মুসলিমবিডি২৪ডটকম
টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস হল দুটি প্রধান ডায়াবেটিস, যেগুলোর কারণ ও চিকিৎসা ভিন্ন: এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
১. টাইপ ১ ডায়াবেটিস:
এটি একটি অটোইমিউন রোগ। শরীরের ইমিউন সিস্টেম ভুলবশত প্যানক্রিয়াসের ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষ ধ্বংস করে দেয়।
ফলে ইনসুলিন তৈরি হয় না বা খুব কম হয়।সাধারণত শিশু, কিশোর বা তরুণদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
আরো পড়ুন👉 সুস্থ থাকার মূলমন্ত্র
২. টাইপ ২ ডায়াবেটিস:
এটি ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স জনিত রোগ। শরীর ইনসুলিন তৈরি করলেও সঠিকভাবে কাজ করে না।
মূলত প্রাপ্তবয়স্ক বা মধ্যবয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে এখন শিশুদের মধ্যেও দেখা যায়।
কারণ : ওজন বৃদ্ধি, অনিয়মিত জীবনযাপন, জেনেটিক ইত্যাদি।
উভয় ক্ষেত্রেই নিয়মিত ব্লাড সুগার চেক ও জীবনযাপন নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা আলাদা:
টাইপ ১ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা:
ইনসুলিন থেরাপি: প্রতিদিন ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয় (বিভিন্ন টাইপের: শর্ট, লং-অ্যাকটিং)
ব্লাড সুগার মনিটরিং: প্রতিদিন একাধিকবার চেক করতে হয়
সুষম খাদ্যাভ্যাস: নির্দিষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করতে হয়
ব্যায়াম: নিয়মিত হালকা ব্যায়াম রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
আরো পড়ুন 👉 তারুণ্য ধরে রাখার কৌশল
টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা:
খাদ্য নিয়ন্ত্রণ: চিনি ও উচ্চ ক্যালোরি জাতীয় খাবার পরিহার করা
ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন কমানো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর
ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম
মেডিসিন: যেমন মেটফর্মিন, সুলফোনাইল ইউরিয়া, ইনসুলিন (প্রয়োজনে)
রক্ত পরীক্ষা: নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা চেক করা
আরো পড়ুন 👉 পানি পানে সতর্কতা খুবই জরুরি; পানি জীবন পানিই মৃত্যুর কারণ
দুই ক্ষেত্রেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক। নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হার্ট, কিডনি, চোখ ও পায়ে জটিলতা হতে পারে।
ডায়াবেটিস একবারে নির্মূল করা সম্ভব?
ডায়াবেটিস একেবারে নির্মূল করা সাধারণত সম্ভব নয়, বিশেষ করে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে।
তবে টাইপ ২ ডায়াবেটিস অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ বা রিমিশন (সুগার নরমাল থাকা) সম্ভব, যদি:
- ওজন কমানো যায়
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা হয়
- নিয়মিত ব্যায়াম করা হয়
- স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়
টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়মিত জীবনযাপন ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়,
যেখানে ওষুধ ছাড়াও সুগার স্বাভাবিক থাকে। তবে তা স্থায়ী “নির্মূল” নয়—জীবনধারায় গাফিলতি হলে তা আবার ফিরে আসতে পারে।