(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
মৃতের ঘরে সমবেত হয়ে খানা পাকানো বিদআত
বর্তমানে প্রায় মুসলিম পরিবারে এ প্রথাটি অনুপ্রবেশ করেছে, তা হল মৃত ব্যক্তির ঘরে খানা পাকানো। যাকে বলে মরার উপর খাড়ার ঘা।
কারণ আহলে মাইয়্যেতগণ একদিক দিয়ে আপন লোকটিকে চিরতরে হারানোর বুকফাটা যন্ত্রণায় ভুগছে অন্য দিক দিয়ে
মানুষকে খাওয়ানোর জন্য এক মহা ব্যস্ততা।অথচ হাদিস ও ফিকহশাস্ত্রের কিতাবগুলো এ ব্যাপারে সাক্ষী দেয় যে,
যখন কারো মৃত্যু হয়ে যায়, তখন তার ঘরের অন্যান্য সদস্যরা যেহেতু দুঃখে জর্জরিত
তাই মহল্লাবাসী ও আত্মীয়-স্বজনরা মাইয়্যেতের পরিবারের খানা পাকাবে, আর যারা মৃতের জানাজায় হাজির হতে পারেনি তারা সমবেদনা প্রকাশ করবে।
কিন্তু মাইয়্যেতের ঘরে সমবেত হওয়া এবং পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য খানা পাকানো বহু বড় গুনাহ। অনেক সময় দেখা যায় যে,
নিজের নিকট টাকা-পয়সা নেই তবুও রেওয়াজ মত খাওয়াতে হবে তাই লোকজন হতে ঋণ করতে হয়, এমনকি
অনেক সময় তো সুদে ঋণ আনতেও উদ্যত হয়,এতে করে মৃত ব্যক্তির যেসব উত্তরাধিকারী আছে তাদের মাল বিনষ্ট হয়ে যায়,
ফলে তাদের বাকি জীবনে নেমে আসে এক অশান্তির কালো মেঘ।সুতরাং শরীয়ত এ কুসংস্কার কিছুতেই সমর্থন করে না।
মৃতের ঘরে সমবেত হয়ে খানা পাকানোর নিষেধাজ্ঞা
তাই মৃতের ঘরে জড়ো হওয়া এবং তাদের দ্বারা খানা তৈরি করা বিদআত। এ ব্যাপারে হযরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ রাঃ বলেন,
كنا نرى الاجتماع الى اهل الميت وصنعة الطعام من النياحة
অর্থঃ আমরা মাইয়্যেতের ঘরে সমবেত হওয়া ও খানা পাকানোকে নিয়াহা তথা মৃতের জন্য ভাড়াটে লোক দ্বারা ক্রন্দন করানো মনে করি। ( যা শরীয়তে নিষেধ)
উল্লেখিত হাদিস দ্বারা আমরা জানতে পারলাম যে মৃতের জন্য উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা জাহেলী যুগের প্রথা এবং নুহা করা সকলের ঐক্যমতে হারাম।
এমনিভাবে মৃতের ঘরের খানা ও।এর দ্বারা আমরা এ কথা বুঝতে পারলাম যে মৃতের ঘরে খানাপাকানো সমবেত হওয়া সাহাবায়ে কেরামের কাছে
লোহার মতো একটা অভিশাপ গুনাহের কাজ।আল্লামা ইবনে আমির আলহাজ্ব আল মালিকী রহঃ লিখেন
اما اصلاح اهل الميت طعاما وجمع الناس فلم ينقل فيه شيء وهو بدعة غير مستحب
অর্থঃ মৃতের পরিবারে খানা পাকানো, লোকদের সমবেত হওয়া এসব কিছু হাদিসে নেই,এগুলো মুস্তাহাব ও নয় বরং বিদআত।আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী লিখেন,
এক্ষেত্রে আমাদের (হানাফি) মাযহাব এবং অন্যান্য মাযহাব যেমন শাফেয়ী ও হাম্বলী মাযহাব একই রকম। মুদ্দাকথা মৃতের ঘরে খানা পাকানো বিদআত।