(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
আযান শুনামাত্র নামাজের প্রস্তুতি গ্রহণ পূর্বক মসজিদে গমন ওয়াজিব। আর মৌখিকভাবে তার জবাব দেয়া সুন্নাত।
মৌখিকভাবে জবাব দেয়া অর্থাৎ, মুয়াজ্জিন যা বলবে তার জবাবে তা-ই বলা। তবে এর কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে।
যথা, হাইয়া আলাস সালাহ এবং হাইয়া আলাল ফালাহ-এর জবাবে লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ বলা।
ফজরের আযানে আসসালাতু খাইরুম মিনান্নাউম-এর জবাবে সাদাকতা ওয়া বারারতা বলা।
আর ইকামতের সময় কাদ কামাতিস সালাহ-এর জবাবে আকামাহাল্লাহু ওয়াদামাহা বলা।
(ফাতাওয়ায়ে শামী-১/৩৯৭,৪০০, বাহরুর রা-ইক-১/২৫৯, ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী-১/৫৭)
আযানের ভেতর হুজুর সা: এর নাম উচ্চারণ ও দুরূদ শরীফ পাঠ
আযান ও ইকামতে “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” শুনার পর নিয়ম হলো তার জবাব দেয়া। তৎক্ষণাৎ দুরূদ শরীফ পাঠ করা নিয়ম নয়।
হ্যা, আযান শেষ হলে পর প্রথমত: দুরূদ শরীফ পাঠ করা তার পর আযানের নির্ধারিত দোয়া পড়া এটাই হচ্ছে শরীয়তের বিধান।
অথচ, আজকাল অনেকেই এর ব্যতিক্রম করতে দেখা যায়। সকলের জন্য নিয়মানুবর্তিতা অর্জন এবং নিয়মনিষ্ঠ হওয়া দরকার।
(ফাতাওয়ায়ে শামী-১/৩৯৮, আহসানুল ফাতাওয়া-২/২৭৮-২৭৯)
আযানে আঙ্গুল চুম্বন
আযান চলাকালে নিয়ম হলো আযানের জবাব দেয়া। তাই মুয়াজ্জিন যখন “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলবে,
তখন নিয়ম হলো তার জবাবেও আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলা। আযানের সময় এ বাক্য উচ্চারিত হলে মহানবী (সা.) এর পবিত্র নাম শ্রবণপূর্বক,
তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের উদ্দেশ্য আঙ্গুল চুম্বন করে বা আঙ্গুলে ফুক দিয়ে তা চোখে লাগানোর কোন প্রমাণ শরীয়তে নেই।
বিধায়, সুন্নাত বা সাওয়াবের কাজ মনে করে এরূপ আমল করা বিদআত ও গর্হিত কাজ।
উপরন্তু, এর দ্বারা মহানবী (সা.) এর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনই যদি উদ্দেশ্য হয় তবে মহান প্রভু আল্লাহর নাম শুনেও এরকম করা উচিৎ।
অথচ, আল্লাহর নাম শুনে তো এরকম কিছুই করা হয় না। তবে কি নবীর নাম আল্লাহর নামের চেয়ে অধিক সম্মানিত? মোদ্দাকথা, ইহা এক নেহায়েত নিন্দিত ও গর্হিত কাজ।
কাজেই তা পরিতাজ্য। নচেৎ সাওয়াবের পরিবর্তে গোনাহই হবে।
তবে আযানের সময় হুজুর (সা.) এর নাম শুনে আঙ্গুল চুম্বন করে,বা আঙ্গুলে ফুক দিয়ে চোখে লাগানো চক্ষু রোগের নিরাময়ের জন্য এক পরীক্ষিত তদবির।
তাই কেউ যদি সুন্নাত বা,সাওয়াবের কাজ মনে না করে স্রেফ তদবির বা,চিকিৎসা স্বরূপ এ রকম করে, তবে তা অবৈধ বা গর্হিত নয়।
কেননা তখন তা ইবাদত স্বরূপ হবে না, বরং চিকিৎসা স্বরূপ হবে।
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূল-২/৯০
-ফাতাওয়া মাহমূদিয়্যাহ-১/২৩৬-২৩৮
ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়্যাহ-১/৫৮-৬৩, ২/৩০৩-৩০৮)
আযানের সময় দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা
অনেক লোককে আযান চলাকালীন সময়ে দুনিয়াবি বাক্যালাপ করতে দেখা যায়। অথচ, হাদীস এবং ফিকহের কিতাবসমূহে এর উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে।
বিধায়, আযান মুহুর্তে দুনিয়াবি বাক্যালাপ ত্যাগ করে আযানের জবাব দানে মনযোগী হওয়া একান্ত অপরিহার্য।
(ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়্যাহ-৫/১৪৪-১৪৫)