ইসলামের আলোকে ছাত্র-শিক্ষকদের মর্যাদা ও কোরবানির চামড়া সংগ্রহ: নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ছাত্র-শিক্ষকদের কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহে বাধ্য করা,
তাদের ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা এবং ভিক্ষাবৃত্তির মতো কাজ করতে বাধ্য করা ইসলামী শিক্ষা ও নীতিমালার পরিপন্থী।
এই প্রসঙ্গে কুরআন, হাদীস এবং হানাফি ফিকহের আলোকে নিম্নোক্ত দিকনির্দেশনা প্রদান করা হলো:
📖 কুরআনের নির্দেশনা:
১. মানুষের মর্যাদা রক্ষা:
“আমি আদম সন্তানদের সম্মানিত করেছি…” —সূরা বনী ইসরাঈল (১৭:৭০)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, আল্লাহ্ তাআলা মানবজাতিকে সম্মানিত করেছেন। তাদেরকে এমন কাজ করতে বাধ্য করা যা তাদের মর্যাদাহানি করে, তা ইসলামী শিক্ষার পরিপন্থী।
📜 হাদীসের দিকনির্দেশনা:
১. ভিক্ষাবৃত্তির নিন্দা:
“উপরের হাত নিচের হাত থেকে উত্তম।” —সহীহ বুখারী, হাদীস: ১৪২৭
এই হাদীসের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সা.) ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করেছেন এবং আত্মনির্ভরশীলতার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন।
⚖️ হানাফি ফিকহের দৃষ্টিভঙ্গি:
১. শিক্ষার্থীদের সম্মান ও মর্যাদা:
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেছেন:
“ফিকহ হচ্ছে নাফসের জন্য কোনটি উপকারী এবং কোনটি অপকারী তা সম্মক অবগত হওয়া।” —কাশফুল আসরার, খ. ১, পৃ. ১১
এই সংজ্ঞা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের এমন কাজে বাধ্য করা যা তাদের মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তা ফিকহের মৌলিক উদ্দেশ্যের পরিপন্থী।
🕌 প্রস্তাবনা:
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের উচিত শিক্ষার্থীদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা এবং তাদেরকে এমন কাজে বাধ্য না করা যা তাদের আত্মসম্মানে আঘাত হানে। আল্লাহ্ তাআলার উপর ভরসা রেখে, সঠিক পদ্ধতিতে রিজিক অর্জনের চেষ্টা করা উচিৎ।
আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ ও আমলের তাওফিক দান করুন। আমীন।
✍️ লিখেছেনঃ হাঃ মাওঃ আব্দুল্লাহ্ আফজাল