(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
প্রত্যেক স্বাধীন মুসলমানের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। চাই সে পুরুষ কিংবা নারী, শহরে বসবাসকারী কিংবা মরু বা গ্রামঞ্চলে বসবাসকারী হোক।
তবে শর্ত হলো, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কুরবানীর ঈদের দিনে নেসাবের অধিকারী অর্থাৎ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সমমূল্যের,
যে কোন মালের মালিক হতে হবে। কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার সবব (কারণ) হলো,
সময় (অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ে কুরবানী করতে হবে) আর তার রোকন হলো, চতুষ্পদ জানোয়ার যবেহ করা।
কুরবানীর উপকারিতা ও ফজিলত হলো, পার্থিব ওয়াজিব দায়িত্ব থেকে মুক্তি লাভ করা এবং পারলৌকিক সওয়াব অর্জন করা।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কুরবানী করতে সক্ষম (অর্থাৎ যার মধ্যে কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্তাবলী পাওয়া যায়।
সে যদি কুরবানী না করে তাহলে, সে যেন আমাদের ঈদগাহে উপস্থিত না হয়। নাউজুবিল্লা!
কাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়?
দাস-দাসী, কাফের, সাধারণ মুসাফির ও হজ্জের উদ্দেশ্যে সফরকারী লোকদের উপর কোরবানি ওয়াজিব নয়।
তবে হজ্জ পালনরত মক্কার স্থানীয় লোকদের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে।
অন্য এক বর্ণনামতে মুহরিমের (অর্থাৎ ইহরাম বাধা ব্যক্তির) কুরবানী করা উচিৎ না। চাই সে মক্কার অধিবাসী হোক বা অন্য কোন স্থানের হোক।
কুরবানী কি শুধু নিজের পক্ষ থেকে ওয়াজিব?
শুধুমাত্র নিজের পক্ষ হতে কুরবানী করা ওয়াজিব। নিজের নাবালেগ সন্তানদের পক্ষ হতে কুরবানী করা ওয়াজিব নয়।
এটা ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)- কর্তৃক বর্ণিত ইমাম আবু হানীফা (রহ.)- এর মত।
তবে হাসান ইবনে যিয়াদ (রহ.)- এর বর্ণনানুযায়ী সদকায়ে ফিতরের ন্যায় নাবালেগ সন্তানদের পক্ষ থেকেও কুরবানী করা ওয়াজিব।
যদি কোন নাবালেগ নেসাবের মালিক হয় তাহলে কি সে কুরবানী করবে?
ফতোয়া এই কথার উপরই যে, যদি নাবালেগ সন্তান মালদার হয় তাহলে পিতা অথবা পিতার অনুপস্থিতিতে তার দাদা বা অসিয়তকৃত ব্যক্তি,
তার মাল থেকে কুরবানী করবে। আর ইমাম শাফেয়ী (রহ.) ও যুফার (রহ.)- এর মতে নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েজ নেই।
পিতা যদি একান্তেই করতে চায়, তবে নিজের সম্পদ থেকেই করবে। ফাতওয়া এ মতের উপরই বলে ‘মাওয়াহিবুর রহমান, নামক কিতাবে উল্লেখ আছে।
কোন প্রাণী কতজনে কুরবানী করতে পারবে ও কুরবানীর জন্তুর বয়স কত হতে হবে?
একটি ছাগল একজনের পক্ষ থেকে এবং একটি গরু বা উট সাত অথবা তদপেক্ষা কম লোকের পক্ষ থেকে কুরবানী করা যাবে।
তবে সাত জনের অধিক সংখ্যকের জন্য জায়েজ নেই।
মাসআলা:
চার প্রকার প্রাণী ব্যতীত অন্য কোন প্রাণী দ্বারা কুরবানী করা যাবে না। ভেড়া, ছাগল, গরু, উট এবং দুম্বা-ভেড়া মহিষ-গরুর পর্যায়ভুক্ত।
আর বন্য ও গৃহ-পালিত এ দুই প্রকারের প্রুজননে যে সকল প্রাণী জন্ম লাভ করে তারা তাদের মায়ের প্রজাতিভুক্ত হবে।
কুরবানীর জন্তুর বয়স কত হতে হবে?
কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য গরু ও মহিষের ক্ষেত্রে তাদের বয়স দুই বৎসরের কম না হওয়া শর্ত এবং উট পাচ বৎসরের কম হলে চলবে না।
ভেড়া, বকরী এবং ঐসকল জন্তু যেগুলি বন্য ও গৃহপালিত পশুর যৌথ প্রজননে জন্মে, সেগুলি এক বৎসরের কম হলে জায়েজ হবে না।
আর দুম্বা যখন ছয় মাস অতিক্রম করে সপ্তম মাসে পদার্পণ করে, তখন কুরবানী করা জায়েজ। তবে ইমাম যাআ ফরানী (রহ.)- এর মতে সাত মাস পরিপূর্ণ হলে তারপর জায়েজ।
দুম্বার জন্য আরেকটি শর্ত হলো, সংশ্লিষ্ট দুম্বা দৈহিক আকৃতিতে এমন হতে হবে,
যেন দুম্বাটিকে যদি এক বৎসর বয়সী অন্য কোন প্রাণীর মধ্যে মিলিয়ে দেওয়া হয় তাকে পৃথক করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
প্রিয় পাঠক যদি লিখাটি পড়ে ভাল লাগে, তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।