(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
আধুনিকতার ছুয়ায় ইসলামি নাম
পরিচয়ের জন্য নামের উৎপত্তি। অসংখ্য বস্তুকে চেনার জন্য প্রয়োজন নামের। প্রত্যেক জিনিসের নামের অর্থ সে বস্তুর বৈশিষ্ট্যের ইঙ্গিত বহন করে।
সব কিছুর স্রষ্টা মহান আল্লাহ তা'আলা মানব জাতির পিতা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করে প্রত্যেক জিনিসের নাম শিখিয়েছিলেন।
মানুষের নামের সাথে থাকে তার জাতির পরিচয়। শুধু চিহ্নিত করণই একমাত্র নামের উদ্দেশ্য নয়।
ইসলামী ভাবধারা সম্বলিত নামকরণ ইসলামী
সভ্যতা ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বিশ্বের সকল মুসলিম জাতির সংহতিকে জোরদার করার জন্য প্রয়োজন ইসলামী নামের প্রচলন।
ইসলামী নামের জন্য শর্ত হলো আরবি হওয়া। কেননা আরবি হলো আল্লাহর ভাষা, জান্নাতের ভাষা ও কুরআনের ভাষা।
তবে আরবি ভাষার সব নামই ইসলামী নাম নয়।
তাইতো রাসুল সা. অনেক সাহাবীর পূর্বের নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন।
কারণ নামকরণের দ্বারা মানুষের আক্বিদা, চিন্তাধারা ও মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এ জন্যই নামের অনেক গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে।
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ছেলে বা মেয়ে উভয়েরই সাত দিনের মধ্যে একটি অর্থবোধক ইসলামী নাম রাখা পিতা-মাতার কর্তব্য।
আল্লাহর বান্দা বা দাসত্বমূলক নাম, নবীদের নাম ও সাহাবাদের নামে নাম রাখা উত্তম।
কোন কাফির-মুশরিক বা ফাসিক ব্যক্তিদের নামে
নাম রাখা শরীয়তে নিষিদ্ধ।
কারণ নামের প্রতিক্রিয়া সন্তানের চরিত্রে প্রতিফলিত হয়। হাদীসে এর অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।
আবু দারদা রা.বলেন, রাসুল সা. বলেছেন : কেয়ামতের দিন তোমাদের ডাকা হবে তোমাদের নাম ও তোমাদের পিতাদের নামে ; তাই তোমরা
সুন্দর নাম রাখো।(আবু দাউদ, মিশকাত)আল্লাহ তা'আলা বলেন: তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না।( সূরা হুজরাত 11)
কিন্তু বর্তমান শতকে আঞ্চলিকতা, ভাষাভিত্তিক সংকীর্ণতা ও জাতীয়তাবাদের উগ্রমানসিকতার কারণে ইসলামি-আরবি নাম পরিবর্তন করে দেশীয়
ভাষার নাম রাখা শুরু হয়েছে। এতে মুসলিম সংহতি নষ্ট হচ্ছে। যার ফলে নাম দেখে মুসলিম ও অমুসলিম পার্থক্য করাও কঠিন হচ্ছে। তাছাড়া
বর্তমানে তথাকথিত প্রগতিশীলতার নামে বিজাতীয়, অর্থহীন,ও ফিল্মস্টারদের নামে নাম রাখার কুপ্রথা ব্যাপকভাবে প্রচলন হচ্ছে।
আর এসব নাম রাখার ফলে সন্তানদের উপর এর কুপ্রভাব পড়ছে। যার দৃষ্টান্ত সমাজে অহরহ দেখা যাচ্ছে।
আবার অনেকেই সন্তানের দুটি নাম রাখে, একটি হলো সংক্ষিপ্ত নাম যা অধিকাংশই অর্থহীন ও বিজাতীয় ধরনের।
সংক্ষিপ্ত নামটি ব্যাপকভাবে ডাকা হয়। অপরটি হলো আসল নাম, যা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও কাজে ব্যবহৃত হয়।
সুতরাং প্রত্যেক অভিভাবকদের কর্তব্য হল সে তার সন্তানদের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে এক বা একাধিক যে নামই রাখুক না কেন তা অবশ্যই সুন্দর, অর্থবোধক
ইসলামী নাম বাছাই করে রাখবে।
অতএব নামকরণের ক্ষেত্রে যদি মুসলিমরা ইসলামী নিয়ম নীতি অনুসরণ করে তাহলে মুসলিমদের
বাহ্যিক সংহতি ও পরিচয় মজবুত হবে। ইসলামী নাম রাখার বদৌলতে ইনশাআল্লাহ সন্তানের জীবন সুন্দর ও সুখময় হয়ে উঠবে দুনিয়া ও আখেরাতে।