(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
গীবতের জঘণ্যতা, গীবতের পরিচয় এবং গীবত ও অপবাদের পার্থক্য…
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━
❏❏ গীবতের জঘণ্যতা
গীবতের গোনাহ কি মদ পান করার মত গোনাহ? শুকর খাবার মত গোনাহ? চুরি করার মত গোনাহ? ডাকাতি করার মত গোনাহ?
না, তা নয় বরং এই সবগুলো থেকেও আরো মারাত্মক গোনাহ। কারণ মদপান করা আর শুকর খাওয়ার সম্পর্ক শুধু আল্লাহর হকের সঙ্গে।
কেউ যদি মদ পান করে বা শুকরের গোস্ত খায় তাহলে তার এ গোনাহ শুধু তার পর্যন্তই সীমিত থাকে।
অন্য কোন বান্দার হকের সঙ্গে তা জড়িয়ে যায় না। ফলে আল্লাহ তাকে কখনো তাওবার তাওফীক দিলে তিনি তা ক্ষমা করে দিবেন।
কিন্তু গীবতের গোনাহের সম্পর্ক বান্দার হকের সঙ্গে। আর বান্দার হকের নীতি হল,
যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ হকদার ক্ষমা না করবে ততক্ষণ তা ক্ষমা পাওয়ার কোন উপায় নেই।
হাজার তাওবা করতে থাক; দিন রাত নামায-রোযা করতে থাক; তাতে তা ক্ষমা হবার নয়।
আল্লাহর বিধান হল, আমার হক তো আমি ক্ষমা করে দিব কিন্তু যদি আমার কোন বান্দার জান মালের ক্ষতি কর
বা তার ইজ্জতের কোন ক্ষতি কর অথবা তার অন্য যে কোন ক্ষতিই তুমি কর তাহলে যতক্ষণ সে তোমাকে ক্ষমা করবে না
বা তার হক তুমি আদায় করবে না ততক্ষণ আমি ও তোমাকে ক্ষমা করব না। বান্দার হকের বিষয়টি এতই কঠিন ও জঘন্য।
কিন্তু আমরা এটাকে এত সহজ বানিয়ে রেখেছি, যেন নাকে একটা মাছি বসল আর হাত নেড়ে তাড়িয়ে দিলাম।
এর চেয়ে কোন বড় ব্যাপার নয়। মনে রাখবেন, গীবত কিন্তু বান্দার হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
❏❏ গীবতের পরিচয়
গীবত বলা হয়, কোন মানুষের অগোচরে অন্যের কাছে এমনভাবে তার আলোচনা করা যা সে জানলে অপছন্দ করবে।
এবার নিজের হিসাব করে দেখুন! সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরস্পর যে কথাবার্তা বলা হয় তাতে কী পরিমাণ গীবত করে থাক।
কোন কোন মানুষ বলে আমি তার ব্যাপারে যা বলেছি, তা আমি তার সামনেও বলতে পারব।
তারা বুঝাতে চায় যে, গীবত তো তখন হবে যখন আমি তার সামনে তা বলতে পারব না। আর একথা তো আমি তার সামনেও বলতে পারব।
মনে রাখবে তুমি একথা তার সামনে বলতে পার আর না পার, তাতে কিছু যায় আসে না। যদি একথা এমন হয়ে থাকে যে,
তা জানলে সে অপছন্দ করবে তাহলে অবশ্যই তা গীবত ও গোনাহের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে এবং তুমি মৃত ভাইয়ের গোস্ত খেয়ে ফেলেছ। নাউযুবিল্লাহ।
❏❏ গীবত ও অপবাদের পার্থক্য
হাদীস শরীফে এসেছে, এক সাহাবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
আমি যার দোষ বর্ণনা করছি বাস্তবেই যদি তার মধ্যে ঐ দোষ থাকে, তাহলেও কি তা গীবত হবে?
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাঁ! তুমি যদি তার বাস্তব ও সত্য দোষের কথা বল তাহলেই তা গীবত হবে।
আর যদি তার এমন কোন দোষ বর্ণনা কর যা তার মধ্যে নেই তাহলে তো গীবতের সঙ্গে সঙ্গে মিথ্যা অপবাদের গোনাহও হবে।
কোন ব্যক্তির মধ্যে একটি দোষ আছে এবং সে দোষটা তুমি কোন মজলিসে বলে দিলে, যেমন, তুমি বললে, অমুকে বড় মিথ্যাবাদী।
আর বাস্তবেও সে মিথ্যাবাদী। তাহলে তার অগোচরে তোমার এই মিথ্যাবাদী বলা গীবত এবং গোনাহ।
আর যদি বাস্তবে সে মিথ্যাবাদী না হয় তবুও তুমি তাকে মিথ্যাবাদী বল তাহলে এক্ষেত্রে তুমি দুটি গোনাহ করলে।
একটি, গীবত করার গোনাহ। আরেকটি, মিথ্যা অপবাদ দেয়ার গোনাহ। গীবত খুবই জঘন্য গোনাহ।
মানুষকে তার যবান নিয়ন্ত্রণ করে রাখা চাই এবং আল্লাহর কাছে তার অনিষ্টতা থেকে নিরাপদ থাকার দোয়া করা চাই।
তাহলেই তার পক্ষে গীবত থেকে বাঁচা সম্ভব। অন্যথায় সে কোন না কোনভাবে তাতে লিপ্ত হয়েই যাবে।
সুত্রঃ ইসলাহী মাজালিস | পৃষ্ঠা-১১৩