প্রতিদিনের খাদ্যসমূহ খাবার পর সঠিক মাত্রায় এবং সঠিক সময়ে ভুক্ত খাদ্যাংশের বর্জ্য পদার্থ শরীর হতে বের না হওয়াকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে।
খাদ্যের আসার দ্রব্য ৬ হতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে শরীর হতে বের হওয়াই নিয়ম।
একজন সুস্থ মানুষ স্বাভাবিক খাদ্য খেয়ে প্রতিদিন বা ২৪ ঘন্টায় ২ বার মল ত্যাগ করে।
অবশ্য অভ্যাসভেদে বিভিন্ন মানুষের মল ত্যাগের নিয়ম বিভিন্ন। এমনও মানুষ দেখা যায় যখনই ইচ্ছা করে তখনই মলত্যাগ করতে পারে।
আবার এমনও হয় কেউ কেউ ৩ দিন পরপর মলত্যাগ অভ্যস্ত। এগুলো আসলেই কোন রোগ নয়।কোষ্ঠকাঠিন্য একটি বা অনেকগুলো রোগের লক্ষণ মাত্র।
কোষ্ঠকাঠিন্য দুই প্রকার
১) অন্ত্রীয় কোষ্ঠকাঠিন্য (Intestinal Constipation or colonic Constipation)
২) মলাশয় কোষ্ঠকাঠিন্য (Rectal Constipation)
১) অন্ত্রীয় কোষ্ঠকাঠিন্য কারণ:
১) কম খাওয়া দাওয়া করা, শাক-সবজি খুব কম খাওয়া, খাদ্য গ্রহণের পরে পানি কম খাওয়া, খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য না খাওয়া,
খাবার ভালভাবে চিবিয়ে না খাওয়া, শরীর হতে জলীয় দ্রবণ বের হয়ে গেলে এ রোগ হয়।
২) স্নায়ুতন্ত্রীয় রোগী, প্যারালাইসিস, মানসিক উত্তেজনা, দীর্ঘদিনের পেটের ব্যথা, উত্তেজক ঔষধ ও উত্তেজক খাবার গ্রহণ বা অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া শুষ্ক খাবার গ্রহণ।
৩) পেটের ক্ষুদ্রান্ত্র বা বৃহদন্ত্রের মাংসপেশি দুর্বল হলে বা জন্মগতভাবে অন্ত্রের কোন ত্রুটি থাকলে এ রোগ হয়।
৪) অম্লরস বা পিত্ত রস কম নি:সরণ হলে এ রোগ হয়।
৫) অন্ত্রের কোন অংশে টিউমার বা অন্ত্রে প্যাচ লাগা বা কোন ভাবে খাদ্যবস্তু বাধাপ্রাপ্ত হলে।
৬) ডায়াবেটিস, বার্ধক্য, অলসতা, রক্তস্বল্পতা এবং বেশী বেশী ক্ষিদে পাওয়া (Greedy Colon) এমন রোগের উপসর্গে এটা হয়।
৭) অন্ত্রের আর্দ্রতা নষ্ঠ হওয়া। শারীরিক সঞ্চালনের অভাব।
৮) ব্যথানাসক ঔষধ সেবন করলে,গ্যাস্ট্রিক এর ঔষধ ও আমাশা, ডায়রিয়া বন্ধ হওয়ার ঔষধ সেবন করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
মলাশয় কোষ্ঠকাঠিন্য কারণ
অভ্যাস জনিত কারণে অর্থাৎ মলত্যাগের চাপ হলেও ইচ্ছা করে আটকে রাখা এবং দীর্ঘদিন এভাবে অভ্যস্ত হলে বা সময়মত মলত্যাগের অভ্যাস না করা।
পরামর্শ
সবুজ শাক-সবজি পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবেন। ফলের রস পান অথবা রসানো ফল বেশী করে খাবেন। মলত্যাগের সময় বেশী চাপ দিবেন না।
যথা সময়ে মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলুন। পানি প্রচুর পরিমাণ পান করুন, কমপেক্ষে দিনে ৫-৬ লিটার পানি পান করুন।
আটা জাতীয় খাবার বর্জন করুন, যেমন: আটার তৈরি পিটা,সন্দেশ, রুটি,ইত্যাদি। যদিও তা খান তবে আশ জাতীয় খাবার ও পানি বেশী করে খাবেন।
কপি, চকলেট, মিষ্টান্ন খাবার কম খাবেন। প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম ও ৩০-৪০ মিনিট হাটুন।
দৈনিক ২ বার গোসল করুন এবং গোসল শেষে পূর্ণ শরীরে খাটি সরিষার তেল ব্যবহার করুন।
যাদের বেশী কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয় তারা এক কাজ করতে পারেন,আশা করি অনেক উপকার হবে।
ইসুবগুলের ভূষি খানা খাওয়ার পর ১ চামচ ১ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে সাথে সাথে খেয়ে নিবেন অনেক ভাল ফল পাবেন।
পোস্টি ভাল লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পর্কে আর কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন।
বদহজম কেন হয় ও তার লক্ষণ