(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
প্রসিদ্ধ তাবেঈ হযরত রাবিয়ী রহ. নিজের একটি ঘটনা বর্ণনা করেন যে, একটি মজলিসে গিয়ে আমি দেখলাম লোকেরা পরস্পরে আলোচনা করছে।
আমিও তাদের সাথে বসে পড়লাম। আলোচনার একপর্যায়ে কোনো এক ব্যক্তির গীবত আরম্ভ হয়ে গেল। আমার নিকট তা খারাপ মনে হলো যে,
এখানে মজলিসে বসে কারো গীবতে লিপ্ত হবো। কাজেই আমি সেখান থেকে চলে গেলাম। কেননা শরীয়তের বিধান হলো যে, যদি কোনো মজলিসে গীবত হতে থাকে তাহলে ক্ষমতা থাকলে গীবত করা থেকে লোকদেরকে বাধা দিবে, বিরত রাখবে।
আর যদি বাধা দিতে না পারো তাহলে ওই আলোচনায় শরীক হবে না। ঐ মজলিস ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবে। সুতরাং আমিও উঠে অন্যত্র চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর খেয়াল হলো সম্ভবত আলোচনা শেষ হয়ে গেছে।
কাজেই আমি পুনরায় উক্ত মজলিসে ফিরে এলাম। কিছুক্ষণ এদিক ওদিকের আলোচনার পর পুনরায় দ্বিতীয় ব্যক্তির গীবত শুরু হয়ে গেল। কিন্তু এবার আমার হিম্মত দুর্বল হয়ে গেল, আমি ওই মজলিস ছেড়ে যেতে পারলাম না।
প্রথমে অন্যদের গীবত শুনতে লাগলাম। এক পর্যায়ে আমি নিজেও গীবতের এক দু’টি বাক্য বলে ফেললাম। ওই মজলিস থেকে বাড়িতে এসে রাতে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে এক কিসাঙ্গ ব্যক্তিকে দেখলাম যে,
সে বড় একটি পেয়ালায় করে আমার জন্য গোস্ত নিয়ে এসেছে। আমি যখন ভালোমতো লক্ষ্য করলাম তখন দেখলাম যে উহা শুয়োরের গোস্ত। আর ওই ভয়ানক কালো ব্যক্তি আমাকে বলছে, এই শুয়োরের গোস্ত খাও!
আমি বললাম:- আমি তো মুসলমান।
শুয়োরের গোস্ত কিভাবে খাব? সেই ভয়ংকর লোকটি বলল:- না! তোমাকে এটা খেতেই হবে। এক পর্যায়ে সে লোকটি গোশতের টুকরো জোর করে আমার মুখে পুরে দিতে আরম্ভ করল।
আমি যতই বারন করি সে ততই জোরপূর্বক আমার মুখে ঢুকাতে লাগলো। এমনকি আমার বমির উদ্রেক হওয়া সত্ত্বেও সে আমাকে ছাড় দিল না। এ দারুণ কষ্টকর অবস্থায় আমার চোখ খুলে গেল।
জাগ্রত হওয়ার পর যখন আমি খাওয়ার সময় খাবার খেতে গেলাম। তখন স্বপ্নের সেই শুয়োরের গোস্তের দুর্গন্ধ আমার খাদ্যে অনুভূত হল। সুদীর্ঘ ত্রিশ দিন পর্যন্ত আমার এই অবস্থা অব্যাহত রইল যে,
যখনই খানা খেতে বসি তখন সকল খাদ্যেই সেই শুয়োরের গোশতের মারাত্মক দুর্গন্ধ অনুভূত হয়।
এ ঘটনা দ্বারা আল্লাহপাক আমাকে সতর্ক করলেন যে,
উক্ত মজলিসে আমি যে সামান্য গিবত করেছিলাম তার পরিণাম কত ভয়াবহ। ৩০ দিন পর্যন্ত বরাবর আমি তা অনুভব করতে থাকি। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে গীবত করা ও শোনা থেকে হেফাজত করুন। আমীন