(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
বাংলাদেশের প্রধান ধর্ম বা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। কিন্তু দেশটি ইসলামি রাষ্ট্র নয়।
এখানে সব ধর্ম ও ধর্ম মতের সমান অধিকার সাংবিধানিকভাবে বিদ্যমান। ফলে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বললে,
এখানে রাষ্ট্রিয়ভাবে কাউকে ‘কাফের', কাউকে ‘অমুসলিম' বা কাউকে ‘অবাঞ্ছিত'— বলবার কিংবা করবার সুযোগ নেই।
যে সুযোগ নেই, সেটি রাষ্ট্র করতে পারে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তো নয়ই।
সুতরাং কাদিয়ানিকে রাষ্ট্রিয়ভাবে ‘কাফের' বা ‘অমুসলিম' ঘোষণা করবারও সাংবিধানিক কোনো সুযোগ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের নেই।
এ দাবি মান্য করা তাই রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়। খুব জটিল প্রক্রিয়া এটি। আর যদি মানতেই হয়, তবে এর জন্য আগে আইন করতে হবে।
সেখানেও অবশ্য থেকে যাবে নানান ইজমা-কেয়াস। সে এক বিশাল বিতর্ক ও দীর্ঘসূত্রিতা। এরপরও সম্ভব, দীর্ঘসূত্রী হলেও।
যদিও সেখানে লেগে থাকবে ‘ধর্ম বিরোধিতার মানদণ্ড' নিয়ে আরেক বিতর্ক!
এছাড়া আইন করলেও সমাধান হবে না। ধর্ম মানা বা না মানার স্বাধীনতা আমার-আপনার সমান অধিকার।
রাষ্ট্র সেটি চাপিয়ে দিতে পারে না। রাষ্ট্র যেটি করতে পারে, আমার ধর্মমত বা বিশ্বাস নিয়ে কেউ বিষোদ্গার করলে, আঘাত করলে তাকে বাঁধা দেয়া।
নিরুৎসাহিত করা, শাস্তি দেয়া। সে যে ধর্মেরই হোক না কেন। যা এখন বিদ্যমান।
কিন্তু এটি একেবারেই সহজ হয় তখন, যখন দেশ হয় ধর্মরাষ্ট্র। ধর্মীয় আইন প্রয়োগের বৈধতা থাকে তখন।
মনে রাখা ভাল, বাংলাদেশ কোনো ধর্মরাষ্ট্র নয়, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের দেশ। আর তাই—
হেঁ, আর তাই, রাষ্ট্রে না হোক ধর্মীয় সমাজে— তারা শান্তিপূর্ণ ‘অবাঞ্ছিত' হতে পারে।
তাদের মত ও পথ যদি ইসলামের নামে, ইসলামের দোহাই দিয়ে ইসলাম বিরোধী হয়, তাহলে মুসলমান সমাজে তারা প্রত্যাখ্যাত হতে পারে,
অবাঞ্ছিত হতে পারে। ওপেন স্পেসে মেধা ও যুক্তি নির্ভর সঠিক জবাব দিয়ে তাদেরকে ইসলামের মিথ্যে, ভুল,
বিভ্রান্ত বা ইসলাম বিরোধী মত ও পথ প্রচারকারী হিশেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। যেটি চলমান।
নোট: এখানে বলে নেয়া ভাল যে, কাদিয়ানিরা যা করছে, তা মিথ্যা এবং ভুল।
‘আহমদিয়া মুসলিম জামায়াত' বললেও তারা নিজেদের যে আদর্শ-বিশ্বাস লালন ও প্রচার করে তা সরাসরি ইসলাম বিরোধী।
তারা প্রকৃত অর্থে মহান রাব্বে কারিম ও তাঁর পেয়ারা নবী, শেষ পায়গাম্বর রাসুলে পাক (স.)কে অস্বীকার করছে।
ইসলামের আলোকে এটি স্পষ্ট কুফরি। মূলত ইসলামের নামে তারা একরকম নীরব ক্রসেড করছে।
যে বীজ এক সময় বৃটিশরা ভারতীয় মুসলিম সমাজে দিয়ে গিয়েছিল।
হিন্দু ধর্মে ‘ব্রাক্ষ্ম সমাজ' নামেও সেই একই কাজ তারা করে গিয়েছে কৌশলে। যখন দেখলো ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে।
ভারতীয়রা শূচনীয়ভাবে তাদের বিতাড়িত করবে এখান থেকে, তারা তখন দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশোধের জন্য কিছু বিষফোঁড়া দিয়ে গেলো নানান জায়গায়।
প্রধান ধর্ম দুটির মানুষের মাঝে আরও দুটি ধর্মমতকে পৃষ্ঠপোষকতা করে জাগিয়ে তুললো। যেন এরা শান্তিতে না থাকে!
যেমনটি শিক্ষা ব্যবস্থায় ‘সাধারণ' ও ‘মাদরাসা' নামে দুটি মাধ্যম করে গিয়েছে!
ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম ধর্ম মতের বিষফোঁড়া হচ্ছে ‘কাদিয়ানি' সম্প্রদায়। আর হিন্দু ধর্মে ‘ব্রাক্ষ্ম' সমাজ!
মনে রাখবেন, বিষফোঁড়া কখনই শরীরের জন্য কল্যাণ বা আরাম বয়ে আনে না। তার চিকিৎসা দরকার হয়।
লেখক: সাংবাদিক সালমান ফরিদ ভাই