(মুসলিম বিডি ২৪ ডটকম )
পৃথিবীতে কোন মানুষ তার সকল কাজ একা আন্জাম দিতে পারে না,
বিশেষত এই জটিল শিল্পায়নের যুগে জীবন ধারণের জন্য প্রত্যেক মানুষকেই অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়।
বিভিন্ন স্তরে এক ব্যক্তির অধীনে একাধিক ব্যক্তিবর্গ কাজকর্ম আন্জাম দিয়ে থাকেন।
ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় সকল দায়িত্বশীল ও উধ্বর্তন কর্মকর্তার প্রতি নির্দেশ রয়েছে
যেন প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থদের সাথে সদ্ব্যবহার করে এবং তাদের উপর কোন প্রকার জুলুম অত্যাচার না করে।
ইসলামী জীবন বিধানে মর্যাদার পার্থক্য হয় কেবল তাকওয়ার ভিত্তিতে,
তাই উধ্বর্তন কোন কর্মকর্তা নিম্ন পদস্থদের প্রতি কোন প্রকার জুলুম ও বে-ইনসাফি করতে পারবেনা।
আজকের সমাজে ক্রীতদাস প্রথা নেই সত্য, তবে অধীনস্থদের প্রতি জুলুম অত্যাচার চলতে থাকে বিভিন্নভাবে তাই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ এ যুগের সকল প্রকার শ্রমিক ও অধীনস্থদের বেলায়ও একইভাবে প্রযোজ্য হবে।
হযরত আবু হুরায়রা (রাযি:) থেকে একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন।
“তারা তোমাদের ভাই আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন,
কাজেই আল্লাহ যার ভাইকে তার অধীনস্থ করে দিয়েছেন তার উচিত তাকে তাই খাওয়ানো যা সে নিজে খায়।
এবং তাকে তাই পরানো যা সে নিজে পরে থাকে,আর তাকে এমন কর্ম ভার দিবে না যা তার সাধ্যাতীত।
যদি কখনো তার উপর অধিক কর্মভার চাপানো হয় তবে যেন সে তাকে সাহায্য করে (বুখারী-মুসলিম )
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা এর খাদেম হযরত আনাস এর বক্তব্য প্রনিধানযোগ্য, তিনি বলেছেন আমি দীর্ঘ ১০ বছর রাসূলুল্লাহ (সা) এর খেদমত করেছি
তিনি আমার সম্পর্কে কখনো “উহ্” শব্দটি বলেননি এবং কোনদিন বলেননি যে
এটা করো নি কেন ওটা করো নি কেন? (এমনকি) আমার বহু কাজ তিনি নিজে করে দিতেন!! (মিশকাত শরীফ) ।
হযরত ওমর (রাঃ) জেরুজালেম সফরে উটে চড়া ও টেনে নেয়ার ব্যাপারে সাম্য ও মানবতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন,
নিজের ও ভৃত্যের মধ্যে পালাক্রম ঠিক করে। এর নজির ইতিহাসে বিরল।
একজন ভৃত্য কে দৈনিক কয়বার ক্ষমা করে যেতে পারে?? বিদায় হজ্জে এ প্রশ্নের জবাবে,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছিলেন: في كل يوم سبعين مرة অর্থাৎ দৈনিক ৭০ বার! সুবহানাল্লাহ!!! এরূপ সম্পর্ক মুসলিম সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
দুনিয়ার যে কোন স্থানের ও যেকোনো ধরনের মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক সহানুভূতি ও একাত্মবোধ বিরাজমান থাকা বাঞ্ছনীয়।
মুসলমান যদি বিচ্ছিন্ন থাকে তবে তারা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং শত্রু তাদের উপর সহজেই প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।
একাত্মবোধের মধ্যে মুসলমানদের শক্তি নিহিত রয়েছে।
মোট কথা পারস্পারিক দৃঢ় সম্পর্ক ও একাত্মবোধের মধ্যেই মুসলমানদের শক্তি নিহিত রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে অপর ভাইয়ের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে সর্বদা ঐক্যবদ্ব থাকার তাওফিক দান করুন আমীন….।