমাণিত হয়ে যায়,
তাহলে আবু হানীফা (রহ.)-এর মতে রমজানের রোজাই আদায় হবে।
কি কাজ করলে রোজার ক্বাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হয়
যদি কোন ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখা অবস্থায় সামনের অথবা পিছনের রাস্তায় ইচ্ছাকৃত সহবাস লিপ্ত হয় অথবা কোন খাদ্য বা ঔষধ ইচ্ছাকৃত ভাবে খায়,
বা পান করে তাহলে তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং তার উপর ক্বাযা ও কাফফারা উভয়টি ওয়াজিব হবে।
কাফফারা আদায় করার পদ্ধতি কয়টি ও কি কি
রোজার কাফফারা হলো, একটি গোলাম আজাদ করে দেয়া। এতে অসমর্থ হলে দুমাস লাগাতার এমন সময় রোজা রাখতে হবে যার মধ্যে রমজান মাস,
দুই ঈদ বা আইয়্যামে তাশরীক না আসে। যদি কোন ওজর অথবা বিনা ওজরে উক্ত দুইমাসের রোজা নষ্ট হয়ে যায় কিংবা বাদ পড়ে,
তাহলে নতুনভাবে প্রথম থেকে আবার রোজা শুরু করবে। তবে হায়েয অথবা নেফাসের কারণে রোজা ভঙ্গ হলে কোন ক্ষতি নেই।
আর রোজা রাখতে সক্ষম না হলে ষাটজন মিসকিনকে এ পরিমাণ খানা প্রদান করতে হবে, যেন প্রতিজন সদকায়ে ফিতর পরিমাণ খানা পেয়ে যায়।
ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ (রহ.)- এর মতে সহবাস ব্যতীত অন্য কোন কারণে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
তবে এ ব্যাপারে সকল ইমাম একমত যে, ক্বাযা ও কাফফারা অথবা মান্নতের রোজা ভেঙ্গে ফেললে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।