Breaking News
Home / তাহাজ্জুদ / রাত্রি জাগরণ ও তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

রাত্রি জাগরণ ও তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

হযরত মুগীরা ইবনে শোআবা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নবী কারীম (সা:) ( নামাজে) এত অধিক দাঁড়ালেন যে,

তার দুই পায়ের পাতা ফুলে গেল। তখন বলা হলো, হুজুর আপনি কেন এরূপ করেন? অতচ আল্লাহতো আপনার অগ্রপশ্চাতের যাবতীয় গোনাহ মাফ করে দিয়েছেন।

হুজুর (সা:) জওয়াব দিলেন, আমি কি আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দাহ হব না?

উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নে করা হল

যাবতীয় নফল নামাজের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত অত্যধিক। নবী কারীমের (সা:) জন্যে তাহাজ্জুদের নামাজ ছিল

উম্মতের জন্যে যদিও আইনত তাহাজ্জুদকে ফরজ করা হয়নি। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা যে, উম্মতে ী তাহাজ্জুদ নামাজ,

বিশেষ গুরুত্ব ও যত্নসারে আদায় করুক। েও তাহাজ্জুদ নামাজের উল্লেখ আছে। যেমন, আল্লাহপাক নবীকে লক্ষ্য করে বলেছেন:

“রাত্রের এক অংশে তুমি তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় কর, এ হলো তোমার জন্যে অতিরিক্ত।

অচিরেই তোমার প্রতিপালক তোমাকে মাকামে মাহমুদায় প্রেরণ করবেন।”

(বনী ইসরাঈল, আয়াত:৭৯)

হুজুর (সা:) কখনও কখনও এতো অধিক সময় তাহাজ্জুদে দাঁড়িয়ে থাকতেন যে, তার দুই পায়ের পাতা ফুলে যেত।

ফলে সাহাবীদের মধ্য হতে কেউ বলেছিলেন যে, হুজুর আপনিতো মাসুম, আপনার তো নেই।

এতদসত্ত্বেও আল্লাহ আপনার আগে পিছের যাবতীয় ত্রুটি মাফ করার ওয়াদা করেছেন। সুতরাং আপনার এত অধিক পরিশ্রমের প্রয়োজন কি?

হুজুর (সা:) জওয়াবে বললেন, কেন আমি কি আল্লাহর প্রিয় বান্দাহ হব না? হুজুর (সা:) বিতরসহ তাহাজ্জুদ নামাজ ৭, ৯ ও ১১ রাকাত আবার কখনও ১৩ রাকাত পড়েছেন।

হযরত আবু হোরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম (সা:) বলেছেন, যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ বাকি থাকে, তখন স্বয়ং আমাদের প্রভু,

পরওয়ারদিগার তাবারাক ওয়া-তায়ালা দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন এবং বলতে থাকেন, ওগো কে আছো,

যে (এসময়) আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিব। ওগো কে আছো, যে আমার কাছে কিছু চাবে, আমু তাকে তা দিয়ে দিব।

ওগো কে আছো, যে (এসময়) আমার কাছে গুনাহ হতে ক্ষমা চাবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিব।

(বুখারী, মুসলিম)

হযরত জাবির (রা:) হতে বর্ণিত,  তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা:) কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, নিশ্চই রাতের ভিতর এমন একটি সময় আছে,

যদি কোন মুসলমান ঐ সময়টি পায়, আর তখন দুনিয়া আখেরাতের কল্যাণ হতে কোনকিছু প্রার্থনা করে, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দেন।

আর এ সময়টা প্রতি রাতে আসে। (বিশেষ কোন রাতের সাথে সংশ্লিষ্ট নহে।

(মুসলিম)

হযরত আবু উমামা বাহেলী (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা (হুজুরকে) জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর নবী কোন সময়ের অধিক শ্রবণযোগ্য?

হুজুর (সা:) বললেন, রাতের শেষার্ধের দোয়া এবং ফরজ নায়াজের পর যে দোয়া করা হয়।

(তিরমিযী)

হযরত ইবনে মালেক আশয়ারী (রা:) হতে বর্ণিত,  তিনি বলেন, রাসূলে কারীম (সা:) বলেছেন, বেহেশতে এমন (স্বচ্ছ ও ঝকঝকে) বালাখানা আছে,

যার ভেতর হতে বাহিরের সবকিছু এবং বাহির হতে ভিতরের সবকিছু (পরিষ্কার)  দেখা যায়।

এসব বালাখানা আল্লাহ তার জন্যে তৈরি করে রেখেছেন যিনি (লোকের সাথে) কথাবার্তায় নম্রতা দেখিয়েছেন,

