(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
ভালোবাসা ও আন্তরিকতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও অন্যান্যদের যে উপহার ও উপঢৌকন প্রদান করা হয় তাকে হাদিয়া বলে।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:- একে অন্যকে হাদিয়া দিবে। হাদিয়া অন্তরের কলুস দূর করে। এক পরশি ওপর পড়শিকে হাদিয়া দিতে যেন অবহেলা না করে
এবং কেউ যেন সামান্য মনে না করে যদিও তা এক টুকরা বকরির খুরও হয়। (মিশকাত ১/২৬১)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সাহাবীদেরকে হাদিয়া দিতেন এবং সাহাবীগণও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হাদিয়া দিতেন।
কেউ হাদিয়া দিলে তার প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। এতে পারস্পরিক সম্পর্ক মধুর হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:- যাকে দান করা হয়েছে তার সামর্থ থাকলে সে যেন এর প্রতিদান দেয়।
আর যার সমর্থ্য নাই সে যেন প্রশংসা করে। কেননা যে প্রশংসা করলো সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো। আর যে তা গোপন করলো সে তার প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল। (মিশকাত ১/২৬১)
হাদিয়ার প্রতিদানে সমপরিমাণের জিনিস হতে হবে এমন কোনো কথা নেই বরং নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী প্রতিদান দিতে চেষ্টা করা উচিত। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মধ্যে হাদিয়ার আদান প্রদান করবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সহধর্মিনীদেরকে হাদিয়া দিতেন। প্রকৃতপক্ষে হাদিয়া দাম্পত্য জীবনে আন্তরিকতা বৃদ্ধির এক মূল্যবান উপাদান। এতে স্বামী স্ত্রী উভয়ের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হয় এবং মনের গ্লানি দূর হয়ে যায়।
কেউ হাদিয়া দিলে তা প্রত্যাখ্যান করা ঠিক নয়। কেননা তাতে হাদিয়াদাতার মনে কষ্ট হয় এবং পারস্পরিক সম্পর্ক তিক্ত হয়। হযরত আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:-
যাকে সুগন্ধী দান করা হয় সে যেন তা ফিরিয়ে না দেয়। কেননা এটি হালকা জিনিস অথচ সুগন্ধযুক্ত।( মিশকাত ১/২৬০) হাদিয়া সামান্য হলেও তা ফিরিয়ে না দিয়ে সন্তুষ্ট চিত্তে তা গ্রহণ করা উচিত।
অনুরূপভাবে হাদিয়া দেওয়ার পর তা ফিরিয়ে নেওয়াও অশুভণীয়। হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:-
যে দান করে তা প্রত্যাহার করে নেয় তার দৃষ্টান্ত এমন কুকুরের মত যে বমি করে তা গলদকরণ করে নেয়।( মিশকাত ২৬০)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবন থেকে হাদিয়ার ব্যাপারে যে দিক নির্দেশনা পাওয়া যায় তা হলো:-
(এক) হাদিয়া নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী দেওয়া উচিত।
(দুই) হাদিয়া যাই হোক না কেন তা কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করা উচিত।
(তিন) হাদিয়ার পরিবর্তে হাদিয়া দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত।
(চার) হাদিয়ার ক্ষেত্রে রাসুলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পছন্দনীয় বস্তুর মধ্যে খুশবু ছিল অন্যতম।
(পাঁচ) হাদিয়া দেওয়ার পর তা ফিরিয়ে নেওয়া অশুভণীয়।