লটারিও একপ্রকার জোয়া। কাজেই লটারিকে সাধারণ জিনিস মনে করা এবং একে জনকল্যাণ মূলক কাজের নিমিত্তে জায়েজ মনে করা
কোনোক্রমেই ঠিক নয়। যারা লটারির ব্যবস্থাপনা করে থাকে তাদেরকে এ সম্বন্ধে শরীয়তের বিধান শুনানো হলে তারা বলে এতে ক্ষতি কি? এতে তো
মানুষের বহু উপকার হয়েছে! তাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, কোনো বস্তুতে সাময়িক কিছু উপকার আছে বলেই তা হালাল হতে পারে না! কেননা তাতে
কোনো অবস্থাতেই প্রকৃত উপকারী বস্তু স্বীকার করে নেওয়া যায় না। অন্যথায় পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ বস্তুতেও কিছু না কিছু উপকার নিহিত থাকা মোটেও
বিচিত্র নয়। প্রাণ সংহারক বিষ, সাপ, বিচ্ছু বা হিংস্র জন্তুর মধ্যেও কিছু না কিছু উপকারিতার দিক অবশ্যই খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু সামগ্রিকতার
বিচারে এগুলোকে ক্ষতিকর মনে করা হয় এবং এসব থেকে দূরে থাকার উপদেশ দেওয়া হয়। অনুরূপভাবে অভ্যন্তরীণ দিক থেকে যেসব বস্তুতে
উপকারের তুলনায়-অপকার বেশি; শরীয়ত সেগুলোকেও হারাম সাব্যস্ত করেছে। চুরি, ডাকাতি, প্রতারণা এমন কী জিনিস আছে যাতে উপকার
কিছুই নেই? উপকার আছে বলেই এগুলোকে কি কেউ জায়েজ মনে করে? অবশ্যই না! লটারির বিষয়টিও ঠিক তদ্রূপ। বাহ্যিক দৃষ্টিতে যদিও এতে
কিছু উপকার আছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে জুয়া ও ধোকা। কাজেই শরীয়তের দৃষ্টিতে তা হারাম। স্মর্তব্য, কোনো মহৎ কাজের জন্য নাজায়িজ
তরিকা অবলম্বন করা কোনভাবেই বৈধ নয়।
বস্তুতঃ জন কল্যাণের ধোয়া তুলে যারা এসব লটারি ব্যবস্থা করে থাকে, মূলত জনসেবার পরিবর্তে
আত্মসেবাই তাদের সামনে থাকে মুখ্য। সুন্দর চাকচিক্য লেভেল লাগিয়ে মানুষের টাকা হাতিয়ে নেওয়াই এবং রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ
হওয়াই তাদের লক্ষ্য। মুসলমান হিসাবে তাদের এসব প্রতারণা থেকে আমাদের সাবধান হওয়া উচিত।