(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
বাইরে থেকে আসা প্রচুর মাসআলার তামরীন করতে হয়েছিল। বেশিরভাগ মাসআলা ছিল তালাক সংক্রান্ত।
একবার পুরোনো এক তাবলীগের সাথির স্ত্রী তালাকের মাসআলা লিখে জমা দিয়েছিলেন।
আমি সেই মাসআলা নিয়ে টানা একমাস ঘাঁটাঘাঁটি করে যখন দেখলাম,
তিন সন্তানের এই দম্পত্তিকে বিচ্ছেদ থেকে বাঁচানোর আর কোনো উপায়ই নেই, তখন চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়েছিল।
দীর্ঘ পঁচিশ বছরের সংসার তাদের। দ্বীনদার পরিবার। বিবিও আলেমা।
কিন্তু ঝগড়ার মুহূর্তে শয়তানের ধোঁকায় পড়ে এমন একটি বাক্য বলে ফেলেছেন, যার ফলে তারা পরষ্পরে সারাজীবনের জন্য হারাম হয়ে গিয়েছেন।
ফতওয়া নিতে যখন মহিলা আবার এসেছিলেন, তখন বারবার জিজ্ঞেস করছিলেন, হুজুর, আমার উনার সাথে থাকতে পারব তো?
আমি কোনো উত্তর দিতে পারিনি। শুধু বলেছিলাম বাসায় গিয়ে ফতওয়া পড়ে নিবেন।
বছরের শেষের দিকে আর কোনো তালাকের মাসআলার উত্তর দিতে চাইতাম না। নিজের হাতে এসব পরিবারের বিচ্ছেদের ফতওয়া লিখতে মন সায় দিত না।
এই তো সেদিনের কথা, হানাফী ফিকহ গ্রুপে এক ভাই প্রশ্ন করেছেন, তার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর রেখে দেয়া ছবিগুলো দেখতে পারবেন কি না?
এগুলো তো আগের তোলা ছবি। কী বলব আমি! কেঁদেছি তখন।
এমন স্বামী মনে হয় নেই দুনিয়াতে, যে প্রচণ্ড রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পরে কেঁদে বুক ভাসায় না।
এমন স্ত্রী বোধহয় নেই পৃথিবীতে, বিচ্ছেদের পর স্বামীর বুকে মাথা রাখার জন্য রাতের পর রাত কেঁদে বালিশ ভেজায় না।
পৃথিবীর প্রত্যেকটা সংসারেই ভালোবাসা থাকে, একে অপরের প্রতি আকর্ষণ থাকে। কিন্তু শয়তান তাদের এ সুখ সহ্য করতে পারে না।
ফলে ঝগড়ার মুহূর্তে শুধু মাথায় ঢুকিয়ে দেয়, দিয়ে দে তালাক, এ চলে গেলে আরও কত সুন্দর মেয়ে পাবি!
এ জন্য ভাই আমার, বোন আমার, ঝগড়ার মুহূর্তে একপক্ষ চুপ থাকুন।
অথবা প্রয়োজনে ফোন ভেঙে ফেলুন, ভাঙচুর করে রাগ থামান, তবুও তালাক বা তালাক সংক্রান্ত কোনাে শব্দ ভুলেও মুখে আনবেন না।
কোন কোন শব্দে তালাক হয় এগুলো জানা না থাকলে শীঘ্রই কোনো মুফতী সাহেবের শরণাপন্ন হয়ে তা জেনে নিন। এরপর এসব শব্দ নিজের জীবন থেকে মুছে দিন।
আরো পড়ুনঃ
সন্তানের বিবাহে অভিভাবকের অবহেলা, নব বিবাহিতদেরকে যে দশটি উপদেশ দিবেন, স্বামী স্ত্রীর যদি মনোমালিন্য হয় তার সমাধান কিভাবে করবেন