(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
বাচ্চার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব যার, সেই নিজের সম্পদ থেকে বাচ্চার আকীকা করবে। বাচ্চার মাল থেকে আকীকা করা জায়েজ নেই।
কেউ করলে তার ক্ষতিপূরণ অবশ্যই দিতে হবে। সন্তানের পিতা দরিদ্র হলে সেক্ষেত্রে মায়ের সামর্থ থাকলে মা-ই সন্তানের আকীকা করবে।
আকীকায় কয়টি পশু জবাই করবে?
আবু দাউদ শরীফে হযরত উম্মে কুরয (রাযি.) থেকে বর্ণিত আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
পুত্র সন্তানের পক্ষ থেকে দুইটি এবং কন্যা সন্তান হলে একটি ছাগল জবাই করবে। ছাগল বকরী হতে পারে, আবার খাসীও হতে পারে।
শাফেয়ী ও হানাফী মাযহাবের অধিকাংশ আলেম ছেলেদের ক্ষেত্রে দুটি বকরী জবাই করা পছন্দ করেন। কোন কোন আলেমের অভিমত হলো,
একটিই যথেষ্ট। কারণ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম হযরত হাসান (রাযি.)-এর আকীকার সময় একটি মাত্র বকরী জবাই করেছিলেন।
এবং হযরত ফাতেমা (রাযি.)-কে বলেছিলেন, ফাতেমা! তুমি তার (হাসান এর) মাথা মুণ্ডন করে দাও এবং তার চুলের ওজন পরিমাণ রুপা সদকা করে দাও।
তার চুলের ওজন হয়েছিল এক দেরহাম (৩ মাশা ১ রতি) বা তার চেয়ে কিছু কম। (তিরমিযী)
আকীকার প্রাণীর বয়স কত হবে?
আকীকার ক্ষেত্রে দুম্বা ভেড়া বা বকরীর বয়স এক বৎসর পরিপূর্ণ হতে হবে। গরু এবং উটের মধ্যে সাতজন পর্যন্ত শরীক হওয়া জায়েজ আছে।
তবে শর্ত হলো, সমস্ত শরীকের একমাত্র সওয়াব হাসিলের নিয়ত থাকতে হবে।
কি কি বিষয়ে আকীকা কুরবানীর ন্যায়?
শরহে মুকাদ্দামায়ে ইমাম আব্দুল্লাহ ব্যাখ্যা গ্রন্থে আছে, “আকীকা কুরবানীর মত” অর্থাৎ আকীকার প্রাণীর হুকুম কুরবানীর অনুরূপ।
বকরীর ক্ষেত্রে এক বৎসর, গরুর ক্ষেত্রে দুই বৎসর এবং উটের ক্ষেত্রে পাচ বৎসরের কম বয়স হলে আকীকা দুরস্ত হবে না।
পশুর জাতের ক্ষেত্রেও একই বিধান অর্থাৎ উট, গাভী, বকরী, ভেড়া ও দুম্বা ব্যতীত অন্য কোন প্রাণী দ্বারা আকীকা জায়েজ হবে না।
প্রাণীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অক্ষত থাকার ক্ষেত্রেও একই হুকুম। অর্থাৎ কোন অঙ্গ ৩/১ অংশের বেশী কর্তিত হলে আকীকা জায়েজ হবে না।
গুণগত মান অর্থাৎ পশু মোটাতাজা দামী হলে কুরবানীর মত আকীকার ক্ষেত্রেও বেশী সওয়াব লাভ হয়।
আকীকার গোশত খাওয়া ধনী, গরীব, আকীকা প্রদানকারী নিজে ও তার মাতা-পিতা সকলের জন্য খাওয়া জায়েজ।
অনুরূপভাবে আকীকার পশুর হাড় কর্তন করা বা ভাঙ্গাও জায়েজ আছে।
গোশত হাদিয়া দেয়া এবং সঞ্চয় করার ক্ষেত্রেও উভয়ের একই হুকুম যদিও জবাইকারী ধনী হয়ে থাকে।
কুরবানীর মত আকীকার গোশতও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। নিয়ত করে কোন পশু নির্দিষ্ট করার ক্ষেত্রেও উভয়ের হুকুম একই,
আর নিয়তের গুরুত্ব অনুরূপ। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রেও আকীকার হুকুম কুরবানীর অনুরূপ।
আকীকার পশু কি করবে?
আকীকার পশুর মাথা সন্তানের চুল মুণ্ডনকারীকে এবং রান ধাত্রীকে দেওয়া মুস্তাহাব, তারপর সম্পূর্ণ গোশতের ৩/১ অংশ গরীবদের মাঝে বন্টন করে দিবে।
বাকী অংশ নিজে খাবে এবং বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে বণ্টন করে দেবে।
নবজাতকের চুল, নখ ইত্যাদি কি করবে? চুলের সমপরিমাণ কি দান করবে?
নবজাতকের মাথার চুল মুণ্ডন করে ঐ চুল বরাবর স্বর্ণ বা রৌপ্য দান করে দেবে এবং সন্তানের মাথার (উক্ত) চুল ও নখ মাটিতে দাফন করে দেবে।
অনুরূপ ভাবে মানুষের শরীর থেকে সচরাচর যে সকল জিনিস যেমন চুল, নখ, দাত ইত্যাদি বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে সেগুলো দাফন করে দেওয়া উচিৎ।
আর চুল মুণ্ডন করার পর বাচ্চাদের মাথার জাফরান বা চন্দন মালিশ করে দেয়া ভালো।
আকীকা কখন করা উচিৎ?
সন্তান জন্মগ্রহণ করার পর ৭ম, ১৪তম বা ২১তম দিবসে অথবা বিলম্ব হলে অনুরূপ হিসাব অনুসারে সাত মাস বা সাত বৎসর পরে হলেও আকীকা করা উচিৎ।
তবে আকীকার ক্ষেত্রে সাত সংখ্যাটির প্রতি লক্ষ্য রাখা উত্তম।
আকীকার জন্তু জবাইকালে কি দোয়া পড়বে?
আকীকার পশু জবাই করার সময় নিম্নের দোয়া পাঠ করবে: