মুসলিমবিডি২৪ডটকম
সিরিয়া (শাম) বিজয় হয়েছে গতকাল ৮/১২/২০২৪ তারিখের রবিবার দিনে। পশ্চিমাদের পুতুল স্বৈরাচারী সরকার বাশার আল আসাদের পতনে
এক অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হল আলহামদুলিল্লাহ। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর কাঙ্ক্ষিত বিজয় আসে ইসলামের পক্ষে নিবেদিত প্রাণ মুজাহিদগনের।
এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন সঠিক ইসলামপন্থী সশস্ত্র বাহিনী হায়াত তাহরির আশ-শাম (এইচটিএস)
এইচটিএসের প্রধান আবু মুহাম্মদ আল জোলানি।(بارك الله في حياتكم ) তিনি খোলাফায়ে রাশেদার দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক রাঃ এর বংশধর ।
আবু মুহাম্মদ আল জোলানি-র পরিচয়
আবু মোহাম্মদ জোলানির আসল নাম আহমদ হুসাইন আশ-শারা। ১৯৮২ সালে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন।
তখন তাঁর বাবা সেখানে পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন।
১৯৮৯ সালে তাঁর পরিবার সিরিয়ায় ফিরে আসে। দামেস্কের অদূরে বসতি স্থাপন করে।
২০০৩ সালে সিরিয়া থেকে ইরাকে এসে আবু মোহাম্মদ জোলানি আল-কায়েদায় যোগ দেন।
এই বছরই ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি সেখানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেন। তখন থেকে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে।
২০০৬ সালে জোলানি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হাতে গ্রেপ্তার হন। পাঁচ বছর আটক থাকেন।
গণতন্ত্রের দাবিতে ২০১১ সালে সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে বাশার আল-আসাদ সহিংসতার পথ বেছে নেন।
এর জেরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় জোলানি ছাড়া পান।
এরপর তাঁর নেতৃত্বে সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা আন-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত।
সশস্ত্র গোষ্ঠীটি সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে, বিশেষত ইদলিবে শক্তিশালী হতে থাকে।
প্রথম দিকের কয়েক বছর জোলানি আবু বকর আল-বাগদাদির সঙ্গে কাজ করেন।
বাগদাদি ছিলেন ইরাকের ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রধান।
২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে বাগদাদি আকস্মিকভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন।
সিরিয়ায় নিজেদের তৎপরতা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেন।
একটা পর্যায়ে আইএসআইএল আন-নুসরা ফ্রন্টকে বেশ ভালোভাবে নিজেদের সঙ্গে একীভূত করে ফেলে।
তখনই আইএসআইএলের জন্ম হয়।জোলানি এ পরিবর্তন প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। এ অবস্থায় ২০১৪ সালে আল-জাজিরাকে প্রথমবারের মতো টেলিভিশন সাক্ষাৎকার দেন জোলানি।
এতে তিনি বলেছিলেন,”তাঁর গোষ্ঠী ‘ইসলামিক আইনের’ যে ব্যাখ্যা দেবে, সিরিয়া সেই অনুযায়ী শাসিত হবে।
২০১৬ সালের জুলাইয়ে বাশার সরকার আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ইদলিবের দিকে চলে যায়।
সিরিয়ার এ অঞ্চল তখনো বিদ্রোহীদের দখলে। এই বছরই জোলানি প্রকাশ্যে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করার ঘোষণা দেন।
পাশাপাশি আল-নুসরা বিলুপ্ত করেন। গঠন করেন নতুন সংগঠন জাভাত ফাতেহ আশ-শাম।
২০১৭ সালের শুরুর দিকে আলেপ্পো থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা ইদলিবে পালিয়ে আসেন।
এ সময়ে বিদ্রোহীদের ছোট ছোট অনেক গোষ্ঠী ও নিজের জাভাত ফাতেহ আশ-শাম নিয়ে এইচটিএস গঠন করেন জোলানি।
এইচটিএসের ঘোষিত লক্ষ্যই ছিল বাশার আল-আসাদের স্বৈরাচারী শাসন থেকে সিরিয়াকে মুক্ত করা।
এইচটিএস আজ এই লক্ষ্য অর্জনের ঘোষণা দিল। এইচটিএসের অন্য লক্ষ্যের মধ্যে আছে—সিরিয়ায় ‘ইরানের সব সশস্ত্র গোষ্ঠীকে বিতাড়িত করা’।
নিজেদের দেওয়া ‘ইসলামি আইনের’ ব্যাখ্যা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘সবচেয়ে কার্যকর’ ভূমিকা পালন করেছে এইচটিএস ও এর প্রধান জোলানি।