(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
মানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা অবতীর্ণ করেছেন শবে কদরে।
পবিত্র শবে কদর হল হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ এক রাত
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন ” আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি শবে কদরে।শবে কদর সম্পর্কে আপনি কি জানেন?
শবে কদর হল হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।এই রাতে জিব্রাইল আঃ এবং অন্যান্য ফিরিশতা প্রত্যেক কাজের জন্য অবতীর্ণ হন,তাদের পালনকর্তার নির্দেশে।শান্তিই শান্তি,সে রজনী উষার আবির্ভাব পর্যন্ত।(১)”
এই সুরার শানে নূযূল প্রসঙ্গে প্রসিদ্ধ মুফাসসির মুজাহিদ রহ বলেন
অর্থাৎ “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনী ইসরায়েলের এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন,যে এক হাজার মাস আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছেন।
সাহাবারা সেটা শুনে খুব আশ্চর্য হলেন।আল্লাহ তাআলা তখন সুরা কদর নাযিল করলেন।”(২)
শবে কদর হল আশি বছর ইবাদতের থেকে উত্তম
এজন্য যে ব্যক্তি শবে কদর কাজে লাগাতে পারলো না,তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতভাগা বলেছেন।
হযরত আনাস রাযিঃ হতে বর্ণিত, অর্থাৎ “একদা রমযান মাসের শুরুতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
মহিমান্বিত এক মাস এসেছে তোমাদের নিকট।এ মাসে এমন এক রাত রয়েছে, যএ রাত হাজার মাস থেকে উত্তম।
যে এ রাত থেকে বঞ্চিত হল,সে সবধরনের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো
আর হতভাগা ছাড়া কেউ এ রাত থেকে বঞ্চিত হয় না। (৩)
শবে কদর হল পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকে,এজন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ দশকে প্রথম দুই দশকের চেয়ে বেশি ইবাদত করতেন। রাত জাগতেন।
হযরত আয়েশা রাযিঃ বর্ননা করেন।অর্থাৎ ” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর তালাশ কর”।(৪)
ইবনে আব্বাস রাযিঃ বর্ননা করেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
অর্থাৎ “তোমরা শবে কদর অন্বেষণ করো রমজানের শেষ দশকে,নবম,সপ্তম,পঞ্চম তারিখে” (৫)
আবু সাঈদ খুদরী রাঃ বর্ননা করেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
অর্থাৎ” তোমরা শবে কদর তালাশ করো একুশ,তেইশ,পচিশ,ও সাতাইশ তারিখে”(৬)।
আমাদের দেশের অনেকের ধারণা হল
রমজান মাসের ছাব্বিশ তারিখ দিবাগত রাত হলো শবে কদর।কিন্তু নিশ্চিতভাবে ছাব্বিশ তারিখ দিবাগত রাত শবে কদর পালন করা ভুল।
তবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু রমজানের শেষ দশকে বেজোড় রাতে শবে কদরকে তালাশ করতে বলছেন।
এজন্য সাতাইশ তারিখের রাতে ও শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া উবাই বিন বিন কা'ব রাঃবেশ দৃঢ়তার সাথে বলেনযে,অর্থাৎ ” আল্লাহর শপথ! এ রাতের ব্যপারে আমার জানা সবচেয়ে বেশি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কে ছাব্বিশ তারিখ দিবাগত রাতে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।(৭)
কত তারিখ শবে কদর
এ বিষয়ে আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলী রহঃ অনেকগুলো মত লিখেছেন।এজন্য সাতাইশ তারিখ শবে কদর,এমনটা দৃঢ়ভাবে বলার সুযোগ নেই।
পড়ুন শবে কদর রমযানের শেষ দশকে, পবিত্র শবে কদর নিয়ে পর্যালোচনাঃ নঙ্গে আসলাফ আফজাল,
তবে হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।বান্দার জন্য উচিত হল,শেষ দশকের প্রত্যেক রাত আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকা।
মহান আল্লাহ পাক সঠিক পথে পরিচালিত করুন আমীন।
তথ্য সুত্র
(১) সুরা কদর (২)তাফসীরে ইবনে জারির তাবারি ৩০/২৮৪, (৩) সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস নম্বর ১৬৪৪, (৪) বুখারী শরীফ হাদিস নম্বর ২০১৭
(৫) বুখারী শরীফে হাদিস নম্বর ২০২১ (৬)মুসনাদে আহমদ হাদিস নম্বর ১১৬৭৯.(৭) মুসলিম শরীফ হাদিস নম্বর ৭৬২.
লিখক
কারী মাওলানা মিজানুর রহমান সাইফ
শিক্ষক দারুল উলুম সোনাপুর রূপাপুর মাদ্রাসা
খতীব পশ্চিম সোনাপুর কেন্দ্রীয় শাহী জামে মসজিদ। বালাগঞ্জ,সিলেট,মোবাইল 01743259179