Breaking News
Home / ইসলামিক নিউজ / গীবতের মন্দ পরিণতি মুহা:ইলিয়াস বিন শহিদুল্লাহ

গীবতের মন্দ পরিণতি মুহা:ইলিয়াস বিন শহিদুল্লাহ

(মুসলিমবিডি২৪.কম)

গীবতের মন্দ পরিণতি মুহা:ইলিয়াস বিন শহিদুল্লাহ

বন্ধুগন আমরা আজ গীবত সম্পর্কে করব ইংশাআল্লাহ

গীবত একটি কবিরা গোনাহ যা করা এবং ইচ্ছাকৃত শুনা উভয়টি   আজ সেই কবিরা গোনাহ টিই ব্যাপক রুপ ধারণ করেছে ৷

যার মধ্যে সজের সকল স্থরের ই লিপ্ত হচ্ছে  তাই তার মন্দ পরিণতি সম্পর্কে আজ কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করব ৷

গীবত এটি একটি আরবি শব্দ (الغيبة) যার শাব্দিক অর্থ হলো কুৎসা, পরনিন্দা, পিছনে সমালোচনা করা ইত্যাদি ৷

পরিভাষায় গীবত বলা হয় কোন ভাইয়ের অগোচরে তার এমন কোন দুষের কথা বলা যা সে প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ৷

যেমন রাসুলুল্লাহ সা:এর এক হাদিসে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ” أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ ؟

” قَالُوا : اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ : ” ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ “. قِيلَ : أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ ؟ قَالَ : ” إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ “(صحيح مسلم رقم الحديث ٢٥٨٩)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি:থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সা:(তার সাহাবাদের কে জিজ্ঞাসা করলেন যে) তোমরা কি জান গীবত কি?

তারা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুলেই অধিক অবগত রাসুল সা:বলেন তোমার ভাইয়ের এমন কোন বিষয় আলোচনা বা উল্লেখ করা।

যা সে অপছন্দ করে তখন বলা হলো, যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে ঐ বিষয়টি থাকে তাহলেও কি গীবত হবে?

তিনি সা:বললেন, তুমি যা কিছু বলেছো সেটা যদি তার মধ্যে থাকে তাহলে তুমি তার গীবত করলে আর যদি না থাকে তাহলে তুমি তার উপর অপবাদ দিলে।

(সহিহ মুসলিম , হাদিস নং 2589)

গীবত একটি মারাত্বক কবিরা গুনাহ  কোরআন ও হাদিসের অনেক জায়গায় তার নিন্দা করা হয়েছে এবং তার মন্দ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।

যেমন আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ে গীবতের নিন্দা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُل لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ (سورة

الحجرات رقم الآية ١٢)

অর্থ – তোমাদের কেউ যেন অন্যের গীবত না করে তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভ্রাতার গোশত ভক্ষন করতে পছন্দ করবে?

বস্তুত তোমরা তো তা ঘৃনাই কর  আল্লাহ কে ভয় কর নিশ্চই আল্লাহ তওবা কবুল কারী, পরম দয়ালু।

(সুরা হুজরাত াত নং 12) এই আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন গীবত করা কে মৃত র গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা দিয়েছেন ৷

তাফসীরে মাআরেফুল কোরআনে আছে মৃত মানষের গোশত ভক্ষন করলে যেমন তার কোন কষ্ট হয়না।

তেমনি অনুপস্থিত ব্যক্তি যতক্ষন গীবতের কথা না জানে তারও কোন কষ্ট হয়না  কিন্তু মৃত মানুষের গোশত খাওয়া যেমন হারাম ও চুড়ান্ত নীচতা

তেমনি গীবত করাও হারাম নীচনা (পৃষ্টা নং 1284)
গীবতের পরিণতি: -গীবতের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ হয় ৷

যেমন এক হাদিসে এসেছে,

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

: ” لَمَّا عُرِجَ بِي مَرَرْتُ بِقَوْمٍ لَهُمْ أَظْفَارٌ مِنْ نُحَاسٍ، يَخْمِشُونَ وُجُوهَهُمْ وَصُدُورَهُمْ، فَقُلْتُ : مَنْ هَؤُلَاءِ يَا جِبْرِيلُ ؟ قَالَ : هَؤُلَاءِ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ لُحُومَ النَّاسِ، وَيَقَعُونَ فِي أَعْرَاضِهِمْ

