তৃতীয় পর্ব পড়তে নিচের লেখাতে ক্লিক করুন
( ঈমানের পরিচয় ও তাঁর প্রকার ৩য় পর্ব )
ঈমানের পরিচয় ও তাঁর প্রকার
৪র্থ পর্ব
১২. ঈমান ও ইসলামের মধ্যকার পার্থক্য:
আভিধানিক অর্থে ঈমান হচ্ছে কোনো কিছুকে বিশ্বাস ও সত্যায়ন করা। আর ইসলাম হচ্ছে আত্মসমর্পণ।
ফলত ইসলাম আভিধানিকভাবে ঈমানের তুলনায় ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। কেননা ইবাদত করা যেমন আত্মসমর্পণ, তেমনি বিশ্বাস করো একপ্রকার আত্মসমর্পণ।
তবে হ্যাঁ পরিভাষায় ঈমান ও ইসলাম এক। কতক ইমাম অবশ্য বলেন, এক নয়,বরং ও উভয়ের মধ্যে একটা পার্থক্য রয়েছে।
যেমন ঈমানের সম্পর্ক হলো বিশ্বাসের সাথে,
আর ইসলামের সম্পর্ক হল আমলের সাথে। অবশ্য এ পার্থক্যসত্তেও একটি অপরটির জন্য আবশ্যক। যেমন ইসলাম যদি হয় দেহ, ঈমান হল তাঁর প্রাণ।
ইসলাম হচ্ছে বাহ্যিক সমর্পণ, আর ঈমান হচ্ছে আত্মিক সমর্পণ। আবার কতক ইমাম বলেন, একসাথে যদি উভয় শব্দ ব্যবহার হয়, তখন অর্থ হবে ভিন্ন ভিন্ন।
পক্ষান্তরে যদি পৃথকভাবে ব্যবহার হয়, তাহলে যেকোনো একটি উভয় শব্দের অর্থকে অন্তর্ভুক্ত করবে।
১৩. ঈমানের জন্য কি আমল শর্ত
আলেমদের মধ্যকার এ বিষয়ে ইখতেলাফ হচ্ছে শব্দগত ইখতেলাফ। আমলকে যারা ঈমানের অংশ মনে করেন,
তারা খাওয়ারিজদের ন্যায় এমন অংশ বলেন না যে, আমল না থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মুমিনেই থাকবে না।
আবার আমলকে যারা ঈমানের অংশ মনে করেন না তারা আমলের প্রয়োজনকে অস্বীকার করেন না।
ইমাম আবু হানিফা রহ. বলেন,
আর আমল যেমন ঈমান নয়, ঈমানও তেমনই আমল নয়। যেমন অনেক সময় আছে, মুমিনের জিম্মা থেকে আমল রহিত।
(এর ফলে) তার থেকে ঈমান রহিত হয়ে গেছে এমন কথা বলা বৈধ নয়। যেমন ঋতুমতী নারী থেকে আল্লাহ নামাজকে রহিত করে দিয়েছেন।
সে ক্ষেত্রে একথা বলা বৈধ নয় যে, তা থেকে ঈমানকে রহিত করে দিয়েছেন এবং তাকে ঈমান ছেড়ে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
… একই সাথে গরীবের উপর জাকাত নেই এমন কথা বলা বৈধ হলেও( যাকাতের বিধান নেই )বলে গরিবের ঈমান নেই বলা কিন্তু বৈধ নয়।(আল ওয়াসিয়্যাহ-৫০)
তিনি আরো বলেন,
মুমিনগণ আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস থেকে নামাজ-রোজা-হজ-জাকাত এবং আল্লাহর জিকির ইত্যাদি আদায় করে।
বিষয়টা এমন নয় যে নামাজ-রোজা-হজ-জাকাতের কারণে তারা আল্লাহর উপর ঈমান রাখে।(আল-আলিম- ওয়াল- মুতাআল্লিম-৬৬)
সূত্র: বুনিয়াদি আকাইদ
লেখক: মাওলানা বেলাল বিন আলী