(ক্ষুধার্তকে) খেতে দিয়েছেন, রোজা রেখেছেন এবং রাতের এমন অংশে নামাজ পড়েছেন, যখন (সাধারণভাবে) লোকজন ঘুমিয়ে থাকে।

(বায়হাকী, তিরমিযী)

শুধু উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নে করা হল

রাতের শেষাংশে সাধারণতভাবে যখন সকলে ঘুমিয়ে পড়ে এবং জগতের সকল কলরব কোলাহল স্তব্ধ হয়ে যায়,

তখন আল্লাহর যে বান্দাহ আরামকে হারাম করে প্রভুর দরবারে নিজের গুনাহ মাফির জন্য তওবা ইস্তেগফার ও জিকির আজকারে মশগুল থাকে,

নামাজ পড়ে ও আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করে,  যে আল্লাহর মকবুল বান্দাহ তাতে আর সন্দেহ কি?

রাতের শেষ অংশে যখন সারা জগত ঘুমিয়ে থাকে, তখন জেগে যে ইবাদত করা হয়, তাকে যেমন অত্যধিক মানসিক প্রশান্তি অনুভূত হয়,

তেমনি তাতে রিয়ারও (লোক দেখানোও) কোন প্রবনতা থাকে না। ফলে এহেন ব্যক্তিকে আল্লাহ যেমন পছন্দ করেন,

তেমনি তার দোয়াও তিনি কবুল করে থাকেন। উপরে উল্লেখিত হাদীসগুলোতে আল্লাহর নবী বিভিন্নরূপে একথাই ব্যক্ত করেছেন।

শেষের হাদীসটিতে যে রোজার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাহলো নফল রোজা। আর রাতের নামাজ দ্বারা নফল অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামাজ নো হয়েছে।

কেননা ফরজ সকলের জন্যেই বাধ্যতামূলক। আর কোন ব্যক্তি যাবতীয় ফরজ-ওয়াজিব আদায় করার পরে যখন,

আল্লাহর নৈকট্য ও রেযামন্দীর ্দেশ্যে এ অতিরিক্ত ইবাদত করবে, তখন আল্লাহ তাকে উক্ত বালাখানা দান করবেন।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা:) হতে বর্ণিত, তার পিতা হযরত উমর (রা:) রাত্রে আল্লাহর তাওফিক মোতাবেক নামাজ পড়তেন।

এমনকি যখন রাত শেষ হয়ে আসতো, তখন তিনি নিজ পরিবারের লোকদেরকে নামাজের জন্য জাগিয়ে দিতেন।

অত:পর তিনি এই আয়াত পাঠ করতেন:

হে মুহাম্মদ (সা:) আপনার পরিবারকে নামাজের জন্য আদেশ করুন এবং নামাজ আদায়ের ব্যাপারে ধৈর্য অবলম্বন করুন।

আমি আপনার কাছে রিজিক চাচ্ছি না বরং আমি আপনাকে রিজিক দান করি। আর পরিমাণ পরহিজগারদের ভাগ্যে।

(সূরা ত্বা-হা, আয়াত-১৩২)

 

About Admin

আমার নাম: এইচ.এম.জামাদিউল ইসলাম ঠিকানা: সিলেট, বাংলাদেশ। আমি কোরাআনের খেদমতে আছি এবং MuslimBD24.Com সাইটের ডিজাইনার (Editor) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায়, তাই সময় পেলে দ্বীন ইসলাম প্রচারের সার্থে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখালেখি করি। যাতে করে অনলাইনেও ইসলামিক জ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞানহীন মানুষ, ইসলামিক জ্ঞান সহজে অর্জন করতে পারে। একজন মানুষ জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিজের জীবনকে ইসলামের পথে চালাতে গেলে ইসলাম সম্পর্কে যে জ্ঞান অর্জন করার দরকার, ইনশা-আল্লাহ! এই ওয়েব সাইটে মোটামুটি সেই জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। যদি সব সময় সাইটের সাথে থাকে। আর এই সাইটটি হল একটি ইসলামিক ওয়েব সাইট । এ সাইটে শুধু দ্বীন ইসলাম নিয়ে লেখালেখি হবে। আল্লাহ তায়ালার কাছে এই কামনা করি যে, আমরা সবাইকে বেশী বেশী করে ইসলামিক জ্ঞান শিখার ও শিখানোর তাওফিক দান করুন, আমিন। তাজবীদ বিষয়ে কিছু বুঝতে চাইলে যোগাযোগঃ 01741696909

Powered by

Hosted By ShareWebHost