(سنن ابي داود رقم الحديث ٤٨٧٨)

হযরত আনাস বিন মালেক রাযি:থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সা:বলেন ,মিরাজের রাতে যখন আমাকে আকাশে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

তখন আমি এমন একটি সম্প্রদায়ের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম যাদের নখগুলো ছিল তামার তারা সে গুলো দিয়ে তাদের মুখমন্ডল ও বুক আঁচড়াইতে ছিল ৷

তখন আমি বললাম হে জীবরাঈলল এরা কারা? তিনি বললেন, এরা হলো ঐ সকল ব্যক্তি যারা মানুষের গোশত খেত।

(অর্থাৎ গীবত করত) ও তাদের মান সম্মান হানি করত  প্রিয় ভাই ও বোনেরা আসুন একটু চিন্তা করে দেখি যে,

কেউ যদি কোন একটি লোহার বা তামার টুকরা দিয়ে তার শরিরে একবার আঁছড় দেয় তাহলে তার পরিণতি কি হবে?

অনেক কষ্ট হবে বন্ধু তাইনা এমন কষ্ট যা বলে ব্যক্ত করা যাবেনা! এখন যে ব্যক্তি সর্বদা তার শরির তামার নখ দিয়ে আঁচড়াচ্ছে।

তার পরিণতি কি হতেপারে তা কি তুমি কোন দিন ভেবে দেখেছ বন্ধু?

অন্য এক হাদিসে এসেছে,

عنِ أَبِي بَكْرَةَ قَالَ : مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَبْرَيْنِ، فَقَالَ : ” إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ : أَمَّا أَحَدُهُمَا فَيُعَذَّبُ فِي الْبَوْلِ، وَأَمَّا الْآخَرُ فَيُعَذَّبُ فِي الْغِيبَةِ “(رواه

ابن ماجة رقم الحديث ٣٤٩)

অর্থ, হযরত আবু বকরা রাযি:থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,একবার রাসুল সা: দুটি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন ৷

তখন তিনি বললেন এই দুই কবর বাসিকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, তবে তাদের কে বড় কোন গুনাহের ে শাস্তি দেওয়া হচ্ছেনা ৷

তাদের একজনকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে প্রস্রাব এর কারণে (অর্থাৎ সে প্রস্রাব এর ব্যপারে সতর্া অবলম্বন করত না)

দ্বিতীয় জন কে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে গীবত করার কারণে হে ভাই এখানেও কেবল গীবত করার কারণে তাকে কবরে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে ৷

তাই হে ভাই তুমি তি চাওনা কবরের আজাব থেকে বাঁচতে?তুমি কি চাওনা জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা পেতে?

তুমার জবাব তো একটাই হবে যে হাঁ আমি বাঁচতে চাই, তাহলে আমি বলব আস আমরা প্রতিজ্ঞা করি যে,

আজ থেকে গীবত নামক কবিরা গোনাহে আর লিপ্ত হবনা এবং কেউ আমার পাশে গীবত করলে আমি হয় সাধ্যমত প্রতিবাদ করে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব ৷

আর না হয় আমি সেখান থেকে উঠে চলে যাব ৷ আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন, আমীন!

আরো পড়ুন

ঈমান ভঙ্গের কারণসমূহ,হজ্জ পালন না করার পরিনতি,যে কোনো সমস্যা ও দুঃখ-কষ্টে সহজ পাঁচটি আমল,

About Mijanur Rahman Shaif

মাওঃ মিজানুর রহমান সাইফ সাহেব। একজন লেখক | সাংবাদিক | গবেষক তিনি দ্বীনের আলো মুসলিম উম্মাহর কল্যানে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে মুসলিমবিডি টুয়েন্টি ফোর ডটকমকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে যাচ্ছেন।

Check Also

তোহ্ফায়ে সুন্নাহ্

এস্তেঞ্জার আদব ও সুন্নতসমূহ   ১. এস্তেঞ্জাখানায় প্রবেশের পূর্বে বিসমিল্লাহ বলে মাথা ঢেকে নেয়া। (মুসান্নাফে …

Powered by

Hosted By ShareWebHost