মুসলিমবিডি২৪ডটকম
মাদরাসা শিক্ষিত মেয়ে বিয়ে করবেন না জেনারেল শিক্ষিত?
এমন টাইপের প্রশ্ন সামনে রেখে মাঝেমধ্যে কিছু অনলাইন গ্রুপে তুমুল কথা চলতে দেখি। কমেন্টবক্সগুলো ঘুরার পর চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে আসলে আমরা আপাতত কোন এক শিক্ষার মেয়েকে প্রধান্য না দিয়ে একটি হাদিসের দিকে খেয়াল করি। নবী ﷺ বলেছেন;
تزوجوا الودود الولود
অর্থাৎ তোমরা বিয়ে করো সেই নারীকে যে স্বামীর প্রতি একনিষ্ঠা প্রেমী হয় এবং অধিক সন্তান-প্রসবকারীনী হয়। (মুসনাদে আহমদ: ১৩৫৯৪, ইবনে হিব্বান: ৪০২৮ সনদ হাসান)
এখন মেয়ের বিবাহই হয়নি, সে একনিষ্ঠা স্বামীপ্রেমী ও অধিক সন্তানপ্রসবা বুঝবো কী করে?
এর উত্তরে সকল হাদিসবেত্তা এ কথা বলেছেন যে, মেয়ের মা, নানী, বড় বোন, খালা, ফুফুদের দেখে এ ব্যাপারটা বুঝে নেওয়া। মেয়েদের মধ্যে তাদের মা-নানীদের রঙই ফুটে ওঠে।
একটি আয়াতের দিকে খেয়াল করি। হযরত মরিয়ম যখন গর্ভবতী হয়ে গেলেন, তখন তাঁর সম্প্রদায় তাকে ভৎসনা করতে গিয়ে এক পর্যায়ে বলেছিল;
یَـٰۤأُخۡتَ هَـٰرُونَ مَا كَانَ أَبُوكِ ٱمۡرَأَ سَوۡءࣲ وَمَا كَانَتۡ أُمُّك بَغِیࣰّا
অর্থাৎ হে হারুনের বোন, তোমার বাবা তো মন্দ লোক ছিল না এবং তোমার মা-ও কখনো এমন অপকর্ম করেনি (কিন্তু তুমি…!)। (সুরা মরিয়ম:২৮)
এ আয়াত থেকে বুঝা যায়, মা-বাবা সৎ, নেককার ও পুত-পবিত্র লোক হলে তাদের সন্তানদের ওপরও এর প্রভাব থাকে।
মা-বাবা খারাপ হলে সন্তানগুলোও খারাপ হয়। আল্লামা আলুসী রহ. তাঁর তাফসীর «রুহুল মাআনী»তে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেন;
وفِيهِ دَلِيلٌ عَلى أنَّ الفُرُوعَ غالِبًا تَكُونُ زاكِيَةً إذا زَكَتِ الأُصُولُ.
তাহলে একটি মেয়ে সতী, গুণবতী, পর্দানিশীন, নেককার, স্বামীভক্ত ইত্যাদি নির্ভর করে তার মা-খালা-নানী এবং ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর।
তাই বিয়ের আগে তার বাপ-ভাই ও মা-নানীর খবর নেওয়া।
তার খালা-ফুফুদেরও খবর নেওয়া। এতে করে মেয়ের প্রকৃত রূপ ও তার আসল স্বভাবের একটি ধারণা পাওয়া যাবে।
সুতরাং কোন মেয়ে মাদরাসায় পড়লেই যে একেবারে রাবেয়া বসরী হয়ে যাবে আর স্কুলে পড়লে সব শেষ, ব্যাপারটা এমন না।
মাদরাসায় পড়ুক বা স্কুলে, কোন মেয়ে দ্বীনদার, সতী, স্বামীপ্রণয়া হওয়াটা শিখে আসে মূলত তার ফ্যামিলি থেকে।
তাই বিয়ের আগে মেয়ে থেকে মেয়ের পরিবারের দ্বীনদারি, তাদের আখলাক-চরিত্র, এসবের খোঁজখবর নেয়া মেয়েকে যাচাইয়ের বড় একটি মাধ্যম।
নবীজী ﷺ বলেছেন— فاظفر بذات الدين বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়ের দ্বীনদারিকে প্রধান্য দাও।
এখন কোন মেয়ে হাত-মোজা পা-মোজাসহ সম্পূর্ণ আবৃত মানেই দ্বীনদার বুঝায় না।
এগুলো বাহ্যিক তাকওয়া, ভাসমান দ্বীনদারি, প্রকৃত তাকওয়া তো থাকে দিলে।
নবীজী বলেছেন التقوى ههنا প্রকৃত তাকওয়া তো থাকে হৃদয়ে। প্রকৃত তাকওয়া আছে কি-না বুঝবেন কি করে? ওই উপরে যা বললাম এটাই বড় মাধ্যম জানার।
এ যুগে কোন মেয়ের হাতে মোবাইল-ফোন বিশেষত স্মার্ট ফোন না থাকা অধিকাংশ সময় তার প্রকৃত তাকওয়ার আলামত বলে চিহ্নিত হয়।
রাস্তায় বের হলে তার সাজ-সজ্জা, তার বোরকাই বলে দেয় তার গায়রত কতটুকু,
তার বাপ-ভাই ও তার পরিবারের লোকদের গাযরত কতটুকু, তারা তার সেপ্টির প্রতি কতটুকু যত্নবান।
তথ্য সূত্র
(«বিবেকের মিনারে ফেরেশতার আজান» পৃ. ১৪১ মুহতারাম Abdul Kadir Masum হাফিজাহুল্লাহ)