(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
এমন কোন ব্যক্তি পাওয়া যাবে না, যার সর্বপ্রকারের মঙ্গল ও কামিয়াবীর প্রয়োজন নেই। এ কারণেই আল্লাহ্ তা'আলা
দুনিয়া ও আখেরাতের মঙ্গল ও কামিয়াবীর জন্য বহু উপকরণ এবং বিভিন্ন উপায় নির্ধারণ করেছেন। যাতে
প্রয়োজনগ্রস্ত ব্যক্তি সেগুলোর সাহায্য নিতে পারে এবং বিভিন্ন প্রকারের শান্তি এবং বিপদাপদ থেকে মুক্তি লাভ
করতে পারে। আলোচ্য উপায় ব্যতীত যত উপায় আছে সেগুলি কোনোটি
দুনিয়াবী ফায়দা লাভ হয় আবার কোনোটি দ্বীনি। যে সব উপায় দুনিয়ার ফায়দা লাভ হয়। যেমন- কৃষিকাজ, ব্যবসা
এবং চাকুরী ইত্যাদি। যদিও এগুলো দ্বীনের অনেক সাহায্যকারী হয়। অনুরূপ কিছু জিনিষ আছে যেগুলি দ্বারা
দ্বীনি ক্ষেত্রে বা আখেরাতের ফায়দা হাছেল। হয়। যেমন- নামায-রোযা-হজ্জ ইত্যাদি। এগুলোর আসল ও মৌলিক
উদ্দেশ্য হল দ্বীনি সফলতা। যদিও এর দ্বারা অনেক সময় দুনিয়াবী সফলতাও লাভ হয়। কিন্তু দোয়া এমন একটি
জিনিস যা দ্বীনি সফলতা এবং দুনিয়াবী সফলতা উভয়টির জন্য সমান ভাবে নির্ধারিত হয়েছে। সুতরাং দোয়ার ভিতর
সব ধরনের মঙ্গল নিহিত থাকায় তার গুরুত্ব ও মর্যাদা সুস্পষ্ট। একারণেই কুরআন মজীদ ও হাদীস শরীফে
দোয়ার গুরুত্ব, ফযীলত ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বহু জায়গায় বর্ণিত হয়েছে।
* আল্লাহ্ তা'আলা এরশাদ করেন “তোমরা আমার নিকট দোয়া কর, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব”।
*রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন “সবচেয়ে বড় এবাদত হল দোয়া”।
*অন্য রেওয়ায়াতে আছে: “যে ব্যক্তির দোয়া করার তাওফীক হয়ে গেল, তার জন্য কবুলিয়াতের দরজা খুলে
গেল।
*তিনি আরও বলেন: “আল্লাহ্ তা'আলার দরবারে যে সব
জিনিষ প্রার্থনা করা হয় তার মধ্যে সুখ-শান্তির দোয়াই হল সবচেয়ে প্রিয়”।
অনেকের ধারণা দোয়ার মধ্যে দুনিয়াবী কোনো কিছু চাওয়া জায়েজ নেই। অথচ
এই হাদিস দ্বারা বুঝা গেল যে, দুনিয়াবী প্রয়োজনের কথাও প্রার্থনা- দোয়া করার হুকুম রয়েছে।
*তিনি আরও এরশাদ করেন: “তকদীরের ফয়সালাকে শুধুমাত্র দোয়াই পরিবর্তন করতে পারে”।
দোয়া সকল বিপদাপদে উপকারী। এমনকি ঐ সকল বিপদাপদেও দোয়া উপকারী, যা এখনো অবতীর্ণ হয়নি।
অনেক সময় দেখা যায় যে, কখনো বিপদ নেমে আসে কিন্তু অপরদিক হতে দোয়া তার সঙ্গে মিলিত হয় এবং
কেয়ামত পর্যন্ত উভয়ের মাঝে দ্বন্দ চলতে থাকে। এর দ্বারা বুঝা গেল যে, দোয়া সকল সতর্কতা ও কৌশলের চেয়েও
বেশী উপকারী। একথাও বুঝা গেল যে, মসিবতের পূর্বেও দোয়া করতে থাকবে, ফলে দোয়ার বরকতে আশা করা
যায় মসিবত আসবে না।
*রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো এরশাদ
করেন, “আল্লাহ্ তা'আলার নিকট দোয়ার চেয়ে অধিক সম্মানী এবং অধিক মর্যাদাবান আর কোন জিনিষ নেই।
*তিনি এরশাদ করেন, যে ব্যক্তির নিকট ইহা পছন্দ হয় যে, আল্লাহ তা'আলা বিপদাপদের সময় তার দোয়া কবুল
করুক, তবে সে যেন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময় বেশি বেশি দোয়া করে। এজন্য আমাদের সুখে দুঃখে সব সময়
আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিৎ। এ ছাড়াও এতে সুস্পষ্ট বুঝা যায় যে, মসিবতবিহীন অবস্থার দোয়ার প্রভাব
মসিবতের সময় প্রকাশ পায়।
*তিনি আরও এরশাদ করেন যে, “দোয়ার মধ্যে
হিম্মতহারা হয়ো না, কেননা দোয়া করে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
তিনি আরও বলেন যে, দোয়া মুসলমানের হাতিয়ার, দ্বীনের খুঁটি এবং আসমান ও যমীনের নূর।
সুতরাং আমাদের উচিৎ হলো সব সময় সব কিছুর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা। আল্লাহ আমাদের তাওফিক
দান করুন।