(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)

চরিত্র বিনির্মাণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপকারী হয় কোন বুযুর্গের সাথে আত্মশুদ্ধির সম্পর্ক রাখা।
হযরত মাওলানা মোঃ মনজুর নোমানী রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন,
আপনারা হয়তো বড়দের কাছে শুনেছেন বা কোন কিতাবে পড়েছেন যে,
হযরত গাঙ্গুহি রাহিমাহুল্লাহ এবং আমাদের অন্যান্য আকাবির,ছাত্রদেরকে বাইয়াত করতেন না।
যতক্ষণ না তাদের প্রথাগত ছাত্রত্বের অবসান হতো,তাদেরকে তারা সুলুক ও আধ্যাতিক সাধনার পথের যিকর সুগোল থেকে বিরত রাখতেন।
স্বয়ং হযরত তানবি রহিমউল্লা নিজের ঘটনা লিখেছেন যে,
ছাত্র জামানায় তিনি হযরত গাঙ্গুরী রহঃ কাছে বায়াতের দরখাস্ত করেছিলেন,কিন্তু তিনি তা কবুল করেননি।
বরং বলে দিয়েছিলেন যে,এটা শয়তানের ওয়াসওয়াসা। অর্থাৎ শয়তান তালিবে ইলমের নিমগ্নতা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য,
বাহ্যত একটি নেক চিন্তা মনে ডুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে
কোরআন ও সুন্নাহের গভীর আলিম অর্জন করা থেকে মাহরুম রাখা।
এ বিষয়ে আসল কথা এই যে তখনকার বায়াত এখনকার মত ছিল না।
তখন বায়াত হওয়ার পর মুরিদকে সুলুক ও আধ্যাত্মিকতার দীর্ঘ সাধনায় নিয়োজিত করা হতো।
জিকিরের লম্বা লম্বা অজিফা দেয়া হতো। সেই সঙ্গে শুরু হয়ে যেত মুজাহাদা ও আত্ম দমনের কঠিন সিলসিলা।
তারপর সালিক এর ভেতর দেখা দিত, মুজাহাদার বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া
এবং আধ্যাত্মিক জগতের তরক্কির বিভিন্ন মারহালা অতিক্রম করার ধারাবাহিকতা।
এর অনিবার্যফল এই হতো যে, ইলিমের প্রতি মনোনিবেশ ও নিমগ্নতা হ্রাস পেত, বরং লোপ পেতো।
জিকিরের মজা পাওয়ার কারণে ইলমি মেহনতকে তখন মনে হতো বে মজা।
কারণ যারা জিকিরের স্বাদ পেয়ে যায় তাদের কাছে সবকিছু বিষাদ হয়ে যায়।
তখন রসহীন কিতাবে মন বসানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এক কথায় তার জীবন ও জগত তখন অন্যরকম এবং অন্য কিছু হয়ে যায়।
তো এ কারণেই হযরত গাঙ্গুহী রাহিমাহুল্লাহ এবং আমাদের অন্যান্য আকাবির
ইলমে দিনের তলবে নিয়োজিত কোন তালিবকে বায়াত করতেন না।
এবং সুলকের সালিক হওয়ার অনুমতি দিতেন না। যাতে তারা আধ্যাত্মিক সাধনা
ও রুহানি মুজাহাদার জগতে ডুবে গিয়ে ইলমে দিনের গভীরতা থেকে বঞ্চিত না হয়।
এটা এজন্য ছিল না যে, তালিবে ইলমের তাকওয়া ও আত্মশুদ্ধির প্রয়োজন নেই এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্কের জরুরত নেই।
একারণে হযরত গাঙ্গুহী রাহিমাহুল্লাহ এর খলিফা গন এবং তাদের পরবর্তী গন কর্মপন্থা পরিবর্তন এনেছেন।
তালিবে ইলিমদের ও বায়াত গ্রহণ করা শুরু করেছেন।
তাই আমাদের জন্য উচিত কোন আল্লাহু ওয়ালা বুযুর্গের সঙ্গে সম্পর্ক করে নেওয়া।
এবং পূর্ণনিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে তার হেদায়েত অনুসরণ করে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা।
আল্লাহর সঙ্গে তো একজন সাধারন মুমিনের ও সম্পর্ক রয়েছে। যাররা পরিমাণ ঈমান যার আছে, তারও আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
কিন্তু যারা নবীর ওয়ারিশ ও উত্তরাধিকারী হবেন, যারা উম্মতের রহনুমায়ীর মহা দায়িত্ব পালন করবেন,
তাদের জন্য প্রয়োজন আল্লাহর সঙ্গে অতি উচ্চস্তরের সম্পর্ক করে নেওয়া, তাদের তো হতে হবেই আউলিয়া আল্লাহ।
এতটুকু হতেই হবে এ পথের চলা অব্যাহত রাখার জন্য এবং শয়তান ও শয়তানিয়াত থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য।
আবার সঙ্গে যদি সামান্য পরিমাণ জিকির আজকারের প্রতিও মনোনিবেশ করেন, তাহলে তো সেটা হবে নুরুন আলা নূর।
আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন।
আরো পড়ুনঃ
তাবলীগ ও বিশ্ব ইজতেমা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য,। মুতআ বিয়ে ইসলাম স্পষ্ট হারাম, পানি পানে সতর্কতা খুবই জরুরি; পানি জীবন পানিই মৃত্যুর কারণ