(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
যে সমস্ত জায়গায় অন্যের দোষ আলোচনা করার অনুমতি শরীয়ত দান করেছে তন্মধ্য থেকে অন্যতম একটি জায়গা হল জালিমের জুলুমের আলোচনা। এটি গীবত নয়।
উদাহরণস্বরূপ, এক ব্যক্তি তোমার উপর অত্যাচার করলো, এখন যদি তুমি ওই অত্যাচারের কথা অন্য কোনো ব্যক্তিকে বলো যে, আমার উপরে অত্যাচার করা হয়েছে, আমার সাথে অন্যায় ব্যবহার করা হয়েছে তাহলে তা গীবত বলে গণ্য হবে না।
এতে কোনো প্রকার গুনাহও হবে না। যার নিকট তুমি এ আলোচনা করেছ চাই সে এর প্রতিকার করতে সক্ষম হোক বা না হোক। যেমন কোনো ব্যক্তি তোমার কোনো জিনিস চুরি করল।
এখন যদি তুমি থানায় গিয়ে তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়ের কর, তাহলে যদিও এটা তার অনুপস্থিতিতে তার দোষ চর্চা কিন্তু এটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা সে তোমার ক্ষতি করেছে, তোমার উপর অত্যাচার করেছে।
তারপর তুমি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছ, থানা কর্তৃপক্ষ তোমার অত্যাচারের বিচার করবেন। কাজেই তা গীবতের অন্তর্ভুক্ত নয়। তদ্রুপ এ চুরির আলোচনা যদি এমন লোকের নিকটও করা হয়, যে এর প্রতিকার করতে সক্ষম নয়।
যেমন:- চুরির খবর পেয়ে কিছু লোক তোমার বাড়িতে এসে একত্রিত হলে তুমি তাদের নিকট বলে ফেললে যে, আজ রাতে অমুক ব্যক্তি আমার বাড়িতে চুরি করেছে। তাহলে এই আলোচনায় কোনো গুনাহ নেই।
লক্ষ্য করে দেখুন, শরীয়ত আমাদের মেজাজের প্রতি কতটুকু সূক্ষ্ম দৃষ্টি রেখেছে। কারণ মানুষের স্বভাব বা প্রকৃতি এমন যে, যখন সে কোনো কষ্ট পায় তখন কমপক্ষে এতোটুকু চায় যে, দুঃখ বা কষ্টের আলোচনা অন্যের নিকট করে মনকে হালকা করবে।
আর এ সময়ে এই খেয়াল থাকে না যে, এই ব্যক্তি তার কষ্টের প্রতিকার করতে পারবে কিনা। এক্ষেত্রে শরীয়তও অনুমতি দিয়েছে যে, এটা অন্যের নিকট ব্যক্ত করতে পারবে।
যেমন, কুরআনে পাকে এরশাদ হয়েছে:- আল্লাহ পাক কোনো মন্দ বিষয়কে প্রকাশ করা পছন্দ করেন না অবশ্যই যার উপর জুলুম করা হয়েছে তার কথা আলাদা অর্থাৎ সে তার অত্যাচারিত হওয়ার কাহিনী অন্যের নিকট আলোচনা করতে পারবে। এটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত নয় বরং জায়েজ।
মোটকথা, উপরোক্ত বিষয়গুলোকে আল্লাহ পাক গীবতের আওতা থেকে বাইরে রেখেছেন অর্থাৎ এর দ্বারা গীবতের গুনাহ হবে না। কিন্তু এগুলো ব্যতীত আমরা আমাদের মজলিসগুলোতে সময় কাটানোর বাহানায়, গল্পচ্ছলে অন্যের যে সমস্ত দোষ চর্চা শুরু করে দেই, তা সবই গীবতের অন্তর্ভুক্ত।
কাজেই আল্লাহর ওয়াস্তে নিজের প্রতি দয়া করে এ মহামারী প্রতিরোধের ব্যবস্থা করুন। নিজের প্রতি সহানোভুতিশীল হোন। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে এ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দিন। আমিন