(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
পৃথিবীর প্রতিটি দেশে প্রতিটি সেক্টরে তাদের নিজেদের কর্মী বা নিজেদের লোক চেনার জন্য নির্দিষ্ট একটি ড্রেসকোড রয়েছে।
এমনকি অনেক দেশে তাদের নিজের জাতি চেনার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট পোষাক।
যেমন ধরুন আমাদের দেশে সাধারনত লুঙ্গি গেঞ্জি দেখে বলে দিতে পারি ইনি বাংলাভাষী, ঠিক তদ্রুপ পাশের দেশ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলভেদে রয়েছে নিজস্ব পোষাক,
পাকিস্তানিদের রয়েছে নির্দিষ্ট পোষাক, আরবের গাল্ফ দেশের এক রকম তো আবার সুদান বা মিসরের আরেক রকম,
আবার মরক্কো, তিউনিসিয়া আলজেরিয়ার রয়েছে আরেক রকম, আবার মৌরিতানিয়ার রয়েছে আরেক রকম।
এই সব পোষাকের ভিন্নতার মধ্যে আমরা বিভিন্ন জাতীকে আমরা সহজেই চিনতে পারি, এভাবেই আল্লাহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠিকে আলাদা করেছেন।
এবার আসল কথায় আসি, আল-আযহার হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ইসলামী বিদ্যাপিঠ।
যা ৯৭০ খ্রীঃ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শত শত বছর ধরে সারা পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দিয়েছে কোটি কোটি ইসলামিক স্কলার।
পৃথিবীর প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেমন একটি নির্দিষ্ট ড্রেসকোড রয়েছে ঠিক তদ্রুপ আল আযহারেরও রয়েছে নিজস্ব একটি ড্রেসকোড।
কারা ব্যবহার করবে?
যে সমস্ত শিক্ষার্থী আল আযহারে ইবতেদায়ি থেকে পড়াশুনা শুরু করেন তারা সহ একেবারে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনকারি সহ সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষিক আযহারের নির্দিষ্ট পোষাকটি পরিধান করেন,
আবার আযহারের ক্বারীরাও এ পোষাকটিই পরিধান করেন তবে পার্থক্য হলো ক্বারীদের পাগড়ির টুপির পেছনের অংশটি আকাশি আর ওলামাদের পেছনের অংশটি কালো।
এ পার্থক্যটি মুলত এ জন্যই করা হয়েছে যেন ক্বারী আর ওলামাদের মধ্যে পার্থক্য করা যায়।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো ইদানিং বাংলাদেশে গনহারে আযহারের এই মুল্যবান ড্রেসকোডটিকে মারাত্নকভাবে অবমুল্যায়ন করা হচ্ছে।
যে সে ব্যক্তি মন মতো এ পোষাকটি গায়ে দিয়ে অবলিলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
এমনকি বাংলাদেশের বায়তুল মুকাররম মার্কেটে এর নকল কপিও বিক্রি হচ্ছে দেদারসে,
এমনকি কিছু বাটপার প্রতারক মিসর থেকে অর্ডার করে দেশে এনে অনলাইনে যার তার কাছে বিক্রিও করছে।
অথচ আযহারের ছাত্র বা শিক্ষক না হয়ে এ পোষাকটি বা টুপিটি গায়ে দেওয়া মারাত্মক একটি অপরাধ।
অনেকেই আমাকে বলেন শখ করে দেই, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আল আযহার পৃথিবীব্যাপী একটি ইসলামিক মিশন, আর আযহারীরা হচ্ছে সে মিশনের সৈনিক।
আর এ পোষাক শুধু মাত্র সেই আযহারী সৈনিকরাই গায়ে দিতে পারবেন।
কারো যদি খুব বেশি শখ লাগে তাহলে আযহারে গিয়ে অন্তত একটি কোর্স করে আসুন তারপর ব্যবহার করুন।
আমরা যেমন ইচ্ছে করলেই আমাদের দেশের আর্মি পুলিশ বা কোন বাহিনির পোষাক গায়ে দিতে পারিনা ঠিক তেমনি আযহারের সাথে সম্পর্ক নাই,
এমন কেউ এ আযহারের পোষাকটি গায়ে দিতে পারেন না
সারা পৃথিবীজুড়ে এ পোষাকটির রয়েছে আলাদা একটি সম্মান মর্যাদা।
আপনি শখের বশে এতোবড় মর্যাদার পোষাকটিকে খাটো করতে পারেন না, এর যত্রতত্র ব্যবহার করতে পারেন না।
বাংলাদেশের সমস্ত আযহারীদের উদ্দেশ্যে বলছি এখনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন, অন্যথায় এই পাগড়ির অপব্যবহার যেভাবে বাড়ছে,
তাতে সেদিন আর বেশিদুর নয় যেদিন দেখবেন আযহারীদের অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে পড়েছে।
ধরুন আপনি কোন মাহফিলে বা মাসজিদে গেছেন দাওয়াতি কাজে, সেখানে আপনার মতো আরও ৫০০ লোক একই পাগড়ি মাথায় দিয়ে ঘুরছে,
আর আপনাকে কমিটি না চিনে বাকিদের মতো মনে করে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলো।
বা ধরুন কোন জাহিল এ পোষাকটি পড়ে কোন অকারেন্স করলো আর পেপারে তার সেই পাগড়ি সহ ছবি আসলো,
একটি বার ভাবুন তখন আযহারের সম্মানটা কোথায় গিয়ে দাড়াবে।
পরিশেষে বলতে চাই আযহারের তরফ থেকে আমানত হিসেবে এর সম্মান রক্ষার দায়িত্ব আযাহারীদেরই।
আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন