Breaking News
Home / ইসলাম ধর্ম / খতমে তারাবীহ এর হাদিয়া প্রসঙ্গে মাসআলা

খতমে তারাবীহ এর হাদিয়া প্রসঙ্গে মাসআলা

(মুলিমবিডি২৪ ডটকম)

খতমে তারাবীহ এর হাদিয়া প্রসঙ্গে মাসআলা

মহানবী (সা:) ইরশাদ করেন: “তোমরা কোরআনে করীমের তিলাওয়াত করো কিন্তু এর দ্বারা কোন উপার্জন করোনা।”

এছাড়া বিভিন্ন হাদীসে কুরআনে করীম তিলাওয়াত করে এর বিনিময় গ্রহণ করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।

এজন্য হানাফী মাযহাবের প্রথম বক্তব্য ছিল যে, কুরআনে করীম দিয়ে, আজান দিয়ে, কিংবা ইমামতি করে এর কোন বিনিময় গ্রহণ করা আদৌ জায়েজ নয়।

পূর্ববর্তী যুগে কুরআন শিক্ষা দানকারী তথা দ্বীন ইলমের শিক্ষক, ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে সরকারের পক্ষ থেকে বেতন দেয়া হত;

জনগণের কাছ থেকে তাদের কোন কিছু গ্রহণ করা আদৌ প্রয়োজন ছিল না।

কিন্তু বর্তমান যুগে সে ব্যবস্থা না থাকায় বিনা বেতনে শিক্ষা দেয়া, আজান দেয়া কিংবা ইমামতি করার মতো লোক পাওয়া খুবই মুশকিল।

কারণ, সকলেরইতো জাগতিক প্রয়োজনাদি রয়েছে যা অস্বীকার করা যাবে না।

ে দ্বীনের হেফাযতের প্রয়োজনে পরবর্তীতে হানাফী মাযহাবের ফিকুহবিদগণ ঐ সকল দ্বীনি বিষয়ের বিনিময় গ্রহণ করাকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন।

কারণ, এগুলো বন্ধ হয়ে গেলে দ্বীনে টিকে থাকাই হয়ে পড়বে প্রায় অসম্ভব।

যেমন, কুরআনে করীম ও দ্বীনি ইলমের শিক্ষা দান, ইমামতি এবং আজান দেয়া।

কিন্তু এমন দ্বীনি ব্যাপার যা বন্ধ হয়ে গেলে ইসলাম টিকে থাকতে কোন অসুবিধার সৃষ্টি হবে না সেগুলোর বিনিময় নেয়াকে পরবর্তী উলামাগণও না-জায়েয বলে ঘোষণা করেছেন। যেমন,

(ক)

মৃতব্যক্তির ঈসালে সওয়াব হিসেবে কুরআনে করীম তিলাওয়াত করা। কেননা, এই তিলাওয়াতের উপরতো ইসলাম ধর্ম টিকে থাকা নির্ভরশীল নয়।

যদি ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে তিলাওয়াত করা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এতে দ্বীনের কোন ক্ষতি হবে না।

মৃত ব্যক্তির আত্বীয়-স্বজন কিংবা অন্যান্য ব্যক্তিগণ একমাত্র আল্লাহর ওয়াস্তে বিনা বিনিময়ে তিলাওয়াত করে ঈসালে সাওয়াবের কাজ সম্পাদন করতে পারবে।

সকলের পক্ষে এ কাজ সম্ভব। তথাপিও বিনা বেতনে যদি কেউ এ কাজ সম্পাদন না করে তাহলে দ্বীনে ইসলামের কোন ক্ষতি হবে না।

বিধায়, ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে কৃত তিলাওয়াতের বিনিময় গ্রহণ বৈধ নয়।

(খ) ঠিক তেমনি একটি বিষয় হচ্ছে ে কুরআনে করীম খতমে করা। কেননা, ইহাও দ্বীনের জরুরী ব্যাপার নয়;

যা ব্যতিরেকে দ্বীন টিকে থাকা অসম্ভব। কেননা, বিনিময় ছাড়া একমাত্র আল্লাহর ওয়াস্তে খতম এর জন্য কোন হাফিজ সাহেব পাওয়া না গেলে,

আমপারার নির্দিষ্ট কয়েকটি সূরার দ্বারাই তারাবীহ এর নামাজ আদায় করা সম্ভব।

বিধায়, পরবর্তী যুগের উলামায়ে কিরামের মত তারাবীহ এর নামাজে খতম করে বিনিময় নেয়া মোটেই জায়েয নয়।

যদি বিনিময় দেয়া হয় তাহলে বিনিময়দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ই গোনাহগার হবেন। ইহাই হানাফী মাযহাবের কিতাবসমূহে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

তবে হ্যা, হাফিজ সাহেব যদি একমাত্র আল্লাহর ওয়াস্তে তিলাওয়াত করেন,

কোন বিনিময় নেয়া তার উদ্দেশ্য না হয় আর বিনিময় হিসেবে নয় কেবল আল্লাহর ওয়াস্তে তাকে কোন হাদিয়্যাহ দেয়া হয়, তাহলে ইহা অবশ্যই জায়েয।

কিন্তু বর্তমান যুগে এর বাস্তবতা কোথায়? দাতা টাকা দেওয়াকে জরুরী মনে করেন আর হাফিজ সাহেবকে টাকা না দিলে দ্বিতীয়বার তাকে পাওয়া যাবেনা।

অপরপক্ষে “প্রচলিত রীতি যেন সিদ্ধান্তকৃত” এ নীতি বাক্যটি সর্বজনসম্মত।

বিধায়, আল্লাহর ওয়াস্তের বাস্তবতা কোথায়? তাই এ জাতীয় মৌখিক হাদিয়্যাহ এবং মৌখিক আল্লাহর ওয়াস্তের কীন অর্থ নেই। যা না-জায়েয তা না-জায়েযই থেকে যাবে।

বর্তমান যুগে প্রায় সকল জায়গাতেই এমন কাণ্ড ঘটে থাকে ফলে কোন কোন আলেম হাফিজ সাহেবকে টাকা দেয়া বৈধ হবার একটি কৌশল বর্ণনা করে গেছেন ।

একটি কৌশল

যেমন, মুফতিয়ে আযম হযরত মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ সাহেব (রহ্.) বর্ণনা করেন যে,

আল্লাহর ওয়াস্তে তারাবীহ এর নামাজ পড়ানোর জন্য যদি কোন হাফিজে কোরআন পাওয়া না যায়,

বিনিময় ছাড়া তারাবীহ এর নামাজে খতমে কুরআন যদি সম্ভব না হয় আর মুক্তাদীগণ যদি খতমে কুরআন শুনতে চান।

তাহলে তারা যেন এক মাসের জন্য হলেও হাফিজ সাহেবকে মসজিদের নায়েবে ইমাম ধার্য্য করে নেন।

আর নায়েবে ইমাম ধার্য্য করে তার জিম্মায় দু-এক ওয়াক্তের নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব দিয়ে দিলে তাকে বিনিময় দেয়া জায়েয হবে।

যেহেতু ইমামতির বিনিময় দেয়া নয়। এই কৌশলের সাথে মুফতিয়ে আযম হযরত মাওলানা মাহমূদুল হাসান গাঙ্গুহী (রহ.) (ফাতা: মাহমূদিয়্যাহ-৭/১৭৬-১৭৭) সহ,

অনেক উলামায়ে কেরাম একমত পোষণ করলেও হাকীমূল হযরত থানবী (রহ.) (ইমদাদুল ফাতা: ১/৪৮৪-৪৮৫) সহ,

অনেকে এতে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে এ জাতীয় কৌশল দ্বারা কোন কাজ হবে না। কেননা, শরীয়তের স্পষ্ট বিধান হল প্রত্যেক বিষয়ই উদ্দেশ্যের উপর নির্ভরশীল।

আর এখানে ইমামতি মূল উদ্দেশ্য নয়, বরং খতম তারাবীহ-ই মুখ্য উদ্দেশ্য। আর যদি ইমামতিই মূল উদ্দেশ্য হয় তাহলে বিনিময় দেয়া না-জায়েয হবে না।

(সূত্র: নির্বাচিত ফাতাওয়া মাসাইল-৪৮,৪৯)

About Admin

আমার নাম: এইচ.এম.জামাদিউল ইসলাম ঠিকানা: সিলেট, বাংলাদেশ। আমি কোরাআনের খেদমতে আছি এবং MuslimBD24.Com সাইটের ডিজাইনার (Editor) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায়, তাই সময় পেলে দ্বীন ইসলাম প্রচারের সার্থে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখালেখি করি। যাতে করে অনলাইনেও ইসলামিক জ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞানহীন মানুষ, ইসলামিক জ্ঞান সহজে অর্জন করতে পারে। একজন মানুষ জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিজের জীবনকে ইসলামের পথে চালাতে গেলে ইসলাম সম্পর্কে যে জ্ঞান অর্জন করার দরকার, ইনশা-আল্লাহ! এই ওয়েব সাইটে মোটামুটি সেই জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। যদি সব সময় সাইটের সাথে থাকে। আর এই সাইটটি হল একটি ইসলামিক ওয়েব সাইট । এ সাইটে শুধু দ্বীন ইসলাম নিয়ে লেখালেখি হবে। আল্লাহ তায়ালার কাছে এই কামনা করি যে, আমরা সবাইকে বেশী বেশী করে ইসলামিক জ্ঞান শিখার ও শিখানোর তাওফিক দান করুন, আমিন। তাজবীদ বিষয়ে কিছু বুঝতে চাইলে যোগাযোগঃ 01741696909

Check Also

অধিক হারে ইস্তেগফারের ফজিলত

ইস্তেগফারের ফজিলত

হামদ ও সালাতের পর… রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যত ভালো কাজ শিক্ষা দিয়েছেন, তাতে …

Powered by

Hosted By ShareWebHost