Breaking News
Home / মুহাররম ও আশুরা / আশুরার রোজা ও তার ফজিলত

আশুরার রোজা ও তার ফজিলত

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) 

আশুরার রোজা ও তার ফজিলত

রাসূল (সা.) মদীনায় হিজরত করার পর দেখলেন সেখানকার বনী ইসরাঈলরা অর্থাৎ ইয়াহুদীরা আশুরার দশ

তারিখে রোজা রাখে। রাসূল (সা.) জানতে চাইলেন তারা এই দিনে রোজা রাখে কেন? তাঁকে জানানো হল, এই দিনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর কুদরতে বনী

ইসরাঈলকে সমুদ্র পার করে নিয়েছিলেন, আর ফিরআউন ও ফিরআউনের বহিনীকে সমুদ্রে নিমজ্জিত করেছিলেন।

এর শোকর আদায় করার জন্য মূসা (আ.) রোজা রেখেছেন, কারণ এটা আল্লাহর কত বড় একটা নেয়ামত

ছিল যে, কোন রকম নৌযান ছাড়া এই মহাসমুদ্র তারা পার হতে পেরেছিলেন। আল্লাহর কুদরতে পানি ফাঁক হয়ে

সমুদ্রের মধ্যে রাস্তা তৈরি হয়ে গেল এবং মূসা (আ.) ও তাঁর অনুসারীগণ সেই রাস্তা দিয়ে পার হয়ে গেলেন। আর

ফিরআউন তার বাহিনীসহ সেখানে নিমজ্জিত হলো। এই মহা নেওয়ামতের শোকর আদায় করার জন্য হযরত মূসা

(আ.) এই দিনে রোজা রাখতেন এবং তাঁর অনুসারীরা অর্থাৎ বনী ইসরাঈল তথা ইয়াহুদীরা মূসা (আ.)-এর

অনুসরণে রোজা রেখে আসছিল। রাসূল (সা.) যখন জানতে পারলেন যে, ইয়াহুদীরা তাদের গোত্রের

পূর্বসূরীদের ভাগ্যে আল্লাহর যে নেয়ামত লাভ হয়েছিল সেই নেওয়ামতের শোকর আদায়ের জন্য হযরত মূসা

(আ.)-এর অনুসরণে রোযা রেখে আসছে। তখন তিনি বললেন-
نَحْنُ أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ، فَصَامَهُ وَاَمَرَ بِصِيَامِهِ. رَوَاهُ ابْنُ

مَاجَةَ برقم ١٧٣٤) অর্থাৎ আমরা মূসা (আ.)-এর অনুসরণ তোমাদের চেয়ে বেশি করব। তাই রাসূল (সা.) রোযা রাখা

শুরু করলেন এবং সাহাবীদেরকেও রোযা রাখতে বললেন।

যেহেতু রাসূল (সা.) এই দিনে রোযা রেখেছেন এবং রোযা রাখার কথা বলেছেন তাই এই দিনে রোযা রাখাকে মুস্তাহাব বলা হয়েছে। এই দিনে রোযা রাখার ফযীলত সম্পর্কে

রাসূল (সা.) বলেছেন-

صِيَامُ يَوْمٍ عَاشُورَاءَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ اَنَّ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ. (رواه الترمذي : ٧٥٢: صحيح) অর্থাৎ আমি

আল্লাহর কাছে আশা রাখি যে, আশুরার দিনে রোযা রাখলে পেছনের এক বছরের গুনাহ্ মাফ হয়ে যাবে।

রাসূল (সা.) এ কথাও বলেছিলেন যে, আগামী বছর যদি আল্লাহ আমাকে জীবিত রাখেন, তাহলে এর সাথে আরও

একটা রোজা রাখব। তাই উত্তম হল ১০ তারিখের সাথে সাথে আরেকটা রোযা রাখা, নয় তারিখ বা ১১ তারিখ।

এভাবে ১০ তারিখের সাথে আগে বা পরে আরও একটা মিলিয়ে মোট দুইটা রোযা রাখা উত্তম। যদি কেউ শুধু ১০

তারিখে রোযা রাখে অর্থাৎ একটা রোযা রাখে, সেটা ভাল নয় মাকরূহ্ তানযীহী। দুটো রোযা

রাখাই উত্তম।
মুহাররম মাসের ১০ তারিখ আশুরাকে কেন্দ্র করে কিছু

শিয়াপন্থি লোক বিভিন্ন অনৈসলামিক কাজ করে থাকে। যেমন :- ১০ তারিখ পর্যন্ত  তারা আমিষ জাতীয় কোনো

খাবার খায় না। গোসল করে না। ভালো কোনো কাপড় পরিধান করে না। জুতা পায়ে দেয় না; এমনকি তাদের

এলাকায় কেউ জুতা পায়ে দিয়ে যেতে পারে না। ১০ মুহররম তাজিয়া মিছিল করে। কেউ নিজে নিজের গায়ে

ছুরি মারে। কেউ কেউ তলোয়ার দ্বারা একে অপরের সঙ্গে লড়াই করে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন রেওয়াজ

চালু রয়েছে যা ইসলাম সমর্থন করে না এগুলো থেকে আমাদের বেচে থাকা জরুরি।

আল্লাহ বুঝার তাওফিক দান করুন। আমিন

 

About মুহাম্মদ আবদুল্লাহ

আমি মাওলানা মোঃ আব্দুল্লাহ। 15ই এপ্রিল 1994 ঈসায়ি রোজ শুক্রবার মৌলভীবাজার জেলার হামরকোনায়( দাউদপুর) জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবনের শুরুটা প্রাথমিক বিদ্যালয় দিয়ে হলেও 4 বছরের মাথায় ইসলামিক শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে নিজ উদ্যোগে মাদ্রাসায় ভর্তি হই! আলহামদুলিল্লাহ! সর্বশেষ 2017 ঈসায়ি কওমি মাদ্রাসার উচ্চতর ডিগ্রী মাস্টার্স (দাওরায়ে হাদিস) হযরত শাহ সুলতান রহ. মাদ্রাসা থেকে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল ক্বওমিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করি! নিজে যা কিছু জেনেছি তা লিখনীর মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এবং আমৃত্যু ইসলাম ও মানবতার সম্পর্কে জানতে ও জানাতে এই সাইটের সাথে সংযুক্ত হয়েছি! আল্লাহ আমাকে ও সবাইকে কবুল করুন।আমিন!!!

Check Also

মুহাররম মাসের কিছু বিদআত ও কুসংস্কার

মুহাররম মাসের কিছু বিদআত ও কুসংস্কার

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) মুহাররম মাস ও আশুরাকে ঘিরে যে সমস্ত বিদআত ও কুসংস্কার মুহাররম মাস একটি বরকতপূর্ণ …

Powered by

Hosted By ShareWebHost